হাসপাতালে সোনা। নিজস্ব চিত্র
অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই লরি চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু তা মানে কে! রাতের রাস্তায় নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখানোর ফল যে কী হতে পারে, তা আরও একবার দেখল ঝাড়গ্রাম। শনিবার রাতে বেলিয়াবেড়া থানার তপসিয়া এলাকায় এক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন মোটর বাইক আরোহী এক যুবক। লরি থেকে বেরিয়ে আসা বাঁশ ঢুকে গিয়েছে সোনা মল্লিক নামে ওই যুবকের পেটের ডানদিকে। তিনি আপাতত ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ গোপীবল্লভপুরের দিক থেকে মোটর বাইকে করে এক বন্ধুকে নিয়ে তপসিয়া যাচ্ছিলেন সোনা মল্লিক। হাসপাতাল চকের কাছে ফেঁকোগামী একটি লরিকে হঠাৎই হাত দেখিয়ে থামান টহলদার কয়েকজন পুলিশ কর্মী। লরির পিছনেই ছিলেন সোনা। আচমকা লরিটি থেমে যাওয়ায় তিনিও ব্রেক কষে বাইকটি ঘোরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। লরির বেরিয়ে থাকা বাঁশে আঘাত লাগে তাঁর। পেটের ডানদিকে বাঁশ ঢুকে গিয়ে গভীর ক্ষত হয়। শুরু হয় রক্তক্ষরণ। ডান হাতের একটি আঙুলও ভেঙে গিয়েছে বলে খবর। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরাই সোনাকে প্রথমে তপসিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে রাতে তাঁকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
ঘটনার পরই রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, পুলিশ তোলা তুলতেই আচমকা থামিয়েছিল লরিটিকে। তাই এমন দুর্ঘটনা। ঘণ্টা দু’য়েকের অবরোধে গোপীবল্লভপুর-ফেঁকো রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। পুলিশ অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়।
জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত অবশ্য এ দিন বলেছেন, ‘‘অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই লরিটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল। তাই কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা সেটিকে থামিয়েছিলেন। পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে কেউ কোনও অভিযোগ এখনও জানাননি। তা ছাড়া ওই মোটর বাইকের গতিও যথেষ্ট বেশি ছিল। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ সোনা মল্লিকের মোটর বাইকের গতিও যে বেশি ছিল, সে কথা মানছেন পুলিশের একাংশ। তাঁদের মতে, মোটর বাইকে গতি কম থাকলে নির্দিষ্ট দূরত্বেই ব্রেক কষা সম্ভব হত।
ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সোনা রবিবার বলেন, “লরিটির পিছন পিছনই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ সেটি দাঁড়িয়ে পড়ে। বাইকের হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে দিয়েছিলাম বলে প্রাণে বেঁচে গিয়েছি।” হাসপাতাল সূত্রে খবর, আপাতত সোনার অবস্থা স্থিতিশীল।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরই ওই লরিটি পালিয়ে গিয়েছে। চালক ও মালিকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy