এক সিপিএম কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গড়বেতা থানার হেতাশোলে। নিহতের নাম সইদুল ভুঁইয়া (৩৬)। বাড়ি গড়বেতার তিলডাঙায়। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরপরই সইদুল সপরিবার ঘরছাড়া হন। থাকতেন মেদিনীপুরে। রবিবার এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গড়বেতার শ্যামনগরে যান। তাঁকে দেখতে পেয়েই তৃণমূলের একদল লোক তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পরে মারধর করা হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় কয়েকজন সইদুলকে হুগলির আরামবাগ হাসপাতালে নিয়ে যান। ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “সইদুল আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তৃণমূলের লোকেরা ওঁকে ঘরছাড়া করে রেখেছিল। রবিবার এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তখন তৃণমূলের লোকজন ওঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে।” এই ঘটনায় দলের লোকেদের যুক্ত থাকার অভিযোগ এখনই মানতে নারাজ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায়। তিনি বলেন, “একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন তো গ্রাম্য-বিবাদেও রাজনীতির রং লাগিয়ে দেওয়া হয়! ঘটনাটি ঠিক কী খোঁজ নিচ্ছি।” সইদুলের মৃত্যুতে পুলিশে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ জানিয়েছেন, অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।
নিহত সইদুল ভুঁইয়ার বাবা দিলওয়ার ভুঁইয়াও রাজ্যে পালাবদলের পরপরই ঘরছাড়া হন। সোমবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তৃণমূলের লোকেদের অত্যাচারের ভয়ে এলাকায় ফিরতে পারেননি। দিলওয়ার এখন বর্ধমানে রয়েছেন। রবিবারই ছেলের মৃত্যুর কথা জেনেছেন তিনি। দিলওয়ার বলেন, “সইদুল শ্যামনগর যাচ্ছিল। তৃণমূলের লোকজন ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। পরে ও মারা যায়।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার সকালে বাসে মেদিনীপুর থেকে রওনা হন সইদুল। দুপুরে শ্যামনগরে পৌঁছন। বাস থেকে নামার সময়ই তৃণমূলের লোকেদের চোখে পড়ে যান ঘরছাড়া ওই সিপিএম কর্মী। এরপরই তৃণমূলের লোকেরা তাঁকে তুলে নিয়ে হেতাশোলে আসে। সেখানে সইদুলকে বেধড়ক পেটানো হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের লোকজন যে সইদুলকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে, তা দেখেন স্থানীয় কয়েকজন। তাঁরাই সইদুলের পরিজনদের খবর দেন। খোঁজ শুরু হয়। বিকেলে হেতাশোলে তাঁকে জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। নিহতের পরিজনেরা মনে করছেন, সইদুল মারা গিয়েছেন ভেবেই তাঁকে ফেলে রেখে গিয়েছিল তৃণমূলের লোকেরা। এরপর তাঁকে উদ্ধার করে হুগলির আরামবাগ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy