Advertisement
০৮ মে ২০২৪

কেশপুর লিড দেবে কিনা, সংশয়ে খোদ সূর্যকান্ত

এ বারের নির্বাচনে কেশপুর থেকে বামেরা ‘লিড’ পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেন খোদ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। একই সঙ্গে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের প্রতি তাঁর আবেদন, “কেশপুরের জন্য যাতে ঘাটাল আসনে আমরা না হারি, তা সুনিশ্চিত করতে হবে।”

কেশপুরের নির্বাচনী জনসভায় সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিআই প্রার্থী সন্তোষ রাণা, দেবের জেঠা শক্তিপদ অধিকারী।  ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

কেশপুরের নির্বাচনী জনসভায় সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিআই প্রার্থী সন্তোষ রাণা, দেবের জেঠা শক্তিপদ অধিকারী। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৪ ০১:৫৮
Share: Save:

এ বারের নির্বাচনে কেশপুর থেকে বামেরা ‘লিড’ পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেন খোদ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। একই সঙ্গে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের প্রতি তাঁর আবেদন, “কেশপুরের জন্য যাতে ঘাটাল আসনে আমরা না হারি, তা সুনিশ্চিত করতে হবে।”

ঘাটালের বাম প্রার্থী তথা সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণার সমর্থনে শুক্রবার কেশপুরে সভা করেন সূর্যকান্তবাবু। সিপিএমের জোনাল কার্যালয়, জামশেদ ভবনের অদূরে ওই সভায় বিরোধী দলনেতা ও বাম প্রার্থী ছাড়াও ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তরুণ রায়, বিধায়ক রামেশ্বর দোলুই। সূর্যকান্তবাবুর জানান, রাজ্যে পঞ্চম দফায় ১৭টি আসনে ভোট। এর মধ্যে গতবার বামেদের জেতা আসন এই একটাই, ঘাটাল। বাকি ১৫টিতে তৃণমূল জিতেছিল। আর বহরমপুরে কংগ্রেসের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে বামেদের। কেশপুরের বাম কর্মী-সমর্থকরা লড়াই করছেন জানিয়ে সূর্যকান্তবাবুর আশা, “যত আক্রমণ হয়েছে, মানুষ তত মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন। আক্রমণকারীরা বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। আগামী দিনে আরও বিচ্ছিন্ন হবে।” এ দিনের সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের কেশপুর জোনাল সদস্য শক্তিপদ অধিকারী। তিনি আবার ঘাটালে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেবের জেঠা।

২০০১ সালের বিধানসভা ভোটে এখান থেকে ১ লক্ষ ৮ হাজার ভোটের ‘লিড’ পেয়েছিল সিপিএম। পালাবদলের বছর অর্থাৎ, ২০১১ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৩৪ হাজার। তবে সে বার প্রবল পরিবর্তনের ঝড়েও এই আসন ধরে রাখতে সক্ষম হয় সিপিএম। একটা সময়ে কেশপুর থেকে জিতেও ‘অস্বস্তি’ কাটাতে পারত না সিপিএম। এখন সেই পরিস্থিতি তৃণমূলের। গেল পঞ্চায়েত নির্বাচনের নিরিখে কেশপুরের তিনটি জেলা পরিষদ আসনে তৃণমূল ‘লিড’ পেয়েছে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার! অর্থাৎ, একদা ‘লালদুর্গ’ এখন ‘সবুজ- গড়’। তবে পালাবদলের পর সিপিএমের ‘দুর্বল’ হয়ে যাওয়ার সুযোগে তৃণমূলের সংগঠনেরও বিস্তার কিন্তু ততটা ঘটেনি। কারণ, সেই গোষ্ঠী কোন্দল। কেশপুরে তৃণমূলের একাধিক গোষ্ঠী রয়েছে। মাঝেমধ্যেই গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জখম হন নেতা- কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ। গত তিন বছরে চার- চারবার দলের ব্লক সভাপতি বদল করতে হয়েছে। এ নিয়ে শাসক দলের মধ্যেই অসন্তোষ রয়েছে।

এ দিনের সভা থেকে তৃণমূল কর্মীদেরও বার্তা দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর কথায়, “এই যে প্রার্থীরা সব দাঁড়িয়েছেন, এঁরা তৃণমূলের কেউ নন। কারণ, তৃণমূল প্রার্থীদের মুখ্যমন্ত্রী ভয় পান।” তৃণমূল হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে বামেরা কখনও হুমকির পথে হাঁটবে না বলেও জানান সূর্যকান্তবাবু। তাঁর কথায়, “কখনও বলব না, আপনি আপনার ঝান্ডা ছেড়ে দিন। যদি দরকার হয়, আপনিই আপনার ঝান্ডা ছেড়ে দেবেন। আমিও আমার ঝান্ডা ছেড়ে দেবো। একসাথে লড়াই করবো।”

নারী নির্যাতন রোধ থেকে সাধারণ মানুষের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা, প্রতিটি ক্ষেত্রেই বামপন্থা একমাত্র পথ বলে দাবি করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পাশাপাশি তৃণমূলী সন্ত্রাসের অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আমি জানি, অনেকে সভায় আসতে পারেননি। কিন্তু লড়ছেন। ভোটের দিনে গোলমাল হলে প্রতিবাদ করতে হবে। অভিযোগ করতে হবে। ভোট দিতে হবে” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তরুণবাবুও দাবি করেন, “গোটা কেশপুর জুড়ে তৃণমূলী সন্ত্রাস চলছে।” আর ঘাটালের বাম প্রার্থী সন্তোষবাবুর প্রত্যয়, “কেশপুরে ভোট লুঠ করার চেষ্টা হচ্ছে। মানুষ রুখে দাঁড়াবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

keshpur surjakanta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE