নাবালিকার বিয়ে বন্ধে সরকারি প্রচার, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পের সূচনাও যে ছবিটা খুব একটা পাল্টাতে পারছে না, ফের তার প্রমাণ মিলল শনিবার। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানা এলাকার শীতলপুর গ্রামের এক কিশোরী এ বারই মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। দরিদ্র পরিবারের বহু কষ্টের মধ্যে পড়াশোনা করেও প্রথম বিভাগ পেয়েছে সে। এ দিন তারই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল।
শেষমেশ অবশ্য প্রশাসনিক চেষ্টায় বিয়েটা আটকানো গিয়েছে। এক গ্রামবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে বিডিও মঞ্জুশ্রী মণ্ডল ও ওসি অজয়কুমার মিশ্র এলাকায় পৌঁছে বিয়ে রুখে দেন। প্রশাসনের এই ভূমিকায় খুশি ওই ছাত্রী। সে বলে, “শিক্ষকতা করার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, তা সফল করবো। নিজেকে প্রমাণ করতেই হবে।”
বাড়ি থেকে দু’কিলোমিটার দূরে স্কুল ছিল এই কিশোরীর। এ বার মাধ্যমিকে সে ৪৩৬ নম্বর পেয়েছে। তার ইচ্ছে কলা বিভাগে পড়ার। কিন্তু দিনমজুর বাবা মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিলেন। ‘টিউশন করে নিজের পড়ার খরচ চালিয়ে নেবো’ বলার পরেও সিদ্ধান্ত বদলাননি ওই ছাত্রীর বাবা। ষষ্ঠ শ্রেণি উত্তীর্ণ রাজমিস্ত্রি পাত্রের সঙ্গে মেয়ের বিয়ের সম্বন্ধ তিনি ভাঙতে চাননি। মহিষাদলের একটি মন্দিরে এ দিন বিকেলে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল।
দুপুরেই অবশ্য বিডিও এবং ওসি ওই ছাত্রীর বাড়িতে পৌঁছে যান। মেয়েটির মা-বাবাকে বোঝান। মেয়েটির পড়াশোনায় সাহায্যের আশ্বাসও দেন। বিডিও মঞ্জুশ্রীদেবী বলেন, “মেয়েটি আমাদের দেখেই কান্নাকাটি শুরু করে। জানায়, ও পড়তে চায়। ওকে আমরা সরকারি নানা প্রকল্প থেকে সাহায্য করবো।” ওসি জানান, পড়ার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছাড়াও ওই ছাত্রীকে স্কুলে যাতায়াতের জন্য সাইকেল দেওয়া হবে।” সব শুনে পাত্র-পাত্রী দু’পক্ষই বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। মেয়েটির বাবা-মাকেও বলতে শোনা যায়, “ও পড়তে চাইলে পড়ুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy