Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কমিশনের সক্রিয়তায় খুলছে কার্যালয়, দাবি সিপিএমের

নির্বাচনের মরসুমে পুলিশ-প্রশাসনের পুরোটাই চলে গিয়েছে নির্বাচন কমিশনের আওতায়। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দিন বন্ধ পড়ে থাকা দলীয় কার্যালয়গুলি খোলা সম্ভব হচ্ছে বলে দাবি করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। বর্ধমানের কেতুগ্রাম, উত্তর চব্বিশ পরগনার ভাঙর, পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে সম্প্রতি বন্ধ থাকা সিপিএম কার্যালয় খুলেছে। নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরেই এতদিন দলীয় কার্যালয়গুলি খোলা সম্ভব হয়নি।

কার্যালয় খোলার পর মিছিল তাপস সিংহের। ছবি: সোহম গুহ।

কার্যালয় খোলার পর মিছিল তাপস সিংহের। ছবি: সোহম গুহ।

সুব্রত গুহ
মুগবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৪ ০১:২৭
Share: Save:

নির্বাচনের মরসুমে পুলিশ-প্রশাসনের পুরোটাই চলে গিয়েছে নির্বাচন কমিশনের আওতায়। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দিন বন্ধ পড়ে থাকা দলীয় কার্যালয়গুলি খোলা সম্ভব হচ্ছে বলে দাবি করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। বর্ধমানের কেতুগ্রাম, উত্তর চব্বিশ পরগনার ভাঙর, পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে সম্প্রতি বন্ধ থাকা সিপিএম কার্যালয় খুলেছে। নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরেই এতদিন দলীয় কার্যালয়গুলি খোলা সম্ভব হয়নি। এখন কমিশন ভরসা দেওয়া তা খোলা যাচ্ছে।

টানা তিন বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর শনিবারই খুলেছে ভগবানপুর ২ ব্লকের মুগবেড়িয়ায় সিপিএমের জোনাল অফিস (সুকুমার সেনগুপ্ত ভবন)। ওই দিন কাঁথির সিপিএম প্রার্থী তাপস সিংহের নেতৃত্বে, জেলা নেতৃত্ব-সহ কয়েক’শো দলীয় সমর্থকের উপস্থিতিতে কার্যালয় খোলা হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ছিল পুলিশ বাহিনীও। শনিবার দীর্ঘ দিন পরে নন্দীগ্রামেও লোকসভার প্রচার শুরু করেছে সিপিএম। পুলিশ পাহারায় হয়েছে মিছিল-সভা। এ ক্ষেত্রে পুলিশের ‘ভূমিকা’র প্রশংসা করে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা দলের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত রবীন দেব বলেছিলেন, “রাজ্য পুলিশ-প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকায় নন্দীগ্রামে প্রচার শুরু করা গিয়েছে।” সেই একই সুরে মুগবেড়িয়া দলীয় কার্যালয় খোলা প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক প্রশান্ত প্রধান রবিবার বলেন, “২০১০ সালে শাসকদল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা জোর করে জোনাল অফিস বন্ধ করে দিয়েছিল। এত দিন পর প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকার জন্যই মুগবেড়িয়ায় কার্যালয় খোলা গেল।” ওই কার্যালয় থেকে নির্বাচনী কাজ করা হবে বলেও তিনি জানান।

শনিবার মুগবেড়িয়ার সুকুমার সেনগুপ্ত ভবনে গিয়ে দেখা গেল অফিস চত্বরে জমে গিয়েছে পুরু ধুলোর আস্তরণ। এক কোণে ডাঁই হয়ে একগাদা দলীয় পতাকা। একটি ঘরে জড়ো করা ভাঙা টেবিল-চেয়ার। ঘরের দেওয়ালে পুড়ে যাওয়ার ক্ষত স্পষ্ট। এর মধ্যে দিয়ে এগিয়ে কাঁথির প্রার্থী তাপস সিংহ দোতলার ছাদে উঠে টাঙিয়ে দিলেন লাল পতাকা। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, “তৃণমূল জোর করে এই অফিস বন্ধ করে দিয়েছিল। গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে, বামপন্থীদের স্বর থামিয়ে দিতেই এমনটা করা হয়েছিল।” তিনি জানান, এ ভাবেই একে একে ভগবানপুর ও খেজুরি বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএমের সব অফিস দখল মুক্ত হবে।

তবে, এখনও বন্ধ হয়ে রয়েছে মুগবেড়িয়া জোনালের অর্ন্তগত ইটাবেড়িয়া, মাধাখালি ও মুগবেড়িয়া ৩টি লোকাল কমিটির অফিস-সহ ব্লকের ১৬টি কার্যালয়। জোনাল সম্পাদক বিষ্ণুহরি মান্নার অভিযোগ, “গত বিধানসভা ভোটের আগে ২০১০ সালের ৯ এপ্রিল তৃণমূলের লোকেরা জোর করে মুগবেড়িয়া জোনাল কার্যালয় ঘেরাও করে অফিসের সামনে থাকা বেশ কয়েক’টি মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।”

অভিযোগ২০১২ সালের ১৭ নভেম্বর জোনাল অফিসে আগুন লাগানো হয়, ভাঙচুর করা হয় আরও কয়েকটি অফিসে। ১৬টি শাখা কার্যালয়ের বেশ কয়েকটি বেদখলও হয়ে গিয়েছে বলেও বিষ্ণুহরিবাবুর অভিযোগ। তিনি বলেন, “প্রায় ৬৫ জন দলীয় কর্মী-সমর্থক তৃণমূলের অত্যাচারে এখনও এলাকা ছাড়া।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

subrata guha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE