Advertisement
০৪ মে ২০২৪

পশ্চিমে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল, নালিশ বিজেপির

চাষবাসে বাধা দিচ্ছে কিছু তৃণমূল কর্মী, এই মর্মে রবিবারই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নারায়ণগড়ের নারমা গ্রাম পঞ্চায়েতের গামা গ্রামের একাংশ বিজেপি সমর্থক। অভিযোগ সেই ক্ষোভে রবিবার রাতেই অভিযোগকারী বিজেপি সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় তৃণমূল কর্মীরা। সোমবার দুপুরে নারায়ণগড় থানায় ফের লিখিত অভিযোগ জানান বিজেপি সমর্থকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর ও ঘাটাল শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০১:২৭
Share: Save:

চাষবাসে বাধা দিচ্ছে কিছু তৃণমূল কর্মী, এই মর্মে রবিবারই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নারায়ণগড়ের নারমা গ্রাম পঞ্চায়েতের গামা গ্রামের একাংশ বিজেপি সমর্থক। অভিযোগ সেই ক্ষোভে রবিবার রাতেই অভিযোগকারী বিজেপি সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় তৃণমূল কর্মীরা। সোমবার দুপুরে নারায়ণগড় থানায় ফের লিখিত অভিযোগ জানান বিজেপি সমর্থকেরা। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি অজিত আদগিরি-সহ ১৫ জন দলীয় কর্মী-সমর্থক। গোয়ালতোড়-সহ জেলার আরও কিছু জায়গায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। অভিযোগ খতিয়ে দেখে মামলা রুজুর কথা বলেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নারায়ণগড়ের নারমা এলাকায় তৃণমূলের প্রভাব রয়েছে। পঞ্চায়েতের ক্ষমতাতেও রয়েছে তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনের ফলেও এলাকার পরিস্থিতির বদল হয়নি। তবে এর পর থেকেই গ্রামের বেশ কয়েকজন সিপিএম ও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এতে শঙ্কিত তৃণমূল। নারায়ণগড় বিজেপির মণ্ডল সভাপতি কৃষ্ণপ্রসাদ রায়ের অভিযোগ, “এলাকা জুড়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। রাজনৈতিক ভাবে যুঝতে না-পেরে কর্মী-সমর্থকদের চাষের কাজে বাধা দিচ্ছিল ওঁরা। এখন এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করতে বাড়ি ভাঙচুর করছে।”

বিজেপি ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধ্যায় ওই এলাকায় বিজেপির একটি কার্যালয়ের উদ্বোধন হয়। তা সেরে রাতে বাড়িতে ফেরেন গামা গ্রামের ওই বিজেপি সমর্থকেরা। বিজেপির অভিযোগ, দলের শক্তিবৃদ্ধিতে আতঙ্কিত তৃণমূল কর্মীরা হঠাৎ রাতের বেলায় প্রথমে গয়াপদ মারিকের বাড়িতে চড়াও হয়ে অ্যাসবেস্টসের ছাউনি ভেঙে দেয়। গয়াপদ মারিক, মেহের আলির অভিযোগ, “রবিবার রাতে অজিত আদগিরির নেতৃত্বে তৃণমূল সমর্থকেরা আমাদের মারতে আসে। কোনও রকমে আমরা পালালেও দলের ৮ জনের বাড়ি ভাঙচুর করে ওরা।”

তৃণমূলের নারায়ণগড় ব্লক সভাপতি মিহির চন্দের পাল্টা অভিযোগ, “একশো দিনের কাজে বাধা দিচ্ছিল বিজেপি। তাই চাষের কাজে সমস্যা হয়। তবে তা মিটে গিয়েছে।” তাঁর আরও দাবি, “বিজেপির লোকেরাই নিজেদের বাড়ির অ্যাসবেসটস্ ভেঙে অভিযোগ তুলছে।” একই বক্তব্য তৃণমূলের বুথ সভাপতি অজিত আদগিরিরও। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেন, “অভিযোগ দেখে পদক্ষেপ করবো।”

গোয়ালতোড়-সহ অন্যত্রও দলীয় নেতাকর্মীদের মারধরের অভিযোগ তুলেছে বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় জানান, গত ৮ অগস্ট দলের তরফে রাজ্যজুড়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মারধর, পুলিশি হয়রানি-সহ নানা ঘটনার প্রতিবাদে থানা ঘেরাও কর্মসূচি হয়েছিল। তখন গোয়ালতোড় থানাও ঘেরা করা হয়। তুষারবাবুর অভিযোগ, তারপর থেকেই বিশেষত গোয়ালতোড় অঞ্চলের সমর্থকদের নানা ভাবে হুমকি, জরিমানা চাওয়া হচ্ছে তৃণমূলের তরফে। শালবনি, গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা রোড, দাসপুর-সহ একাধিক ব্লকে চলছে একই অবস্থা। সব ঘটনাই আলাদা আলাদা ভাবে থানায় জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাঁর হুঁশিয়ারি, চলতি সপ্তাহের মধ্যে পুলিশ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না-নিলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন।

বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক ধীমান কোলের অভিযোগ, “দলের শক্তিবৃদ্ধি সঙ্গে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও বাড়ছে। তাই ভয় পেয়েই বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে।” দলের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “দলের প্রচারের জন্য বিজেপি অপপ্রচার চালাচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

allegation bjp kharagpur tmc ghatal clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE