আদালতে সুশান্ত ঘোষ।—নিজস্ব চিত্র।
অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পেতেই সিপিএমের কর্মী- সমর্থকেরা বিজেপিতে নাম লেখাচ্ছেন বলে দাবি করলেন গড়বেতার সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। বুধবার মেদিনীপুর আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমাদের কিছু সদস্য যাচ্ছে। নিরাপত্তার প্রশ্নেই যাচ্ছে। যদি পুলিশ অত্যাচার করে, সমাজবিরোধীরা অত্যাচার করে। যে অত্যাচারিত হচ্ছে পুলিশ তাঁকেই গ্রেফতার করে লক-আপে নিয়ে চলে যাচ্ছে। যে অত্যাচার করছে তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। যে অত্যাচারিত হচ্ছে, তাঁকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে।” তাঁর কথায়, “সাময়িক ভাবে মানুষ তো স্বস্তি চায়। বাঁচতে চায়।”
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কী বিজেপি রাজ্যে প্রভাব ফেলতে পারে? সুশান্তবাবুর জবাব, “ওরা দিল্লিতে সরকারে ক্ষমতায় আছে। ওরা তো চেষ্টা করবেই। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ-ঘৃণা বাড়ছে। ওরা সেটা ধরার চেষ্টা করবে। আমরাও চেষ্টা করব। তবে মানুষই ঠিক করবে, কাকে ধরা দেবে আর কাকে দেবে না। তবে যতই প্রচারের ফানুস ওড়ানো হোক, এখানে ততটা জায়গা ওরা পাবে না।” এ দিন মেদিনীপুর আদালতে দাসেরবাঁধ কঙ্কাল মামলার শুনানি ছিল। মামলাটি চলছে মেদিনীপুরের চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কুকথা প্রসঙ্গে সুশান্তবাবু বলেন, “এই ধরনের কথা রাজনীতি সম্পর্কে মানুষকে খারাপ দৃষ্টিভঙ্গির দিকে নিয়ে যায়। মানুষ এর বিচার করবে।”
সম্প্রতি মেদিনীপুরে এসে এখানকার মানুষকে আত্মসম্মান, আত্মমর্যাদা বিসর্জন না দেওয়ার পরামর্শ দেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। এ প্রসঙ্গে সুশান্তবাবুর প্রতিক্রিয়া, “এর ব্যাখ্যা ওই (সাংসদ) দিতে পারবে। পায়ের তলার মাটি আলগা হলে এই ধরনের আত্মবিলাপ শোনা যায়! এই সব কথা আত্মবিলাপেরই একটা অংশ।” সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “সিবিআইয়ের মাথা পর্যন্ত পৌঁছনো উচিত। পিকাসোর ছবি, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি, মকবুল ফিদা হুসেনের ছবি ১ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে রেকর্ড নেই। আর এমন দামী শিল্পী যে ছবি ১ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়ে গেল। হিসেব অনুযায়ী, তাহলে তো মাথা পর্যন্ত পৌঁছনোরই কথা।”
দাসেরবাঁধ কঙ্কাল মামলার এখনও চার্জ গঠন হয়নি। গত দু’বছরে নানা কারণে একাধিকবার মামলার শুনানির দিনও পিছিয়ে গিয়েছে। এ নিয়েও বিভিন্ন মহলে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ দিন সাড়ে দশটা নাগাদ মামলাটি শুরু হয়। তখন সুশান্ত ঘোষের হাজিরা তাঁর আইনজীবী মারফৎ আদালতে জমা পড়ে যায়। অথচ, তখনও সুশান্তবাবু স্বশরীরে আদালতে উপস্থিত হননি। তিনি কিছু পরে পৌঁছন। এ নিয়ে নিজের অসন্তোষ গোপন করেননি বিচারক শ্যামলকুমার বিশ্বাস। বিচারক জানিয়ে দেন, আদালতে উপস্থিত না থাকাকালীনই হাজিরা জমা পড়ে কী করে? এমনটা যেন আর না হয়। তরুণ রায়-সহ অভিযুক্ত তিনজন এ দিন আদালতে গরহাজির ছিলেন। অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান, শরীর খারাপের জন্যই তাঁরা আসতে পারেননি। অথচ, প্রমাণ হিসেবে আদালতে কোনও কাগজপত্র দাখিল করা হয়নি। এ নিয়েও বিচারক জানিয়ে দেন, মামলার পরবর্তী দিনে এই তিন জনকে হাজির থাকতেই হবে। আগামী ৩ মার্চ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy