Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কড়া নিরাপত্তায় গণনা পশ্চিমের তিন কেন্দ্রে

মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে খড়্গপুরের ঝাপেটাপুরে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে। ১৪টি ঘরে ১২৬টি টেবিলে একযোগে গণনার কাজ চলবে। গোটা প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে সারতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করতে নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ঢেলে সাজা হয়েছে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে। মেদিনীপুর লোকসভায় এ বার ১০ জন প্রার্থী। একযোগে ৭টি বিধানসভা এলাকারই ভোট গণনা চলবে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৪ ০১:৪০
Share: Save:

পরীক্ষা শেষের উত্‌কণ্ঠা কাটবে আজ। হবে প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণ। আজ, শুক্রবার সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের তিন লোকসভা কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে। মেদিনীপুর, ঘাটাল এবং ঝাড়গ্রাম তিন কেন্দ্রের জন্যই প্রশাসনিক প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়েছে। থাকছে কড়া নিরাপত্তা আয়োজন।

মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে খড়্গপুরের ঝাপেটাপুরে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে। ১৪টি ঘরে ১২৬টি টেবিলে একযোগে গণনার কাজ চলবে। গোটা প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে সারতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করতে নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ঢেলে সাজা হয়েছে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে। মেদিনীপুর লোকসভায় এ বার ১০ জন প্রার্থী। একযোগে ৭টি বিধানসভা এলাকারই ভোট গণনা চলবে। প্রতিটি বিধানসভার জন্য ২টি করে মোট ১৪টি ঘর থাকছে সেখানেই মেদিনীপুর কেন্দ্রের ১৯১৪টি বুথের গণনা চলবে। প্রতিটি ঘরে গণনার জন্য ৮টি করে টেবিল এবং একটি করে অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসারের টেবিল থাকবে। প্রতিটি টেবিলে প্রার্থী মনোনীত এক জন করে এজেন্ট থাকবেন। গণনা পদ্ধতিতে নজরদারির জন্য প্রতিটি ঘরে থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরাও।

নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে মোতায়েন করা হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রার্থী, তাঁর এজেন্ট, গণনার কাজে যুক্ত কর্মী-আধিকারিক এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি ছাড়া ভেতরে আর কেউ ঢুকতে পারবে না। সংবাদমাধ্যমের জন্য কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় ময়দানে মিডিয়া সেন্টার খোলা হচ্ছে।

গোটা প্রক্রিয়া সহজ করতে গণনা কেন্দ্রের প্রতিটি ঘরে বসানো হচ্ছে কম্পিউটার। সেখানে তথ্য নথিভুক্ত করা হবে। সেই সঙ্গে আনা হয়েছে বেশ কিছু অ্যানড্রয়েড মোবাইল। এগুলি কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী যাবতীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গণনা কেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকছে। গণনা কেন্দ্রের ভিতরে ও বাইরে পর্যাপ্ত বাহিনীও থাকবে।”

ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের অর্ন্তগত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগণনা হবে ঘাটাল কলেজে। ঘাটাল কলেজের গণনাস্থল থেকে দু’শো মিটার এলাকা জুড়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কলেজের পাশ্ববর্তী ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কেও যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ঘাটাল কেন্দ্রে সাতটি বিধানসভার জন্য ৭টি ঘরে ১৩০টি টেবিলে একযোগে গণনার কাজ চলবে। গণনার জন্য অফিসার-সহ ৭৫০ জন্য ভোট কর্মী কাজ করবেন। নিয়ম অনুযায়ী গণনার সময় প্রতি টেবিলে প্রার্থী পিছু এক জন করে দলের প্রতিনিধি থাকতে পারেন। বৃহস্পতিবার ১৩০টি টেবিলের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় ছ’শো প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ দেন ঘাটালের মহকুমাশাসক অদীপ রায় এবং ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট-সহ অন্যরা।

আজ, শুক্রবার সকাল ৮টায় ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের মহিলা বিভাগে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার ১,৯৭৩টি বুথের ভোট গণনা হবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, কলেজের মহিলা বিভাগের সাতটি ঘরে মোট ৯১টি টেবিলে গণনা হবে। প্রতি টেবিলে দু’জন করে গণনা কর্মী ও এক জন মাইক্রো অবজার্ভার থাকবেন। ঝাড়গ্রাম বিধানসভার গণনা হবে ১১টি টেবিলে। গড়বেতা বিধানসভার গণনা হবে ১০টি টেবিলে এবং বাকি পাঁচটি বিধানসভার (বিনপুর, গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রাম, শালবনি ও বান্দোয়ান) প্রতিটির গণনা হবে ১৪টি করে টেবিলে। সব মিলিয়ে ২৫ রাউন্ড গণনার শেষে চূড়াম্ত ফল জানতে বিকেল গড়িয়ে যাবে। সাতটি ঘরের প্রতিটিতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের হল-ইনচার্জ থাকবেন। গণনা চলাকালীন প্রতিটি ঘরে সিসিটিভি চালু থাকবে। এ ছাড়া গণনাকেন্দ্রের সাতটি ঘরেই গণনার প্রক্রিয়ার খঁুটিনাটি পর্যায় ভিডিওগ্রাফি করে রাখা হবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, সকাল সাতটায় প্রথমে স্ট্রংরুম খোলার হবে। পোস্টাল ব্যালট গোনার পরে প্রতিটি টেবিলে ভোটগণনা শুরু হয়ে যাবে। গণনা সংক্রান্ত সার্বিক দায়িত্বে থাকছেন ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আর অর্জুন এবং সহকারি রিটার্নিং অফিসার তথা মহকুমাশাসক এস অরুণপ্রসাদ। গণনা কেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আঁটোসাঁটো করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রায় চারশো পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে গণনা কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখা হয়েছে। তিনস্তরীয় নিরাপত্তার বাইরে থাকবে জেলা পুলিশ। গণনাকেন্দ্রের ভিতরে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। গণনা চলাকালীন শহরের কয়েকটি রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এ ছাড়া শহরে ঢোকার প্রতিটি রাস্তায় কড়া নজরদারি থাকবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE