Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ধানের গাদায় আগুন, ধৃত ৮ বাম নেতা

ফের উত্তপ্ত পুড়শুড়ি। রবিবার রাতে চন্দ্রকোনা থানার পুড়শুড়ি গ্রামে দুই তৃণমূল নেতার খামারের ধানের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে ওই গ্রামেরই তৃণমূলের বুথ সভাপতি প্রশান্ত পান ও স্থানীয় আইএনটিটিইউসি নেতা তথা যুব নেতা মলয় ঘোষের খামারের ধানের গাদায় সিপিএমের লোকেরা আগুন লাগিয়ে দেয়।

পুড়শুড়ি গ্রামে পোড়া ধানের গাদা। —নিজস্ব চিত্র।

পুড়শুড়ি গ্রামে পোড়া ধানের গাদা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৪ ০০:৫৭
Share: Save:

ফের উত্তপ্ত পুড়শুড়ি।

রবিবার রাতে চন্দ্রকোনা থানার পুড়শুড়ি গ্রামে দুই তৃণমূল নেতার খামারের ধানের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে ওই গ্রামেরই তৃণমূলের বুথ সভাপতি প্রশান্ত পান ও স্থানীয় আইএনটিটিইউসি নেতা তথা যুব নেতা মলয় ঘোষের খামারের ধানের গাদায় সিপিএমের লোকেরা আগুন লাগিয়ে দেয়। প্রশান্তবাবু ও মলয়বাবুর দাবি, আগুনে প্রায় ৩০ বিঘা জমির ধান-সহ খড় পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ওই ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। সোমবার সকালে পুলিশে দুই তৃণমূল নেতা ওই ঘটনায় ২৩ জন সিপিএম নেতা-কর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আট জন সিপিএম নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের এ দিন ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত ১টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দারা ধানের গাদায় আগুন দেখতে পান। কিছুটা দূরত্বে পরপর ৯টি ধানের গাদায় আগুন দেখে স্থানীয় বাসিন্দারাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় দমকলে খবর দেওয়া হয়। তবে দমকল আসার আগেই আগুনে ধানের গাদাগুলি ভস্মীভূত হয়ে যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, তৃণমূল নেতা প্রশান্ত পানের মালিকানাধীন ১২ বিঘা জমির ধান তিনটি গাদায় রাখা ছিল। এছাড়াও তৃণমূল নেতা মলয় ঘোষের ১৮ বিঘা জমির ধানও সঞ্চয় করে রাখা ছিল ৬টি গাদায়। প্রশান্তবাবু ও মলয়বাবু বলেন, “ভোটের কাজের চাপে ধান ঝাড়া হয়নি। এবারে বোরো ধানের উৎপাদন ভাল হয়েছিল। ধান রোয়া থেকে ধান কেটে তোলা পর্যন্ত সবমিলিয়ে বিঘা প্রতি হাজার দশেক টাকা খরচও হয়েছে। তবে লাভ ভালই হত।”

ঘটনার খবর পেয়ে এ দিন রাতেই ক্ষীরপাই থেকে দলের ব্লক সভাপতি সুকুমার চক্রবর্তী, সুজয় পাত্র, গৌতম ভট্টাচার্য-সহ দলের ব্লক নেতৃত্ব ও কর্মী-সমথর্করা গ্রামে যান। ঘটনায় অভিযুক্ত সিপিএম কর্মীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবিতে তৃণমূল নেতাদের ঘিরে কর্মী-সমথর্করা বিক্ষোভ দেখায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সোমবার সকালে চন্দ্রকোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা নেতা তথা পরিষদীয় সচিব শঙ্কর দোলইও পুরশুড়িতে যান। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠকও করেন তিনি। শঙ্করবাবুর অভিযোগ, “ভোটের ফল বেরনোর পর এলাকায় ছোটখাটো গণ্ডগোল হচ্ছে। আমরা কর্মী-সমর্থকদের কড়া নির্দেশ দিয়ে এলাকাকে শান্ত রেখেছি। কিন্তু তারপরেও সিপিএমের লোকজন আস্ত ধানের গাদা পুড়িয়ে দিল।” উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের আগে ঘাটালে সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের জনসভা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঘাটালের বরদা চৌকানে প্রহ্লাদ রায় নামে এক সিপিএম কর্মী খুন হন। পুড়শুড়ি গ্রামের বাসিন্দা প্রহ্লাদবাবুর খুনের ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। সেই ঘটনা ঘিরেও পুড়শুড়িতে চড়েছিল উত্তেজনার পারদ।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএমের চন্দ্রকোনা ১ জোনাল কমিটির সম্পাদক বিদ্যুৎ রায় বলেন, “ভোটের ফলে দলীয় কর্মীরা এমনিতেই হতাশ। দলের সংগঠনও এখন খুবই দুর্বল। ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ghatal paddy firm fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE