Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পুরপ্রধান বাছতে হিমশিম, উঠে আসছে নানা নাম

‘‘ভোটে তো জিতে গেলাম, এ বার তো চিন্তা পুরপ্রধান কে হবেন’’, এটাই এখন তৃণমূলের আলোচ্য বিষয়। ঘাটাল মহকুমার চারটি পুরসভাতে প্রবল জয়ের পর আনাচে কানাচে জমছে চিন্তার মেঘ। প্রথম থেকেই গোষ্ঠী কোন্দলে ধ্বস্ত তৃণমূলে এ বার কি তবে প্রধান পদের দাবি নিয়ে শুরু হবে লড়াই?

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৫ ০২:০৩
Share: Save:

‘‘ভোটে তো জিতে গেলাম, এ বার তো চিন্তা পুরপ্রধান কে হবেন’’, এটাই এখন তৃণমূলের আলোচ্য বিষয়। ঘাটাল মহকুমার চারটি পুরসভাতে প্রবল জয়ের পর আনাচে কানাচে জমছে চিন্তার মেঘ। প্রথম থেকেই গোষ্ঠী কোন্দলে ধ্বস্ত তৃণমূলে এ বার কি তবে প্রধান পদের দাবি নিয়ে শুরু হবে লড়াই?

পরিস্থিতি সামাল দিতে যে মুখ্যমন্ত্রীকে মাঠে নামতে হচ্ছে দলের তরফে তেমনই ইঙ্গিত মিলছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলায় আসতে পারেন তিনি। সম্ভবত সে সময়ে তিনি নিজেই দলীয় বৈঠকেই পুরপ্রধানদের নাম ঘোষণা করবেন।

মহকুমার মোট পাঁচটি পুরসভার চারটিতেই জিতেছে তৃণমূল। শুধু রামজীবনপুরে বিজেপি-র সমর্থন নিয়ে বোর্ড দখল করেছে তৃণমূল বিরোধী মহাজোট। কিন্তু সেখান থেকেও নির্দল কাউন্সিলর ভাঙিয়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করতে মরিয়া তৃণমূল। তাই এই সব ক’টি পুরসভায় পুরপ্রধান কে হবেন তা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা। বিশেষত ঘাটাল ও চন্দ্রকোনা নিয়ে স্পষ্টতই উদ্বেগে রয়েছে দল।

ঘাটালে জয়ী হয়েছেন বিদায়ী প্রধান বিভাস ঘোষ। গত ১৯ মাস তিনিই সামলেছেন পুরসভায় দায়িত্ব। কিন্তু ভোটের আগে দলের মুখ হয়ে উঠেছিলেন ঘাটাল কলেজের টিচার ইনচার্জ লক্ষ্মীকান্ত রায়। ১৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে লড়াই করে তিনি যে শুধুমাত্র জিতেছেন তাই নয়, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বামফ্রন্টের হার হয়েছে এই ওয়ার্ডে। সুতরাং বিভাস ঘোষ না লক্ষ্মীকান্ত রায়, কে হবেন প্রধান তা নিয়ে জল্পনা চলছেই। ব্লক স্তরের এক নেতার কথায়, “বিভাসবাবুকে পুরপ্রধান না করা হলে প্রশ্ন উঠবে দীর্ঘ ১৯ মাস বিভাস বাবু কি তবে ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করেননি! আবার দলের অনেকেই চাইছেন লক্ষীকান্তবাবুকে। ফলে দলের পরিস্থিতি বেশ সঙ্কটজনক।’’

চন্দ্রকোনাতে এ বার প্রার্থী হননি বিদায়ী পুরপ্রধান রাম কামিল্যা। ফলে তাঁর পরবর্তী স্তরের নেতারা এ বার অনেকেই পুরপ্রধান পদের দাবিদার। সমস্যায় নেতৃত্ব। চন্দ্রকোনায় ১১টি আসন দখল করেছে তৃণমূল। তার মধ্যে ছ’জনই মহিলা কাউন্সিলর। দলের একটি অংশ চাইছে পুরপ্রধান হোন তাঁদেরই মধ্যে কোনও একজন। আবার বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান রণজিৎ ভাণ্ডারি রয়েছেন জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে। ফলে তাঁর দাবিও নেহাৎ কম নয়। অন্যদিকে দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা অশোক পালধিও প্রথম থেকেই প্রধান পদের দাবিদার।

ক্ষীরপাইয়ের সমস্যা আবার অন্য। সেখানে বছর খানেক আগে দলে যোগ দিয়েছেন দুর্গাশঙ্কর পান এবং এ বারের নির্বাচনে প্রায় তিনি একাই দায়িত্ব নিয়ে জিতিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলকে। দীর্ঘ ২৫ বছর সিপিএমের হয়ে পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন দুর্গাশঙ্করবাবু। এ বার দল বদলেও তিনি জয়ী হয়েছেন, বাম গড় ছিনিয়ে নিয়েছেন তৃণমূলের হয়ে। ফলে তৃণমূলে তাঁর গুরুত্ব রয়েছে। দলের অন্দরে তাই বেশিরভাগ নেতাই বলছেন, ‘‘যে যাই বলুক, দুর্গাশঙ্কর পান ছাড়া অন্য কেউই প্রধান পদ পাচ্ছেন না।’’ অন্যদিকে খড়ারেও মোটামুটি নিশ্চিত পুরপ্রধান কে হবেন। ১০ টি আসনের খড়ার পুরসভার ন’টি আসন দখল করে বামদুর্গে ফাটল ধরিয়েছেন বিদায়ী পুরপ্রধান উত্তম মুখোপাধ্যায়। বীরসিংহ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম মুখোপাধ্যায়ই তাই ফের চেয়ারম্যান হবেন তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

যদিও দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “আমি পুরপ্রধানের পদ নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করব না। সময় হলে
জানতে পারবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE