Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাস চলে সাকুল্যে পাঁচটি, দুর্ভোগ জামবনিতে

এক লক্ষ জনসংখ্যার জামবনি ব্লকে বেসরকারি বাস চলে সাকুল্যে পাঁচটি। এর মধ্যে আবার তিনটি মিনিবাস। সব দিন সব বাস চলেও না। চলে না সরকারি বাসও। ফলে, দূরের গন্তব্যে পৌঁছতে হিমসিম খাচ্ছেন ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের অধীন ৩২৭টি গ্রামের বাসিন্দারা।

জামবনি-ঝাড়গ্রাম রুটের ট্রেকারে ঝুঁকির যাতায়াত। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

জামবনি-ঝাড়গ্রাম রুটের ট্রেকারে ঝুঁকির যাতায়াত। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

কিংশুক গুপ্ত
জামবনি শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৪ ০০:০৯
Share: Save:

এক লক্ষ জনসংখ্যার জামবনি ব্লকে বেসরকারি বাস চলে সাকুল্যে পাঁচটি। এর মধ্যে আবার তিনটি মিনিবাস। সব দিন সব বাস চলেও না। চলে না সরকারি বাসও। ফলে, দূরের গন্তব্যে পৌঁছতে হিমসিম খাচ্ছেন ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের অধীন ৩২৭টি গ্রামের বাসিন্দারা। পর্যাপ্ত বাস চালানোর দাবি প্রশাসনিক মহলে বারবার আবেদন করা হয়েছে। অবশেষে ব্লক প্রশাসনের তরফে জেলা পরিবহণ আধিকারিকের কাছে লিখিতভাবে জামবনি ব্লকের পাঁচটি রুটে নিয়মিত পর্যাপ্ত বাস চালানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

জামবনির বিডিও দীপ ভাদুড়ি বলেন, “এলাকায় বেশ কিছু ট্রেকার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বিপজ্জনকভাবে যাতায়াত করে। তাতে স্থানীয় ভাবে পরিবহণ সমস্যা মিটলেও বাসের অভাবে দূরের গন্তব্যে পৌঁছতে গেলে বাসিন্দাদের খুবই অসুবিধা হয়। সেই কারণেই জেলা পরিবহণ আধিকারিকের কাছে পর্যাপ্ত বাস চালানোর জন্য আবেদন জানিয়েছি।”

এই মুহূর্তে জালবনি-গোপীবল্লভপুর রুটে একটি বাস, জামবনি-চিচিড়া রুটে দু’টি বাস, জামবনির গিধনি থেকে সাঁকরাইলের রোহিণী পর্যন্ত একটি বাস যাতায়াত করে। এ ছাড়া বেলপাহাড়ির মুনিয়াদা থেকে ঝাড়গ্রাম রুটের একটি বাস জামবনি ছুঁয়ে যায়। জামবনি ব্লকের একমাত্র কলেজ রয়েছে কাপগাড়িতে। বাসের অভাবে কলেজে যেতে অসুবিধায় পড়েন ছাত্রছাত্রীরাও। আবার অনেকে ঝাড়গ্রাম বা আরও দূরের কোনও কলেজের পড়ুায়া। বাসের অভাবে অনেক দূর থেকে আসা স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষকরাও সমস্যায় পড়েন। নিত্যদিন ট্রেকারে বিপজ্জনকভাবে যাতায়াতে অভ্যস্ত হলেও তাঁদেরও দাবি পর্যাপ্ত সংখ্যক বাসের। স্থানীয় বাসিন্দা অচিন্ত্য কর, টুলটুল মজুমদার, বিরল মাহাতোদের বক্তব্য, “বহু বছর আগে জামবনি থেকে জেলা সদর মেদিনীপুর সহ বিভিন্ন দূরপাল্লার রুটে বাস চলত। ক্রমে বাসের সংখ্যা কমতে থাকে। জঙ্গলমহলের অশান্তি পর্বের পর থেকে বাসের সংখ্যা ভীষণভাবে কমে গিয়েছে। বাসের অভাবে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়।”

জামবনির ব্লক সদর গিধনিতে রেল স্টেশন থাকলেও খড়্গপুর থেকে ঝাড়গ্রামগামী পাঁচটি লোকাল ট্রেন গিধনিতে দাঁড়ায়। ফলে পরিবহন সমস্যার ঠিক সুরাহা হয় না। যে এলাকায় প্রায় এক লক্ষ বাসিন্দা রয়েছেন, সেখানে কেন বাসের সংখ্যা এত কম? বাসমালিকদের বক্তব্য, এলাকায় পর্যাপ্ত যাত্রী মেলে না। বাস ভাড়া না বাড়ালে ওই রুটে বাস চালিয়ে পড়তা পোষাবে না। ঝাড়গ্রাম মহকুমা বাস মালিক সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক প্রশান্ত দাস বলেন, “বাস ভাড়া না বাড়লে নতুন রুটে বাস চালিয়ে লাভের আশা কম। ওই এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যায় যাত্রী পাওয়া যায় না।’’ পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, “এটা ঠিক, জামবনি ব্লক এলাকায় এখন হাতে গোনা কয়েকটি বাস চলাচল করে। তবে এলাকায় ট্রেকারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বাসের সংখ্যা কমে গিয়েছে। জামবনিতে যদি প্রশাসন নতুন রুটে বাস চালানোর জন্য উদ্যোগ নেয় তবে আমরা সে কাজে সহযোগিতা করব।” পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিবহণ আধিকারিক অভিজিৎ কুমার হাইত বলেন, “ এ ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE