এক যুবক খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মেদিনীপুর শহরের মুসলিম কুঠিরচক এলাকায়। মৃতের নাম বিপুল রাণা (২৮)। বাড়ি শহরের কামারপাড়ায়। বুধবার ভোরে স্থানীয় এক রাস্তার উপরই ওই যুবকের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার মানুষ। মাথায় গভীর ক্ষত ছিল। আশপাশে তখনও রক্তের দাগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ কুকুর এনেও তদন্ত চালানো হয়। এখনও এই খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে স্থানীয় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেই পুলিশের এক সূত্রে খবর।জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ জানান, তদন্ত চলছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ঘটনার আগে ওই যুবক তাঁর পরিচিত কয়েকজনের সঙ্গেই এলাকায় ছিলেন। কোনও একটা বিষয় নিয়ে পরিচিত কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। বচসা থেকে হাতাহাতি হয়। পরে এক বা একাধিকজন তাঁর মাথায় পাথর জাতীয় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে ঘটনাস্থলেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়। পুলিশ গোড়ায় ওই পরিচিতদের খোঁজই শুরু করেছে। পুলিশ মনে করছে, কোনও একজন পরিচিত, যে ঘটনার সময় ছিল, তার নাগাল পাওয়া গেলেই রহস্যের জাল খুলতে শুরু করবে। জানা যাবে, প্রকৃত ঘটনাটি ঠিক কী।
ওই যুবক পরিচিতদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়েছিলেন কি না। জড়িয়ে থাকলে কী নিয়েই বা সেই বচসার সূত্রপাত হয়। বুধবার সকাল থেকে পুরো এলাকার পরিস্থিতি ছিল থমথমে। আপাত শান্ত একটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক- উদ্বেগ। মোড়গুলোয় চোখে পড়েছে মানুষের জটলা। গত জুন মাসেই মেদিনীপুর শহরে স্বপন পাণ্ডব নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুন হন। ব্যবসায়ী খুনের অবশ্য কিনারা হয়ে গিয়েছে। অভিযুক্তরা ধরাও পড়েছে।
তবু এক মাস ঘুরতে না- ঘুরতে ফের শহরে খুনের ঘটনা ঘটায় উদ্বিগ্ন বিভিন্ন মহল। এখন মেদিনীপুর শহরে ভিড় বাড়ছে। শহরের এদিক- সেদিকে নতুন নতুন বসতি গড়ে উঠছে। সঙ্গে দুষ্কৃতীদের দাপটও আগের থেকে বাড়ছে বলে অভিযোগ। এখন শহরে নেশাগ্রস্তদের সংখ্যাও বাড়ছে। স্বাভাবিক ভাবে অসামাজিক কাজকর্মের ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার ভোরে যে এলাকার রাস্তার উপর ওই যুবকের মৃতদেহ পড়ে ছিল, তার অদূরেই নেশার ঠেক ছিল। সন্ধ্যার পর যে ঠেকে আসত অন্য এলাকার যুবকেরাও। এই এলাকার মানুষের কাছে যারা অপরিচিত। পুলিশ মনে করছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে। সেই জন্য রাতে এলাকার কেউ ঘটনাটি জানতে পারেননি। শহরবাসী মনে করছেন, পুলিশ আরও কড়া না- হলে শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। এমন কিছু ঘটনা ঘটবে যা আরও বড় প্রশ্ন চিহ্ণ এঁকে দেবে শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায়। পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, উদ্বেগের কিছু নেই। দ্রুত এ ঘটনার কিনারা করতে সব রকম চেষ্টা চলছে। রাতের শহরে নজরদারি চলে। প্রয়োজনে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy