উৎসবের মধ্যেই সন্ত্রস্ত রেলনগরী। সমাজবিরোধী দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে শুক্রবার গভীর রাতে খড়্গপুরে গুলিবিদ্ধ হলেন এক যুবক। শহরের মালঞ্চ এলাকার শাস্ত্রীনগরের এই ঘটনায় জখম হয়েছেন বছর একুশের সঞ্জীব যাদব। তাঁর বাড়ি মালঞ্চর ভগবানপুরে। এই ঘটনায় ফের এক বার শহরের নিরাপত্তার দিকটি বেআব্রু হল বলে অভিযোগ উঠছে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে এ ভাবেই গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন দীপঙ্কর শুক্ল নামে এক যুবক। মালঞ্চয় গুলিচালনার এই ঘটনায় সেই দীপঙ্কর-সহ পাঁচ জনের নামে খড়্গপুর টাউন থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দীপঙ্কর বাদে বাকি চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভিজ্ঞি শর্মা, ললিত পণ্ডিত, বাবু পণ্ডিত ও বাবলু শর্মাকে রবিবার চার দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে বিশেষ আদালত। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে দীপঙ্কর গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাল্টা হিসেবে মালঞ্চে গুলি চলেছে। চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে।” স্থানীয় সূত্রে খবর, রেলের ঠিকাদারি কারবারে যুক্ত খড়্গপুরের একদা ত্রাস মাফিয়া বাসব রামবাবুর সহচর শ্রীনু নাইডু-র ঘনিষ্ঠ দীপঙ্কর এলাকায় কুখ্যাত সমাজবিরোধী বলেই পরিচিত। সম্প্রতি শ্রীনুর দলে ভাঙন ধরেছে। গত ২৫ মে শ্রীনু নিজেই তার দলের দুই যুবককে জখম করে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় শ্রীনু এখন জেলবন্দি। এই পরিস্থিতিতে এলাকায় মাথাচাড়া দিচ্ছে দীপঙ্কর। তাঁর সঙ্গে বিরোধী গোষ্ঠীর কোন্দলের জেরে ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে গুলিতে জখম হন দীপঙ্কর। সেই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ওই ঘটনার ১৮ দিন পরে এ বার গুলি মালঞ্চয়। দীপঙ্করের বিরোধী গোষ্ঠীর লোক হিসেবে পরিচিত সঞ্জীবকে শাস্ত্রীনগরের কাছে ধরে পেটের কাছে গুলি করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। আহত সঞ্জীবকে প্রথমে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল ও পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে তাঁকে কলকাতার এক নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়।
এ দিকে, উৎসবের মরসুমে এই ঘটনায় শহরের নিরাপত্তা ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর অবশ্য বলেন, “শহরে নিরাপত্তা নিয়ে ভাবনার কিছু নেই। একটি-দু’টি ঘটনা হঠাৎ ঘটে যাচ্ছে। সেগুলি ঠেকাতে দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা চালাচ্ছি।”