এলাকায় চলছে পুলিশি টহল। —নিজস্ব চিত্র।
সালিশি বসিয়ে ডাইনি অপবাদ দিয়ে এক বৃদ্ধাকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল। নিহতের নাম কালন্দি মুর্মু (৭২)। রবিবার সন্ধ্যায় লালগড়ের রাসমণ্ডল গ্রামের ঘটনা। ঘটনায় আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাসমণ্ডল গ্রামে টালির ছাউনি দেওয়া একটি ছোট ঘরে থাকতেন কালন্দিদেবী। বিধবা ওই মহিলার একটি মেয়ে। মেয়ে ও জামাই তাঁর কাছেই থাকতেন। মৃতার বাড়ির গা ঘেঁষা অন্য একটি মাটির বাড়িতে থাকতেন মৃতার এক সম্পর্কিত নাতি ও নাতবউ। শনিবার বিকেলে বাড়িতেই মৃতার নাতবউ বাসিমনি হাঁসদা অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রচণ্ড পেটের ব্যাথা হতে থাকে তাঁর। প্রথমে এক হাতুড়েকে নিয়ে আসা হয়। রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রবিবার ভোরে হাসপাতালে বাসিমনিদেবীর মৃত্যু হয়। এ দিন সকালে তাঁর মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। খবর পেয়ে বাসিমনিদেবীর বাপের বাড়ির লোকেরাও আসেন। অভিযোগ, তাঁদের অনেকে মৃতদেহ দেখে বলতে থাকেন, বাসিমনি মরেননি। গ্রামের মোড়ল সত্য মুর্মু বিধান দেন, কালন্দিদেবীর কুনজরেই বাসিমনির দেহে ডাইনি ভর করেছে। তাই ডাইনি ছাড়ানোর জন্য কালন্দিদেবীকে ঘর থেকে টেনে বের করা হয় বলে অভিযোগ। কালন্দিদেবীকে নির্দেশ দেওয়া হয়, তাঁকেই বাসিমনির দেহ থেকে ডাইনি ছাড়াতে হবে। পরে এ নিয়ে সালিশি সভাও বসে। অভিযোগ, সভায় উপস্থিত লোকেদের গণপিটুনিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কালন্দিদেবীর। মৃতার মেয়ে বাধা দিতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, কালন্দিদেবীর মৃতদেহ বাসিমনিদেবীর ঘরে লুকিয়ে রাখা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। বাসিমনির ননদ-সহ আট জনকে গ্রেফতার করা হয়। সত্য পলাতক বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। সোমবার সকালে পুলিশের উপস্থিতিতে কংসাবতীর চরে বাসিমনিদেবীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। কালন্দিদেবীর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy