Advertisement
E-Paper

জমিদাতাদের আন্দোলনে সমর্থন বিজেপি-তৃণমূলের

বেআইনি ভাবে জমি অধিগ্রহণ এবং হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও কাজ এগোনোর অভিযোগ তুলে ক’দিন ধরেই হলদিয়ার চকদ্বীপায় নির্মীয়মান ‘ইন্টারন্যাশনাল কার্গো হাব’ চত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন জমিদাতা কৃষকদের একাংশ। এ বার সেই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানাল তৃণমূল-বিজেপি দু’দলই। শনিবার সকালে প্রস্তাবিত কার্গো হাবের মূল গেটের সামনে কৃষকদের বিক্ষোভ চলাকালীন প্রথমে সেখানে আসে বিজেপি-র এক প্রতিনিধি দল। নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি-র যুব মোর্চার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ বন্দোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:২৩

বেআইনি ভাবে জমি অধিগ্রহণ এবং হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও কাজ এগোনোর অভিযোগ তুলে ক’দিন ধরেই হলদিয়ার চকদ্বীপায় নির্মীয়মান ‘ইন্টারন্যাশনাল কার্গো হাব’ চত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন জমিদাতা কৃষকদের একাংশ। এ বার সেই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানাল তৃণমূল-বিজেপি দু’দলই।

শনিবার সকালে প্রস্তাবিত কার্গো হাবের মূল গেটের সামনে কৃষকদের বিক্ষোভ চলাকালীন প্রথমে সেখানে আসে বিজেপি-র এক প্রতিনিধি দল। নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি-র যুব মোর্চার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ বন্দোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “এখানকার কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। কৃষকদের আন্দোলনের পাশে সব সময় আছি। তাই এ দিন এখানে এসেছি।”

দুপুরে বিক্ষোভস্থলে আসেন রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি অখিল গিরি। মাইক হাতে বক্তব্যও রাখেন তিনি। আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে জেলার এই তৃণমূল নেতা বলেন, “কলকাতা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে বলে আপনারা আন্দোলন করছেন। পুলিশ-প্রশাসন এবং হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের কাছে আমার অনুরোধ আদালতের নির্দেশকে সম্মান জানিয়ে কাজ করুন। আমাদের সরকার জোর করে কারও জমি নিতে চায় না, কাউকে উচ্ছেদও করতে চায় না।”

কিন্তু সকালে বিজেপি-র দল আসার পরই দুপুরে তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতিকে আসতে হল কেন? তবে কি আন্দোলন ‘হাইজ্যাক’ হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কাতেই আপনি এসেছেন? অখিলবাবুর জবাব, “দুর্গাচকে খেলার উদ্বোধন করতে এসেছিলাম। সেখানে আন্দোলনের কথা শুনি। তাই এসেছি।”

গত বৃহস্পতিবার থেকে চকদ্বীপার এই প্রস্তাবিত কারখানা চত্বরে দফায় দফায় বিক্ষোভে দেখাচ্ছেন একাংশ জমিদাতা কৃষক। তার জেরে কার্গো হাবের পাঁচিল দেওয়ার কাজ বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আন্দোলনরত ‘কৃষক ও কৃষি বাঁচাও কমিটি’র কনভেনর যদুপতি বোয়াল জানান, ২০০৬ সালে প্রায় ৩৩৮ একর জমি বাজার দরের তুলনায় অনেক কম দামে অধিগ্রহণ করা হয়। তার মধ্যে প্রায় ১৯৭ একর জমি ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিজিং অ্যান্ড ফিনানশিয়াল সার্ভিসেস’ নামে একটি সংস্থাকে কার্গো হাব করার জন্য দিয়েছে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ (এইচডিএ)। যদুপতির কথায়, “নায্য দাম না পেয়ে আমরা জমির পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে ২০০৯ সালে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করি। মামলা চলাকালীন জানতে পারি, যে সরকারি সংস্থার নাম করে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে সেই সংস্থা আদৌ জমি অধিগ্রহণের কথা জেলা প্রশাসনকে বলেনি। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বেআইনি ভাবে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে কলকাতা হাইকোর্টে ফের জানাই। তার প্রেক্ষিতে গত ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্ট নির্মাণকাজে স্থগিতাদেশ দেয়। কিন্তু তারপরেও পাঁচিল দেওয়ার কাজ চলছে।” ভবানীপুর থানার ওসি ভয় দেখিয়ে পাঁচিল দেওয়ার কাজ চালানোর চেষ্টা করছেন বলেও যদুপতির অভিযোগ। ভবানীপুর থানার ওসি রাজা মুখোপাধ্যায় অবশ্য দাবি বলেন, “বিক্ষোভের খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ গিয়েছিল। জোর করে কাজ করানোর চেষ্টার অভিযোগ ঠিক নয়।

জানা গিয়েছে, ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিজিং অ্যান্ড ফিনানশিয়াল সার্ভিসেস’ এবং ‘মেটালস্ অ্যান্ড মিনার্যালস্ ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া’ যৌথ ভাবে ‘হলদিয়া ফ্রি ট্রেড অয়্যারহাউসিং প্রাইভেট লিমিটেড’ একটি সংস্থা গড়ে এই কার্গো হাবের নির্মাণকাজ করছে। এইচডিএ-র কার্যনির্বাহী আধিকারিক উজ্জ্বলকুমার সেনগুপ্ত বলেন, “আমরা জমি অন্য সংস্থাকে দিয়ে দিয়েছি। বিষয়টি আর আমাদের হাতে নেই। এখন যা করার জেলা প্রশাসনই করবে।” পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্যের বক্তব্য, “বিষয়টি শুনেছি। আমি জেলার বাইরে আছি। ফিরেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।”

haldia kargo hub
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy