বটতলাচক কালীমন্দিরে প্রার্থনা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
তখনও ভোরের আলো ভাল করে ফোটেনি। ঘড়ির কাঁটায় সওয়া পাঁচটা। সবে মন্দিরের মেঝে সাফসুতরো করা হয়েছে। ফুল-মিষ্টির দোকানগুলো খুলতে শুরু করেছে। রুপোলি রঙের গাড়িটা এসে দাঁড়াল বটতলাচক কালীমন্দিরের সামনে। গাড়ি থেকে নেমে জুতো খুলে সোজা মন্দিরে ঢুকে গেলেন তিনি। পরনে সুতির শাড়ি, হাতে পুজোর ডালা। ডালার মধ্যে রয়েছে লাল পাড় হলুদ শাড়ি, জবা ফুলের মালা, আলতা, সিঁদুর, ধূপ। পুজোর ডালা পুরোহিতকে দিয়ে হাতজোড় করে প্রণাম করলেন। শুরু হল আরতি। বছরের প্রথম দিন এভাবেই পুজো দিয়ে দিন শুরু করলেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যা রায়।
জোড়া মসজিদে দোয়া তারকা প্রার্থীর।
মেদিনীপুর শহরের বটতলাচক কালীমন্দির বহু পুরনো। নববর্ষের দিন এমনিতেই এখানে ভক্তদের ঢল নামে। অনেকে মন্দিরে পুজো দিয়ে দোকানে হালখাতা খোলেন। সাধারণত, মন্দির খোলা হয় ভোর পাঁচটা নাগাদই। এদিন অবশ্য কিছুটা আগেই খোলা হয়েছিল। রোজকার মতো এ দিনও ভোরে মঙ্গল-আরতির প্রস্তুতি শুরু হয়। পাঁচটার আগেই মন্দিরে চলে আসেন মন্দিরের পুরোহিত আনন্দ চক্রবর্তী। বাংলার নতুন বছরের প্রথম দিন মেদিনীপুরের মন্দিরে পুজো দেওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন তৃণমূলের এই তারকা প্রার্থী। শুরু হয় প্রস্তুতি। ঠিক হয়, নববর্ষের দিন বটতলাচক কালীমন্দিরে মঙ্গল-আরতির সময় যখন মন্দির খুলবে, তখনই সন্ধ্যাদেবী পুজো দিতে আসবেন। সেই মতো এ দিন ভোর পাঁচটার কিছু আগে ভাড়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দেন সন্ধ্যাদেবী। এ দিন মিনিট কুড়ি মন্দিরে ছিলেন এই অভিনেত্রী। মন্দির থেকে বেরোনোর সময় ঘন্টার দড়িতেও টান দেন।
আরতি শেষে পুজো দিয়ে সন্ধ্যা রায় যখন মন্দির থেকে বেরোচ্ছেন, তখন মন্দিরের সামনে উত্সাহী মানুষের ভিড় জমেছে। সকলেই একবার অভিনেত্রীকে চোখের দেখা দেখতে চান। সেই ভিড়ে মিশে রয়েছে আট থেকে আশি- সকলেই। ভিড় সামলে তৃণমূল কর্মীরা কোনও মতে সন্ধ্যাদেবীকে গাড়িতে উঠিয়ে দিলেন। এই মন্দিরে ন’বছর হল এই মন্দিরে পুজো করছেন আনন্দ পুরোহিত। শহর সংলগ্ন গোলাপিচকের এই বাসিন্দা জানান, আরতির পর মন্দিরের পর্দা ঢেকে দেওয়া হয়। মা বিশ্রাম নেন। সাড়ে সাতটা নাগাদ মাকে নতুন শাড়ি পড়ানো হয়। আটটা নাগাদ নিত্যপুজো শুরু হয়। এদিনও তাই হয়েছে। সন্ধ্যা রায়কে কাছ থেকে দেখে আপ্লুত আনন্দবাবু বলেন, “ওঁকে টিভির পর্দায় দেখেছি। কাছ থেকে এই প্রথম দেখলাম।”
স্থানীয় তৃণমূল কর্মী তরুণ প্রামাণিক বলছিলেন, “সন্ধ্যাদি মঙ্গল-আরতি দেখবেন বলেছিলেন। এ দিন আরতির পুরো সময়টাই মন্দিরে ছিলেন।” জেলায় এসে প্রচারের ফাঁকে বেলদার কালীমন্দিরেও পুজো দিয়েছেন সন্ধ্যাদেবী। এ দিন বিকেলে শহরের জোড়া মসজিদেও যান তিনি। মাজারে চাদড় চড়িয়ে প্রার্থনা করেন। কী প্রার্থনা করলেন? মন্দির থেকে বেরোনোর সময় সন্ধ্যাদেবী বলছিলেন, “সকলের মঙ্গল কামনা করেছি। মা যেন সকলকে ভাল রাখেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy