Advertisement
E-Paper

দাঁতন-কাণ্ডে ধৃত প্রেমিকের স্ত্রী

রাতেই অন্ত্যষ্টি হয়েছে মায়ের। শোকে মূহ্যমান দাঁতনের পাঁচরোল গ্রামের নির্যাতিতা বছর তিরিশের সেই শবর যুবতী। ভাইয়ের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাতেই গ্রেফতার হয়েছেন পুরনো প্রেমিকের-স্ত্রী সবিতা গিরি। বৃহস্পতিবার তাকে মেদিনীপুর আদালতে হাজির করানো হলে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। নির্যাতিতার বাড়ির সামনে রয়েছে পুলিশের টহল। শবর যুবতী চান এক সময়ের প্রেমিক বিল্টু গিরিকেও গ্রেফতার করুক পুলিশ। বৃহস্পতিবার নির্যাতিতা বলেন, “বিল্টুর বিয়ের পর থেকে পাঁচ বছর কোনও যোগাযোগ ছিল না। তারপরও ওর বাড়ির লোক বদনাম করতে আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করল।” উল্লেখ্য, বুধবার ওই তরুণীর মা বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৫৬

রাতেই অন্ত্যষ্টি হয়েছে মায়ের। শোকে মূহ্যমান দাঁতনের পাঁচরোল গ্রামের নির্যাতিতা বছর তিরিশের সেই শবর যুবতী। ভাইয়ের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাতেই গ্রেফতার হয়েছেন পুরনো প্রেমিকের-স্ত্রী সবিতা গিরি। বৃহস্পতিবার তাকে মেদিনীপুর আদালতে হাজির করানো হলে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। নির্যাতিতার বাড়ির সামনে রয়েছে পুলিশের টহল। শবর যুবতী চান এক সময়ের প্রেমিক বিল্টু গিরিকেও গ্রেফতার করুক পুলিশ। বৃহস্পতিবার নির্যাতিতা বলেন, “বিল্টুর বিয়ের পর থেকে পাঁচ বছর কোনও যোগাযোগ ছিল না। তারপরও ওর বাড়ির লোক বদনাম করতে আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করল।” উল্লেখ্য, বুধবার ওই তরুণীর মা বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন। তরুণীর অভিযোগ ছিল, কটূক্তি ও হুমকির জেরেই তাঁর মা আত্মঘাতী হয়েছেন।

মদ্যপ স্বামী শবর-যুবতীকে ছেড়ে চলে যাওযার পর সাত বছরের মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকতেন। গত ২১ মার্চ পাড়ার কলতলায় জল নিতে গিয়ে আক্রান্ত হন তিনি। প্রেমিকের পরিবারের বিরুদ্ধে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে যুবতীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ছ’জন অভিযুক্তের মধ্যে এক সময়ের প্রেমিক বিল্টু গিরি, তাঁর-স্ত্রী সবিতা গিরি ও কাকা শশাঙ্ক গিরিকে গ্রেফতার করে। কিন্তু, পর দিন আদালতে জামিন পান অভিযুক্তরা।

প্রশ্ন ওঠে, কী ভাবে শ্লীলতাহানির মামলায় এত সহজে জামিন মিলল! নির্যাতিতা যুবতীর অভিযোগ, আদালতে তাঁকে দিয়ে এক আইনজীবী জোর করে সাদা কাগজে টিপসই করান। তাঁকে এজলাসেও ডাকা হয়নি। ফলে ছাড়া পান অভিযুক্তরা। ঘটনার তদন্তকারী অফিসার অজিত সিংহ যাদব বলেন, “ যুবতীর অভিযোগ শুনে ফের জামিন বাতিলের আবেদন করেছি।” ইতিমধ্যেই পুলিশ বিল্টু গিরি ও কাকা শশাঙ্ক গিরি-সহ পাঁচ পলাতক অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি করেছে। এ দিন আত্মঘাতী মহিলার বাড়িতে এসেছিলেন অনগ্রসর জাতি উন্নয়ন দফতরের জেলা পরিদর্শক শঙ্কর কোটাল। তিনি বলেন, জেলাশাসককে রিপোর্ট দেবেন বলে জানিয়েছেন। কথা বলে গিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর চুনি কোটাল সিপি আদিম উপজাতি মহিলা স্বসহায়ক সমিতির প্রতিনিধিরাও। সমিতির জেলা সম্পাদিকা শ্যামলী সিংহ বলেন, “আগেই আমরা ঘটনার নিন্দা করে চিঠি দিয়েছিলাম। তা সত্ত্বেও এই যুবতীর মাকে প্ররোচনায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হল।” তাঁর হুঁশিয়ারি, “এ বার আমরা বসে থাকব না। প্রয়োজনে আদালতে সামনে আক্রান্ত পরিবারকে নিয়ে বিক্ষোভ দেখাব।”

এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও। ২৫ মার্চ নির্যাতিতা পরিবারের বাড়িতে গিয়েছিলেন বাম সমর্থিত পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী মঞ্চের প্রতিনিধিদল। সেই দলে ছিলেন রাজ্য সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কে, এলাকার বিধায়ক তথা সংগঠনের জেলা সম্পাদক বিরাম মাণ্ডি, সিপিআই প্রার্থী প্রবোধ পান্ডা। এটাকে ভোটের আগে ‘ফায়দা’ তোলার চেষ্টা বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের দাঁতন ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিক্রম প্রধান। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সিপিএম বিধায়ক বিরাম মাণ্ডি। বরং তাঁর দাবি, রাজনৈতিক দল না দেখে সকলকে গ্রেফতার করা হোক।

panchrol dantan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy