Advertisement
E-Paper

তরুণ প্রজন্মের সমর্থন মিলছে না, উদ্বেগে সূর্য

তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে দলের কোনও আবেদনই আর অবশিষ্ট নেই বলে মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। একই ভাবে মধ্যবিত্তের মধ্যেও পার্টির ভীত দুর্বল হয়ে গিয়েছে। সিপিএমের পলিটবুর্যো সদস্য তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের গলাতেও এই উদ্বেগ ধরা পড়ল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৪ ০০:০৭
পাশাপাশি। মেদিনীপুরে এক সভায় সূর্যকান্ত মিশ্র ও দীপক সরকার। —নিজস্ব চিত্র

পাশাপাশি। মেদিনীপুরে এক সভায় সূর্যকান্ত মিশ্র ও দীপক সরকার। —নিজস্ব চিত্র

তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে দলের কোনও আবেদনই আর অবশিষ্ট নেই বলে মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। একই ভাবে মধ্যবিত্তের মধ্যেও পার্টির ভীত দুর্বল হয়ে গিয়েছে। সিপিএমের পলিটবুর্যো সদস্য তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের গলাতেও এই উদ্বেগ ধরা পড়ল।

লোকসভা ভোটে নজিরবিহীন ভরাডুবির পরে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির পর্যালোচনা নিয়ে আলোচনার জন্য রবিবার মেদিনীপুরে আসেন সূর্যকান্তবাবু। শহরের বিদ্যাসাগর হলে সাধারণ সভা হয়। যেখানে দলের জোনাল কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। দলের এক সূত্রে খবর, সভায় বিরোধী দলনেতা বলেন, “তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের সমর্থন আমরা পাচ্ছি না। মধ্যবিত্তের সমর্থনও হ্রাস পেয়েছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে হবে।” তাঁর কথায়, “এই গুরুতর পরাজয়ের প্রধান কারণ রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক। ২০০৮ সাল থেকে ধারাবাহিক ভাবে জনভিত্তি হ্রাস পাচ্ছে। আমরা রোধ করতে পারছি না। জনভিত্তি হ্রাস পাওয়ার কিছু কারণ আমরা আগেও চিহ্ণিত করেছি। ২০০৯ এর লোকসভা ভোটের পর করেছি। ২০১১ এর বিধানসভা ভোটের পরও করেছি। তা-ও জনসংযোগে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।”

দলের জেলা সম্পাদক হিসেবে এ দিনের সভার আহ্বায়ক ছিলেন দীপক সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিএমের মধ্যে বিভাজন নতুন নয়। একদিকে দীপক সরকারের অনুগামীরা। অন্য দিকে, সূর্যকান্ত মিশ্রের অনুগামীরা। অবশ্য সিপিএম নেতৃত্ব কখনওই এই বিভাজনের কথা মানতে চান না। তবে, এর আগে জেলায় দলের ঠিক কোন সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সূর্যকান্তবাবু, তা মনে করতে পারেন না সিপিএমের প্রবীণ নেতারাও।

দলের এক সূত্রের দাবি, সম্প্রতি এই দুই নেতার দূরত্ব কমেছে। এ দিনও সভার আগে-পরে কথা বলতে দেখা গিয়েছে দুই নেতাকে। এমনকী, দু’জনে একসঙ্গেই সভাস্থল থেকে বের হন। সভায় ঠিক কী বলেছেন বিরোধী দলনেতা? দলের এক সূত্রের দাবি, কেন লোকসভায় এই ভরাডুবি তা জানানোর পাশাপাশি আগামী দিনে দলের কর্মীদের কী করণীয়, তারও দিকনির্দেশ করেন তিনি। জানিয়ে দেন, বুথস্তর থেকেই সংগঠন সাজাতে হবে। স্থানীয় ইস্যুতে আন্দোলন করতে হবে। নতুন ভাবনাও ভাবতে হবে।

দলকে ত্রিমুখী আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে বলে জানিয়ে আক্রমণ মোকাবিলায় চারটি হাতিয়ারের কথাও জানান বিরোধী দলনেতা। দলের এক সূত্রে খবর, সভায় তিনি বলেন, “বৃহত্তম বাম ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলোকে এক জায়গায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। সেই চেষ্টাও চলছে। ত্রিমুখী আক্রমণ মোকাবিলা করেই আমরা এগোবো। আমাদের চারটি হাতিয়ার আছে। এক, মতাদর্শ। দুই, রাজনীতি। তিন, সংগঠন এবং চার, সংগ্রাম।”

গণ-সংগঠনগুলো ঠিক ভাবে কাজ করছে না বলেও বুঝিয়ে দেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর মতে, গণ-সংগঠনগুলো স্বাধীন ভাবে সার্বিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সফল হয়নি। সূর্যকান্তবাবুর কথায়, “এই তিন বছরে যে সব ইস্যু এসেছে, সেগুলো নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন হয়নি। যে সংখ্যক মানুষকে আন্দোলনে সামিল করা সম্ভব ছিল, তা হয়নি।”

অন্য দিকে, এ দিনই নারায়ণগড়ের মকরামপুরে আদিবাসীদের হুল উৎসবে যোগ দেন তিনি। এলাকার বিধায়ককে ওই অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেন হুল উৎসব কমিটির সদস্যেরা। সেখানে তিনি বলেন, “হুল উৎসব রাজ্য সরকারের পালন করা উচিত। কিন্তু তা হচ্ছে না। তাই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা নিজেরাই এই উৎসব পালন করছেন।”

young generation suryakanta mishra support medinipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy