Advertisement
E-Paper

মশারি নেই, জ্বরের রোগী পড়ে মেঝেতে

মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে সচেতনতার কথা বলছে স্বাস্থ্যদফতর। মশারি টাঙাতে বলছে। অথচ সরকারি হাসপাতালেই জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের মশারি ছাড়া মেঝেতে শুয়ে-বসে থাকতে হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৮ ০০:৫২
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে সচেতনতার কথা বলছে স্বাস্থ্যদফতর। মশারি টাঙাতে বলছে। অথচ সরকারি হাসপাতালেই জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের মশারি ছাড়া মেঝেতে শুয়ে-বসে থাকতে হচ্ছে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের যে ব্লক এ বার ডেঙ্গিতে সব থেকে কাবু, সেই পিংলার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরই এমন হাল। প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে জ্বর, মাথাব্যথার মতো উপসর্গ নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসছেন রোগীরা। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন তিল ধারণের জায়গা নেই। ৩০ শয্যার হাসপাতালে এখন প্রায় দ্বিগুণ রোগী ভর্তি রয়েছেন। ফলে, জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গেই থাকতে হচ্ছে অন্য রোগীদের। আর প্রায় ৩০জন রোগীর ঠাঁই হয়েছে মেঝেতেই। সেখানে মশারির বালাই নেই। পুরুষ ও মহিলা— দুই ওয়ার্ডেই এক ছবি।

পিংলা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেঝেতে থাকা জ্বরে আক্রান্ত জলচক পশ্চিমবাড়ের সুদীপ মাইতি বলেন, “৪-৫ দিন ধরে জ্বরে ভুগছি। রক্তের রিপোর্ট এখনও আসেনি। ডেঙ্গি হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। মশারি হাসপাতাল থেকে দেয়নি। তাই বাড়ি থেকে এনেছি। কিন্তু শুধু রাতে মশারি ব্যবহার করছি। দিনে তো কেউ মশারি ব্যবহার করছে না।” মশারির অভাব থাকায় হাসপাতালের বিভিন্ন জানালায় জাল লাগানো হয়েছে। কিন্তু সারাদিন দরজা খোলা থাকায় ওয়ার্ডে মশার উপদ্রব রয়েছে। তা ছাড়া দিনের বেলাতেও ডেঙ্গির মশা কামড় বসায়। ফলে, আতঙ্কে রয়েছেন রোগীরা।

জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে একই ওয়ার্ডে মশারি ছাড়া কাটাতে হচ্ছে অন্যদেরও। ক্ষোভ ছড়াচ্ছে প্রসূতি বিভাগে। পিংলার বেলুন গ্রামের বাসিন্দা ছায়া ঘোষ প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে এ দিনই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁর স্বামী শান্ত ঘোষ বলেন, “অনেকের ডেঙ্গি হয়েছে শুনছি। কিন্তু কেউ তো মশারি ব্যবহার করছে না। আমার স্ত্রীকেও হাসপাতাল থেকে মশারি দেওয়া হয়নি। ভাবছি বাড়ি থেকেই মশারি নিয়ে আসব।”

পিংলা ব্লকে শুধু ডেঙ্গি নয়, দেখা দিচ্ছে ম্যালেরিয়াও। প্রতিটি এলাকায় জমা জল, আবর্জনায় জন্মাচ্ছে মশার লার্ভা। ইতিমধ্যেই ক্ষীরাই, আগড়আড়া, লক্ষ্মীবাড়ি এলাকার মোট তিনজনের জ্বরে মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিজনেরা জানিয়েছেন, গ্রামে মশার উপদ্রব রয়েছে। চলছে সচেতনতা প্রচার। বিভিন্ন এলাকায় ম্যাজিকের মাধ্যমে মশারি ব্যবহারের বার্তা দেওয়া হচ্ছে। অনেকেই বাড়িতে সেই নিয়ম মানলেও হাসপাতালে জ্বরের রোগী মশারি ছাড়া পড়ে থাকায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

পিংলার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক উৎপল রায়ের অবশ্য দাবি, “আমাদের পক্ষ থেকে তো মশারি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দিনের বেলায় তো সকলে দড়ি দিয়ে মশারি টাঙালে চলাফেলা করা যাবে না। তাই দিনে মশারি ব্যবহার হচ্ছে না। কিন্তু রাতে হচ্ছে।” ঘটনার কথা স্বীকার করছেন জেলার মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার তথা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। তিনি বলেন, “আমি পিংলা হাসপাতালে রবিবারই পরিদর্শন করেছি। এটা ঠিক কিছু রোগী মশারি ছাড়া রয়েছে। এ ভাবে যে জ্বরে আক্রান্ত কোনও রোগীকে রাখা যাবে না সেটা জানিয়েছি।”

Fever Medical Centre Mosquito Net Patients
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy