Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাতি নেই, শিল্পশহরে আঁধার পথে হাঁটতে ভয়

হলদিয়া টাউনশিপ যাওয়ার বাইপাস রাস্তায় পথ চলতে হয় এ ভাবেই। আরিফ ইকবাল খান। দিনের বেলা এই রাস্তাগুলো শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। অথচ রাতে সেই রাস্তা দিয়েই চলাচলে ভয় পান স্থানীয় বাসিন্দারা। দুর্গাচক থেকে হলদিয়া টাউনশিপ যাওয়ার ভিআইপি রোড আর এক্সাইড রোডের অবস্থা এমনই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৪৩
Share: Save:

হলদিয়া টাউনশিপ যাওয়ার বাইপাস রাস্তায় পথ চলতে হয় এ ভাবেই। আরিফ ইকবাল খান।

দিনের বেলা এই রাস্তাগুলো শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। অথচ রাতে সেই রাস্তা দিয়েই চলাচলে ভয় পান স্থানীয় বাসিন্দারা। দুর্গাচক থেকে হলদিয়া টাউনশিপ যাওয়ার ভিআইপি রোড আর এক্সাইড রোডের অবস্থা এমনই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই দুই সড়কে কোন পথবাতির ব্যবস্থা নেই। ফলে রাতের অন্ধকারেই হাঁটাই দায়। আবার এই ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

শহরের ভিআইপি রোড আর এক্সাইড রোড দিয়ে দিনভর বহু লোক দুর্গাচক থেকে হলদিয়া টাউনশিপে যাতায়াত করেন। কিন্তু ওই দু’টি রাস্তাই সন্ধ্যার পর থেকেই অন্ধকার হয়ে যায়। ফলে রাত হলেই এই পথে যাতায়াত কমে যায় নিত্যযাত্রীদের। তাছাড়াও আগে হলদিয়ার রানিচক থেকে হাতিবেড়িয়া হয়ে মাখনবাবুর বাজার পর্যন্ত রাস্তায় পথবাতির ব্যবস্থা ছিল। দীর্ঘদিন ধরে আবার ওই পথবাতি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। হাতিবেড়িয়া পেট্রোল পাম্প থেকে হেলিপ্যাড ময়দান পর্যন্ত বাইপায় রাস্তায় আলো নেই। ভবানীপুর থানার কাছ থেকে কদমতলা পর্যন্ত, ক্ষুদিরামনগর থেকে রেল কারখানার পাশ দিয়ে আজাদ হিন্দ নগর আসার রাস্তাতেও পথবাতির ব্যবস্থা নেই। সন্ধ্যার বাসিন্দারা ওই সব রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে ভয়ই পান।

হলদিয়া টাউনশিপের বাসিন্দা অরুণাভ দাস দুর্গাচকে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তিনি প্রতিদিন দুর্গাচক থেকে মোটরবাইকে হলদিয়া টাউনশিপে যাতয়াত করেন। তাঁর কথায়, “ভিআইপি বা এক্সাইড রোডে আলো না থাকায় সন্ধ্যার পরে ওই রাস্তা দিয়ে আসতে ভয় লাগে। সন্ধ্যার পরে খুব দেরি হয়ে গেলে এইচপিএল লিংক রোড ধরে ফিরতে বাধ্য হই।” সম্প্রতি আইওসির হলদিয়া রিফাইনারি এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন সাংবাদিক বৈঠকে রানিচক থেকে মাখনবাবুর বাজার ও হাতিবেড়িয়া পেট্রোল পাম্প থেকে হেলিপ্যাড ময়দান পর্যন্ত বাইপাস রাস্তায় পথবাতির দাবি জানিয়েছিল। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন অধিকারী বলেন, “ওই দুটি রাস্তায় পথবাতি না থাকায় বাসিন্দারা খুব সমস্যায় পড়েন। এ বিষয়ে পুরসভা এবং সাংসদের কাছে আমরা অনুরোধও করেছি।” এলাকার গৃহবধূ অপালা প্রধানের কথায়, “ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে আমাদের সুবিধা হয় ঠিকই। কিন্তু রাত হয়ে গেলেই ওই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করি।”

পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থা এবং হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে শহরের রানিচক থেকে হাতিবেড়িয়া হয়ে মাখনবাবুর বাজার পর্যন্ত এবং হাতিবেড়িয়া পেট্রোল পাম্পের কাছ থেকে হেলিপ্যাড ময়দান পর্যন্ত বাইপাস রাস্তায় প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তায় পথবাতির টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। ৬ কিলোমিটার রাস্তায় পথবাতির জন্য খরচ পড়েছে প্রায় এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। তাছাড়াও হলদিয়ার ভবানীপুর থানার কাছ থেকে কদমতলা পর্যন্ত রাস্তাতেও পথবাতি লাগানোর জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে বলে হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে। হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান তথা তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ব্রজলালচক থেকে হলদিয়া, সুতাহাটা থেকে গিরিশ মোড়, এইচপিএল লিঙ্ক রোড এ সব রাস্তায় আগে আলো ছিল না। গত দু বছরে এই সব রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। রানিচক থেকে মাখনবাবুর বাজার পর্যন্ত পথবাতির জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। ভিআইপি, এক্সাইড বা অন্য কোনও রাস্তায় পথবাতির মাসিক খরচ যদি পুরসভা, বন্দর বা আইওসি বহন করতে চায় তাহলে পথবাতির ব্যবস্থা করতে আপত্তি নেই।”

এ বিষয়ে হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “রানিচক থেকে মাখনবাবুর বাজার পর্যন্ত রাস্তায় হলদিয়া বন্দর ও হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থা যৌথ ভাবে পথবাতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার মাসিক খরচ যৌথভবে বহন করবে হলদিয়া পুরসভা ও এইচডিএ।” তিনি আরও জানান, আস্তে আস্তে শহরের সব রাস্তায় পথবাতির ব্যবস্থা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

haldia haldia township
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE