Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিকাশ মঞ্চকে সঙ্গে নিয়ে বন্দর বাঁচাতে চান শুভেন্দু

বন্দর বাঁচানোর দাবিতে ফের পৃথক হলদিয়া পোর্ট ট্রাস্ট গড়ার দাবিতে সরব হলেন বিদায়ী সাংসদ তথা তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে জমিদাতাদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন তিনি। শনিবার দুর্গাচকের একটি সভাগৃহে ‘হলদিয়া বিকাশ মঞ্চ’-এর এক সভায় শুভেন্দুবাবু বলেন, “বাম আমলে জমিহারাদের অনেককে আমরা কাজ দিয়েছি। সুযোগ হলেই তাঁদের আমরা অগ্রাধিকার দিই। আর তা দিতেও হবে।”

হলদিয়া বিকাশ মঞ্চের সভায় বক্তব্য রাখছেন শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।

হলদিয়া বিকাশ মঞ্চের সভায় বক্তব্য রাখছেন শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৪ ০১:০৮
Share: Save:

বন্দর বাঁচানোর দাবিতে ফের পৃথক হলদিয়া পোর্ট ট্রাস্ট গড়ার দাবিতে সরব হলেন বিদায়ী সাংসদ তথা তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে জমিদাতাদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন তিনি। শনিবার দুর্গাচকের একটি সভাগৃহে ‘হলদিয়া বিকাশ মঞ্চ’-এর এক সভায় শুভেন্দুবাবু বলেন, “বাম আমলে জমিহারাদের অনেককে আমরা কাজ দিয়েছি। সুযোগ হলেই তাঁদের আমরা অগ্রাধিকার দিই। আর তা দিতেও হবে।” উন্নয়নের জন্য জমি নেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমার সময়ে জমির বিনিময়ে আমি সর্বোচ্চ মূল্য পাইয়ে দিয়েছি। ভাল কাজের জন্য মানুষ জমি দিতে চান। তবে সে জন্য ধৈর্য নিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে। হুমকি দিয়ে, পুলিশ পাঠিয়ে, পুলিশের সঙ্গে চপ্পল পরা লোক পাঠিয়ে দিয়ে কাজ হয় না। বহু জায়গায় মানুষ বিশ্বাস করে আমাকে জমি দিয়েছেন।”

বছর দেড়েক আগে হলদিয়ার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্য সামনে রেখেই তৈরি হয়েছিল বিকাশ মঞ্চ। এই মঞ্চে দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ছাড়াও আছেন হলদিয়ায় বন্দর ও শিল্প গড়ার জন্য জমিদাতা উদ্বাস্তুরা। এর আগে মঞ্চের তেমন সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়নি। লোকসভা ভোটের মরসুমে শনিবারই ছিল তাদের প্রথম সভা। শুভেন্দুবাবুর মতে, “এই ধরনের অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে অনেক ভাল কাজ করা যায়। আমি এর আগে দল-মত-ধর্ম-পেশা নির্বিশেষে সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে হরিপুর, নন্দীগ্রাম ও জঙ্গলমহলে গণ আন্দোলন করেছি। জিতেছিও। প্রয়োজনে এই মঞ্চের ব্যানারে হলদিয়া পোর্ট ট্রাস্ট গঠনের জন্যও আন্দোলন হবে।”

বস্তুত, হলদিয়া বন্দরকে বাঁচাতে অর্থনৈতিক স্বায়ত্তশাসন একমাত্র পথ বলে বহু দিন ধরেই দাবি করছেন শুভেন্দুবাবু। শনিবারও হলদিয়া বন্দরকে বাঁচানোর আন্দোলনে জনগণকে তাঁর পাশে থাকার আর্জি রেখে তিনি বলেন, “আমার উপর আস্থা রাখুন। আমি এই মঞ্চের পাশে থাকব। হলদিয়ার সামগ্রিক উন্নয়ন করে আপনাদের আশা পূরণ করব।” রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নাম না করে শুভেন্দুবাবুর বক্তব্য, “ভারতবর্ষের এক নম্বর ব্যক্তিও আমাকে হলদিয়া বন্দর বাঁচাতে হলদিয়া পোর্ট ট্রাস্ট গঠনের জন্য আন্দোলন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।”

হলদিয়া বিকাশ মঞ্চের সম্পাদক সুরেশচন্দ্র করণ শনিবারের সভায় শুভেন্দুবাবুকে মঞ্চের মুখ্য পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ঘোষণা করেন। সুরেশবাবুর মতে, “শুভেন্দুবাবু ছাড়া এই মুহূর্তে অন্য কারও হাতে হলদিয়ার উন্নয়ন সম্ভব নয়।” শুভেন্দুবাবুকে পুনর্নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়ে মঞ্চের পক্ষ সভা করা হবে বলেও জানান তিনি। মঞ্চের পক্ষ থেকে তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দুবাবুর কাছে ৩২ দফা দাবিপত্রও তুলে দেওয়া হয়। শুভেন্দুবাবু বলেন, “মঞ্চে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। মঞ্চের দাবিগুলি আমি সমর্থন করি।” হলদিয়ায় তাঁর করা উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে তমলুকের তৃণমূল প্রার্থীর আরও সংযোজন, “হলদিয়াকে আমি নতুন করে গড়ে তোলার কাজ করছি। অনেক পরিকল্পনা আছে। উন্নয়নের প্রশ্নে মানুষ রাজনৈতিক দল দেখেন না, কাজ দেখেন।” উন্নয়নের ক্ষেত্রে আর্থিক সমস্যা নেই বলেও দাবি করেন শুভেন্দুবাবু। তাঁর কথায়, “হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে। গত আড়াই বছরে আমি চারশো চল্লিশ কোটি টাকার কাজ করেছি।”

প্রতিপক্ষ সিপিএমকেও বিঁধেছেন শুভেন্দুবাবু। সেই সঙ্গে আক্রমণ করেছেন প্রাক্তন সাংসদ সম্প্রতি সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত লক্ষ্মণ শেঠকে। শুভেন্দুবাবুর দাবি, “আগের শাসকরা এখানে দাদাগিরি করে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি করত। আমরা সে সব থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছি। দলের নীচু স্তরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আপনাদের ক্ষোভ থাকতে পারে। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে মিলিয়ে আমাকে বিচার করবেন না।” একই সঙ্গে তাঁর স্বীকারোক্তি, “আরও পরিবর্তনের দরকার রয়েছে। শাসকদলে যুক্তদের অনেকের কাজে স্বচ্ছতার অভাব আছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

suvendu adhikari haldia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE