তাঁর নামও হুমায়ুন কবীর। তিনিও তৃণমূলের বিধায়ক। তবে ভরতপুরের নন, তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর ডেবরার বিধায়ক। তবে গত দু’দিনে বার বার বেজে উঠছে তাঁর মোবাইল। অচেনা নম্বর থেকে আসছে ফোন। প্রায় সকলেরই একটা আবেদন, কিউআর কোড দিন। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদের জন্য অনুদান দিতে চান। শুনে তাঁকে বার বার বলতে হচ্ছে, তিনি সেই হুমায়ুন কবীর নন। অন্য হুমায়ুন। এত ফোন পেয়ে বিরক্ত না হলেও কিছুটা অস্বস্তিতে ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক!
শনিবার বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করেন ভরতপুরের হুমায়ুন। তৃণমূল তাঁকে সাসপেন্ড করেছে। শিলান্যাসের পর মসজিদ নির্মাণের জন্য ভক্তদের কাছে অর্থ সাহায্যের আবেদন করেন হুমায়ুন। সে দিনই সভাস্থলে স্টেনলেস স্টিলের তৈরি ১১টি বড় দানবাক্স রাখা হয়। ভরপুরের হুমায়ুনের দাবি, সেই সব দানবাক্স দু’দিনেই ভরে গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, অনলাইনেও মসজিদ তৈরির জন্য অনুদান আসছে তাঁর কাছে। তবে অনুদানের অনেক ফোনই নাকি পাচ্ছেন ডেবরার ত়ৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন!
বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, মুম্বই, হরিয়ানা, রাজস্থান তো বটেই সুদূর দুবাই থেকেও ফোন পাচ্ছেন ডেবরার হুমায়ুন। গত দু’দিনে প্রচুর অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসছে। দাবি, কিউআর কোড বা অনলাইন পেমেন্টের নম্বর পাঠান। মসজিদ তৈরির জন্য অনুদান পাঠাবেন। ডেবরার হুমায়ুনের কথায়, ‘‘সকলকে বোঝানোর চেষ্টা করছি আমি ওই হুমায়ুন নই।’’
আরও পড়ুন:
নামবিভ্রাটের জেরে গত দু’দিনে জেরবার ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর কথায়, ‘‘অচেনা হলেও আমি সকলের ফোনই ধরি। কিন্তু দু’দিনে প্রায় ২০০ ফোন ধরেছি, যাঁরা অন্য হুমায়ুনের খোঁজে আমাকে করেছেন। আমি তাঁদের জানিয়েছি তাঁর নম্বর জোগাড় করে ওই হুমায়ুনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।’’ ডেবরার বিধায়ক এ-ও জানান, এত ফোন পেয়ে তিনি বিরক্ত নন ঠিকই। তবে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে তাঁকে! ফেসবুকেও একই বিষয়ে পোস্ট করেন তিনি। আরও এক পোস্টে লেখেন, ‘মন্দির-মসজিদ রাজনীতির আখড়া-দঙ্গল নয়, আরাধনা-ইবাদতের জায়গা।’
অন্য দিকে, ভরতপুরের হুমায়ুনের দাবি, মসজিদ তৈরির জন্য মুক্তহস্তে ভক্তেরা দান করছেন। অনুদানের পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। রবিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে দানবাক্সের নগদ গণনার কাজ শুরু হয়েছিল। চলেছে রাত ১২টা পর্যন্ত। চারটি বাক্স এবং একটি বস্তা থেকে শুধু নগদে মিলেছে ৩৭ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া, অনলাইন মাধ্যমে কিউআর কোড স্ক্যান করে অনেকে অনুদান দিয়েছেন। সেখানে এখনও পর্যন্ত এসেছে ৯৩ লক্ষ টাকা। বাকি সাতটি দানবাক্সের গণনা শুরু হবে সোমবার বিকেল ৫টা থেকে। রবিবার যে ৩০ জন গণনার কাজ করছিলেন, তাঁরাই সোমবারও এই কাজ করছেন।