বৃদ্ধা খুনের পর তিন দিন কেটে গেলেও কিনারা হয়নি বৃদ্ধা খুনের। মঙ্গলবার ভবানীভবনের ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট’ বিশেষজ্ঞরা খড়্গপুরের বিদ্যাসাগরপুরে মৃতার বাড়িতে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন।
টাউন থানার পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত বৃদ্ধার স্বামী পূর্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বয়ানে অসঙ্গতি থাকায় হাতের ছাপ পরীক্ষা করা হল। এ দিন বিশেষজ্ঞরা বাড়ির বিভিন্ন আসবাবপত্র, শোওয়ার ঘরের আলমারি, রান্নাঘরের বাসনপত্র, ডাইনিংয়ে থাকা রেফ্রিজারেটরে হাতের ছাপ খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন। স্মৃতিদেবীর হাতের ছাপ আগেই পুলিশ সংগ্রহ করেছে। বাড়িতে যখন বিশেষজ্ঞরা এ সব পরীক্ষা করছিলেন, তখন বাড়ির বাইরে গাছতলায় বসেছিলেন পূর্ণেন্দুবাবু। তিনি বলেন, “পুলিশের উপর আস্থা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আসায় আরও শান্তি পেলাম।””
তদন্তকারীরা ফ্রিজের পিছনে একটি লোহার শাবল দেখতে পান। সেটি নিয়ে পুলিশ বাড়ির বাইরের বাগানেও সব কিছু খুঁটিয়ে দেখেন। সেখানেও দেখা যায়, রান্নাঘরের পিছনে দরজার বাইরে একটি গাছের গোড়ায় শাবলটি যে রাখা ছিল, তার স্পষ্ট ছাপ রয়েছে। তদন্তে নমুনা হিসেবে শাবলটিকে পুলিশ নিয়ে যায়। বাড়ির শোওয়ার ঘরটি বাদ দিয়ে বাকি ঘরগুলি ব্যবহারের জন্য মৃতার মেয়ে প্রিয়ঙ্কাকে অনুমতি দেয় পুলিশ।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই খুনের পিছনে দুষ্কৃতীদের ডাকাতির উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে করা হয়েছিল। তবে পরে বাড়ির সব সামগ্রী মিলিয়ে দেখা যায়, বাড়ি থেকে কিছুই খোয়া যায়নি। তদন্তে মৃতা স্মৃতি মুখোপাধ্যায়ের স্বামী পূর্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বয়ানেও অসঙ্গতি পায় পুলিশ। পূর্ণেন্দুবাবু জানিয়েছিলেন, শনিবার দুপুরে স্ত্রীর কথা মতো তিনি বাজারে টম্যাটো কিনতে গিয়েছিলেন। বাজার থেকে ফিরে এসে তিনি বাড়ির রান্নাঘরের মেঝেতে স্ত্রীকে রক্তাত্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কিন্তু দেখা যায়, বাড়ির রেফ্রিজারেটরে আগে থেকেই টম্যাটো ছিল। যদিও পূর্ণেন্দুবাবু দাবি করেন, বাড়িতে থাকা টম্যাটো রান্নার জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। তাই স্ত্রী তাঁকে ফের টম্যাটো আনতে বলেন। স্ত্রী কথা মতো তিনিও বেরিয়ে যান। তাঁর আরও দাবি, ওই দিন রান্নাঘর থেকে ডাইনিং হলে তিনি স্ত্রীর রক্তাত্ত দেহ নিয়ে আসেন। যদিও পূর্ণেন্দুবাবুর পোশাকে কোনও রক্তের দাগ পাওয়া যায়নি। তদন্তে এই সমস্ত বিষয়ই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।