কয়েক দিন আগেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিএম প্রসঙ্গে রাজনীতিতে কেউই অচ্ছুত নয় বলে ইঙ্গিতবাহী বার্তা দিয়েছেন। তার আগেই অবশ্য জঙ্গলমহলে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানকে অপসারণ করতে সিপিএমের হাত ধরে অনাস্থা এনেছেন শাসক দলের একাংশ সদস্য।
ঘটনাস্থল একদা মাওবাদী ঘাঁটি পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলপাহাড়ি। বেলপাহাড়ি ব্লকের কাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধান কল্পনা বেসরা-কে প্রধান পদ থেকে সরাতে সিপিএম ও ঝাড়খণ্ড পার্টির পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে একযোগে অনাস্থা এনেছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা। কল্পনাদেবীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, পঞ্চায়েতে উন্নয়নের টাকা আত্মসাৎ, স্বজনপোষণ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে গত ২০ অগস্ট বেলপাহাড়ির বিডিও-র কাছে লিখিত ভাবে অনাস্থার চিঠি জমা দিয়েছেন সাত ঞ্চায়েত সদস্য। এর মধ্যে দু’জন সিপিএমের, দু’জন ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-র এবং বাকি ৩ জন তৃণমূলের সদস্য।
অনাস্থার চিঠি পেয়ে পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী পদক্ষেপও শুরু করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বেলপাহাড়ির বিডিও সর্বোদয় সাহা জানিয়েছেন, আগামী ৩ সেপ্টেম্বর, বুধবার অনাস্থার ভোটাভুটির জন্য কাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তলবি সভা ডাকা হয়েছে।
তৃণমূল পরিচালিত এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩ জন সদস্যের মধ্যে ৯ জন তৃণমূলের। স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রধান কল্পনাদেবীকে সামনে রেখে পঞ্চায়েতের যাবতীয় কাজকর্ম চালাচ্ছিলেন তৃণমূলের কাঁকো অঞ্চল সভাপতি বিশ্বজিৎ সেন। পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নিয়ে কল্পনাদেবী ও বিশ্বজিৎবাবুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। দলের অন্দরে বিশ্বজিৎবাবুর বিরুদ্ধে সরব হন স্থানীয় তৃণমূলের একাংশ।
প্রধান কল্পনাদেবীর অবশ্য অভিযোগ, “আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। সিপিএম ও ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর পঞ্চায়েত সদস্যরা আমাদের তিন সদস্যকে প্রলোভন দেখিয়ে অনাস্থা এনেছেন। দল চইলে আমি সরে যাব।” তৃণমূলের কাঁকো অঞ্চল সভাপতি বিশ্বজিৎ সেন বলেন, “প্রধানের বিরুদ্ধে দলের মধ্যে কিংবা স্থানীয় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকতে পারে। সমস্যা সমাধানে দলীয়স্তরে আলোচনা চলছে।” দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্বজিৎবাবুর বক্তব্য, “এ ক্ষেত্রে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। উর্ধ্বতন নেতৃত্ব বিষয়টি দেখছেন।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “দলে ক্ষোভ-বিক্ষোভের জায়গা নেই। কেন এমন হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
সিপিএমের বেলপাহাড়ি জোনাল সম্পাদক উদ্ধব মাহাতোর দাবি, “সিপিএমের যে দু’জন পঞ্চায়েত সদস্য অনাস্থাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন, সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। দলের তরফে অনাস্থা আনার বা সমর্থন করার কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy