কারখানা চত্বরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
পুজোর মুখে ফের ‘বন্ধ’ হতে বসেছে হলদিয়ার আরও একটি কারখানা। শ্রমিকদের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে তাঁদের বেতন জোটেনি। পাশাপাশি, কারখানায় উৎপাদনও বন্ধ। বকেয়া বেতন মিটিয়ে ফের উৎপাদন শুরুর দাবিতে এ দিন আন্দোলন করেন কারখানার অস্থায়ী শ্রমিকেরা।
শুক্রবার সকালে হলদিয়ার দেভোগে ওই ভোজ্য তেল কারখানায় বিক্ষোভ দেখান দুশোরও বেশি শ্রমিক। এ দিন সকালে কারখানা কর্তৃপক্ষকে গেটের বাইরে রেখে লাগাতার বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এদিন সকাল ১০টা নাগাদ কারখানায় এসে দরজার সামনেই শ্রমিকদের বিক্ষোভে আটকে পড়েন কর্তৃপক্ষ। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে তাঁদের বিক্ষোভে আটকে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ভবানীপুর থানার পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতিতে শ্রমিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। সেখানে আগামী সোমবার পর্যন্ত সময় চেয়ে নেন কর্তৃপক্ষ। তাতে বিক্ষোভকারী শ্রমিকেরা রাজি হওয়ার পর ঘেরাও মুক্ত হন কারখানার আধিকারিকেরা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই ভোজ্য তেল কারখানায় ২০০ জন অস্থায়ী শ্রমিক কাজ করেন। ঠিকাদারের মাধ্যমে তাঁরা বেতন পেতেন। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে সেই বেতন তাঁরা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। কারখানার শ্রমিক নেতা চঞ্চল পালের অভিযোগ, ‘‘গত জুলাই থেকে বেতন পাইনি। একাধিকবার কর্তৃপক্ষ এবং শ্রম দফতরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তারা কোনও রফা করতে চায়নি।’’ শ্রমিকদের বক্তব্য, গত কয়েক মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে গিয়েছে। এ দিকে, জুলাই মাস থেকে কারখানার কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
শ্রমিক সূত্রের খবর, ওই কারখানায় বেতন কাঠামো বৃদ্ধি-সহ একাধিক দাবিতে গত কয়েক মাস ধরে অচলাবস্থা চলছে। সম্প্রতি একজন ইঞ্জিনিয়ার কাজ করার সময় সিলিন্ডার ফেটে মারা গিয়েছিলেন। তারপর কারখানায় কাজের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলে শ্রমিকরা। কিন্তু সেই দাবিও মানা হয়নি বলে অভিযোগ।
বারবার এমন অশান্তি হওয়ায় ওই কারখানার ১৭ জন শ্রমিককে প্রতিনিধি বানিয়ে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছিল পুলিশ। বেতন চুক্তি নিয়ে রাজ্যের শ্রম দফতরও হস্তক্ষেপ করেছিল। তা সত্ত্বেও সমস্যা সমাধান হয়নি বলে দাবি। গত জুলাই মাস থেকে কারখানার পুরোপুরি উৎপাদন হয়ে গিয়েছে বলে দাবি শ্রমিকদের।
শ্রমিক অসন্তোষ সম্পর্কে জানতে চেয়ে ওই কারখানার জেনারেল ম্যানেজার-সহ একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কেউ ফোন ধরেননি। তবে উৎপাদন বন্ধ থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে শাসক দল। জেলা আইএনটিটিইউসি’র কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকার বলেন, ‘‘কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মানতে রাজি না হওয়ায়, উৎপাদন বন্ধ হয়েছে। তবে এদিন কী হয়েছে তা বলতে পারব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy