সারের কালোবাজারির বিরুদ্ধে জেলা জুড়ে অভিযান চালাল পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা কৃষি দফতর। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৫টি ব্লকের ১৫০টি খুচরো ও পাইকারি সারের দোকানে হানা দেন ব্লক, মহকুমা ও জেলা কৃষি দফতরের আধিকারিকরা। এ দিন স্টক রেজিস্টার, সেল রেজিস্টার খতিয়ে দেখে ও সার বিক্রি করে ক্যাশমেমো না কাটা-সহ বিভিন্ন অভিযোগে ৭০ জন সার ব্যবসায়ীকে শো-কজ করা হয়। ব্যবসায়ীরা শো-কজের সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান জেলা কৃষি দফতরের আধিকারিকরা।
পূর্ব মেদিনীপুরের উপ-কৃষি অধিকর্তা (বিশ্ব ব্যাঙ্ক) সুশান্ত মহাপাত্র বলেন, “মঙ্গলবার জেলা জুড়ে সারের কালোবাজারির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। খুচরো ও পাইকারি মিলিয়ে জেলার ১৫০টির ওপরে সারের দোকানে হানা দিয়ে ৭০ জন ব্যবসায়ীকে নানা কারণে শো-কজ করা হয়েছে।” তিনি জানান, কারও স্টক রেজিস্টার ঠিক মতো নেই, কারও আবার সেল রেজিস্টারে নিয়ম মেনে হয়নি। আবার অনেকেই ক্যাশমেমো দেয়নি। তাছাড়াও স্টক ও দামের তালিকা দোকানের সামনে ঝুলিয়েও রাখা হয়নি। এ সব কারণে তাঁদের শো-কজ করা হয়েছে। সন্তোষজনক উত্তর না পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে প্রায় দেড়শো জন সার ব্যবসায়ীকেও শো-কজ করা হয়েছে। তাঁদের দেওয়া উত্তর খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ধান লাগানোর মরসুম শুরু হতেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে সারের কালোবাজারির অভিযোগ ওঠে। ইউরিয়া-সহ বিভিন্ন সারের দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগও ওঠে। ইতিমধ্যে, এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে কৃষি দফতরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে কৃষি দফতর জেলার বিভিন্ন এলাকায় সারের দোকানে হানা দিয়ে প্রায় দেড়শো সার ব্যবসায়ীকে শো-কজ করেছিল। ফের মঙ্গলবার দিন ভর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭০ জন সার ব্যবসায়ীকে শো-কজ করা হল।
সারের কালোবাজারি অভিযোগ পেয়ে চাষিদের সরকারি মূল্যে ইউরিয়া সার বিক্রির উদ্যোগ নেয় মহিষাদল ব্লক কৃষি দফতর। গত সপ্তাহে ‘মহিষাদল মার্কেটিং কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’-এর সাহায্যে প্রায় সাড়ে চারশো চাষির কাছে সরকারি মূল্যে ইউরিয়া সার বিক্রি করা হয়। তাছাড়াও সার বিক্রিতে দুর্নীতি রুখতে জেলা জুড়ে সচেতনতা চালানো হচ্ছে বলে দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন। এসইউসি-র কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের জেলা সহ-সভাপতি নারায়ণ নায়ক বলেন, “জেলা জুড়ে সারের কালোবাজারি অব্যাহত। গ্রামাঞ্চলে তুলনামূলকভাবে সারের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। পটাশ, ডিএপি-সহ সব ধরনের সারের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে কৃষি দফতরে একাধিকবার অভিযোগ দায়ের করেছি।’ তা সত্ত্বেও অনিয়ম রোধ করা যায়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy