ট্রেকারের ধাক্কায় এক যুবকের মৃত্যু ঘিরে রণক্ষেত্রের আকার নিল ঘাটালের কোনারপুর। বুধবার দুপুরে এই দুর্ঘটনায় মৃতের নাম শেখ আমানুল্লা হক (২৭)। তিনি স্থানীয় শোলাগেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। দুর্ঘটনার পর ট্রেকারে আগুন ধরিয়ে দেন স্থানীয়রা। ভাঙচুর চালানো হয় আট-দশটি দোকানে। পুলিশকে ইট ছোড়া হয় এবং স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। পরে ঘাটাল থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার কোনারপুর বাজার থেকে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে ফল কিনে সাইকেল চেপে বাড়ি ফিরছিলেন শেখ আমানুল্লা হক। সেই সময় ঘাটালগামী একটি ট্রেকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দ্রুত গতিতে রাস্তা দিয়ে আসছিল। ট্রেকার চালক চিৎকার করে সকলকে সরে যেতে বলেন। আমানুল্লার স্ত্রী পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সাইকেল থেকে নেমে পড়েন। আর সেই সময়ই ট্রেকার ধাক্কা মারে আমানুল্লার সাইকেলে। ঘটনাস্থলেই মারা যান আমানুল্লা।
এই খবর ছড়াতেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে কোনারপুর গ্রাম। শোলাগেড়িয়া ও তার সংলগ্ন গ্রাম থেকে বাসিন্দারা ভিড় জমাতে থাকেন ঘটনাস্থলে। শুরু হয় ট্রেকার ও দোকান ভাঙচুর। ট্রেকারের তেলের ট্রাঙ্ক ফুটো করে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। লোহার রড, লাঠি নিয়ে ভাঙচুর করা হয় আট-দশটি দোকানে।
খবর পেয়ে ঘাটাল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতেই তাদের ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পিছু হঠতে বাধ্য হয় পুলিশ কর্মীরা। এমনকী স্থানীয় তৃণমূল নেতারা ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আনন্দ দোলই বলেন, “ঘটনার পর আমরা পুলিশকে খবর দিই। কিছুক্ষণ পর প্রচুর মানুষ জড়ো হয়ে আমাদের কর্মীদের মারধর করে।”
ঘটনাস্থলের পাশে কোনারপুর শীতলানন্দ হাইস্কুল। এমন তাণ্ডব দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে স্কুল পড়ুয়া-শিক্ষকরা। এলাকার সমস্ত দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থল সংলগ্ন একাধিক দোকানের সিসি ক্যামেরা থেকে মূল অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে।