স্ত্রী নিখোঁজ বলে সন্ধ্যায় থানায় অভিযোগ করেছিলেন এক ব্যক্তি। ওই রাতেই বাড়ির অদূরে খড়ের গাদায় উদ্ধার হল নিখোঁজ মহিলার গলাকাটা দেহ। ঘটনায় আটক হলেন তাঁর স্বামী, শ্বশুর এবং শাশুড়ি। খেজুরি থানার কামারদা গ্রামের ওই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, বছর দেড়েক আগে ভুপতিনগরের জুখিয়া গ্রামের মৌমিতা মাইতির (২৩) সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কামারদার বাসিন্দা অপরেশ দাসের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অপরেশ খেজুরি থানায় এসে পুলিশকে জানায়, তাঁর স্ত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। খেজুরি থানার পুলিশ মৌমিতার বাবার বাড়িতে খবর দেয়। মৌমিতার বাবা রাজেশ্বর মাইতি খেজুরি থানায় আসেন। সেখান থেকে কয়েক জন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে নিয়ে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে যান। তাঁরা সেখানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
গভীর রাতে শ্বশুর বাড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরে একটি খড় গাদার পাশে মৌমিতা গলাকাটা দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে খেজুরি থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। তারা জানিয়েছে, কোনও ধারাল অস্ত্র দিয়ে মৌমিতার গলা কাটা হয়েছে। তবে সেই অস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি। পরে রাজেশ্বরবাবু খেজুরি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
রাজেশ্বর পুলিশকে জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকে পণের জন্য মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে চাপ দেওয়া হত। মাসখানেক আগেই তিনি মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে এসে মোটরসাইকেল এবং দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। রাজেশ্বর বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকেলে মেয়ে বাড়িতে ফোন করেছিল। তখন তার কথায় কোনও উদ্বেগ প্রকাশ পায়নি। কয়েক মধ্যার মধ্যে কী এমন হল যে, ও মৃত্যু হল?’’ ঘটনায় মৌমিতার স্বামী অপরেশ, শ্বশুর, শাশুড়িকে আটক করে জেরা করছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, অপরেশের বাবা তরুণ দাসের দুই স্ত্রী। প্রথম পক্ষের স্ত্রীয়ের ছেলে অপরেশ এবং তাঁর দাদা কুমারেশ। বছর দশেক আগে তরুণবাবুর প্রথম পক্ষের স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তারপর তরুণ দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী মাধুরী দাসের কোনও সন্তান হয়নি। প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, সৎ শাশুড়িমা মাধুরীর সঙ্গে মৌমিতা বনিবনা হত না। সাংসারিক কারণে প্রায়ই তাঁদের ঝগড়া হতো বলে অভিযোগ।
তবে ঠিক কী কারণে ‘খুন’, সে নিয়ে ধন্দে পুলিশ। জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। একটি অস্বাভাবিক মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy