Advertisement
১৯ মে ২০২৪

প্রহৃত সিপিএম নেত্রী, অভিযোগ নিল না পুলিশ

কাজ সেরে ফেরার পথে প্রহৃত হলেন অঙ্গনওয়াড়ির এক মহিলা কর্মী। তিনি আবার সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রীও। ফলে এই ঘটনায় রাজনৈতির রং লেগেছে। মারধরে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ির বাঘাস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের কালামেটিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার। হাত-পায়ে গুরুতর আঘাত নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি গুরুবারি মুর্মু নামে বছর চল্লিশের ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী।

হাসপাতালে আহত গুরুবারি মুর্মু। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালে আহত গুরুবারি মুর্মু। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশিয়াড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৪ ০২:০৯
Share: Save:

কাজ সেরে ফেরার পথে প্রহৃত হলেন অঙ্গনওয়াড়ির এক মহিলা কর্মী। তিনি আবার সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রীও। ফলে এই ঘটনায় রাজনৈতির রং লেগেছে। মারধরে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের।

পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ির বাঘাস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের কালামেটিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার। হাত-পায়ে গুরুতর আঘাত নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি গুরুবারি মুর্মু নামে বছর চল্লিশের ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। মারধরের ঘটনায় উঠেছে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও।

হঠাৎ কেন মারধর? মেদিনীপুর মেডিক্যালের তিনতলায় মেঝেতে শুয়ে সংগঠনের কেশিয়াড়ির জোনাল সহ-সভানেত্রী শুক্রবার বলেন, “এর আগেও তৃণমূল নেতারা বসে যেতে হবে বলে শাসিয়েছিলেন। কিন্তু, সে হুমকিকে পাত্তা দিইনি।” তাঁর অভিযোগ, “সেই ক্ষোভে পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। পুলিশও অভিযোগ নিতে চায়নি।” পুলিশের অবশ্য দাবি, ওই ঘটনায় কেউ অভিযোগ জানাতেই আসেননি। আর তৃণমূলের দাবি, মারধরে নয়, মোরাম রাস্তায় সাইকেল থেকে পড়ে গিয়েই আহত হন গুরুবারিদেবী।

স্থানীয় সূত্রে খবর, কেশিয়াড়ির কালামেটিয়া গ্রামেই বাড়ি গুরুবারিদেবীর। পেশায় তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। লোকসভা নির্বাচনের পরে ওই এলাকায় সিপিএম-তৃণমূলের একটি সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুবারি উদ্যোগী হয়ে জখমদের হাসপাতালে ভর্তি করানো থেকে শুরু করে, থানায় অভিযোগ দায়ের করায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। অভিযোগ, এতে ক্ষুদ্ধ ছিল এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব।

অঙ্গনওয়াড়ির কাজ সেরে বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটা নাগাদ গুরুবারিদেবী স্থানীয় এক পরিচিতের কাছে ওষুধ নিতে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় তখন একশো দিনের প্রকল্পে মোরাম ফেলার কাজ চলছিল। মোরামে সাইকেল না-চলায় হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। সদ্য তৈরি মোরাম রাস্তা দিয়ে কেন যাচ্ছেন সিপিএম নেত্রী এই প্রশ্ন তুলে তাঁর সঙ্গে বচসায় জড়ান প্রকল্পের শ্রমিক শ্রীমতি সিংহ। শ্রীমতিদেবী এলাকায় তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত।

এরপরেই উপস্থিত অন্য তৃণমূলকর্মীরা গুরুবারিদেবীকে মারধর করে বলে অভিযোগ। গুরুবারিদেবীর কথায়, “রাস্তার কাজ ফেলে আচমকা কোদাল, লাঠি দিয়ে সজল প্রধান, শ্রীমতি সিংহ, কালিপদ পাঠক, বিকাশ হুই-সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূলকর্মী চড়াও হয়। বেধড়ক মারধর করে।”

মারধরের ঘটনায় উঠেছে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও। গুরুবারি মুর্মুর অভিযোগ, তাঁর ভাই রমেশ মুর্মু কেশিয়াড়ি থানায় মারধরের অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ ফিরিয়ে দেয়। উল্টে পুলিশ রমেশকে ডাকাতির মামলায় জড়িনো হবে বলে শাসায়।

কেন নেওয়া হল না আক্রান্তের অভিযোগ? কেশিয়াড়ি থানার দাবি, কেউ অভিযোগ করতে আসেনি। বরং, সিপিএমের জোনাল সদস্য বাদলচন্দ্র আদক এই ঘটনার মীমাংসা হয়ে গিয়েছে, পুলিশি পদক্ষেপের প্রয়োজন নেই এই মর্মে থানায় লিখিত ভাবে জানান। যদিও বাদলবাবু তা অস্বীকার করেছেন। কেশিয়াড়ি মহিলা সমিতির সভানেত্রী অনুরাধা গিরি বলছেন, “পুলিশ অভিযুক্তদের আড়াল করতে গল্প সাজাচ্ছে।” তৃণমূলের জেলা নেতা বিষ্ণুপদ দে বলেন, “শ্রীমতি সিংহের গায়ে সাইকেলের ধাক্কা মারে গুরুবারি। তা নিয়ে হাতাহাতি হয়। এর বেশি কিছু নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cpm police keshiari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE