Advertisement
E-Paper

বন্যার ভ্রুকুটি দূর, খুশির ঘাটালে শঙ্কায় মাঝিরা

জলমগ্ন ঘাটালে নৌকোয় সওয়ার শহরবাসী- এ বার এখনও পর্যন্ত ছবিটা অবশ্য ভিন্ন। চলতি বছরে এমনিতেই এখনও বর্ষায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। তাছাড়া এখনও জলাধার থেকে জল না ছাড়ায় দুর্ভোগের হাত থেকে অনেকটাই রেহাই মিলেছে ঘাটালের বাসিন্দাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৪ ০০:৩০
জলমগ্ন ঘাটালে নৌকায় সওয়ার শহরবাসী।—ফাইল চিত্র।

জলমগ্ন ঘাটালে নৌকায় সওয়ার শহরবাসী।—ফাইল চিত্র।

জলমগ্ন ঘাটালে নৌকোয় সওয়ার শহরবাসী- এ বার এখনও পর্যন্ত ছবিটা অবশ্য ভিন্ন। চলতি বছরে এমনিতেই এখনও বর্ষায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। তাছাড়া এখনও জলাধার থেকে জল না ছাড়ায় দুর্ভোগের হাত থেকে অনেকটাই রেহাই মিলেছে ঘাটালের বাসিন্দাদের। তবে বর্ষাতেও ঘাটালে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকায় মাথায় হাত নৌকোর মাঝিদের। প্রতি বছর গ্রীষ্ম আসতেই মাঝিরা নৌকো সারানোর কাজ সেরে ফেলেন। কেননা, বর্ষায় জলমগ্ন শহরের বাসিন্দাদের যাতায়াতে নৌকোই একমাত্র ভরসা। তবে এ বার ছবিটা বদলানোয় চিন্তায় মাঝিরা।

প্রতি বছর জুন মাস থেকেই ঘাটালের শিলাবতী, কংসাবতী, ঝুমি নদীতে জল বাড়ে। পাশাপাশি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া জেলায় ভারী বৃষ্টির দরুণ মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে জল ছাড়লে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। গত বছরও ঘাটাল মহকুমার একাধিক ব্লকের বহু পঞ্চায়েত-সহ ঘাটাল শহরের অধিকাংশ এলাকা বন্যায় ডুবে যায়। জলমগ্ন হয়ে পড়ে ঘাটাল শহরের রাস্তা। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু ঘরবাড়ি। এবারে এখনও পর্যাপ্ত বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে জলের অভাবে ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় এখনও হয়নি ধান রোওয়ার কাজ। ফলে অনেকক্ষেত্রে শ্যালো চালিয়েই চলছে চাষের কাজ।

অন্য বছর, বর্ষার কয়েকমাসে ঘাটালের বাসিন্দাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে ভাল টাকা রোজগার করেন মাঝিরা। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বন্যার সময় ঘাটাল শহর-সহ ব্লকের দশটি পঞ্চায়েত ও মহকুমার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত ভাবে একশোরও বেশি নৌকা চলে। ঘাটাল ব্লক বিপর্যয় মোকাবিলা আধিকারিক তরুণকুমার কারক বলেন, “ঘাটালে বড় বন্যা হলে শহরেই ৫০টি বেশি সরকারি নৌকা দেওয়া হয়। এছাড়াও অনেক বেসরকারি নৌকোও চলে। বাকি পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে একশোরও বেশি নৌকো ভাড়া করা হয়।” সব মিলিয়ে নৌকোর সংখ্যা তিনশোরও বেশি। একটি নৌকোর সঙ্গে সর্বনিম্ন পাঁচ জন করে যুক্ত থাকেন। নৌকোর মালিকের সঙ্গে দৈনিক চুক্তিতে মাঝিরা নৌকো ভাড়া নেন। অন্য বছর এই সময় দিনে দুই-চার হাজার টাকা আয় হয়। গোটা বর্ষার মরসুমে এক একজন মাঝি প্রায় ২০-৩০ হাজার টাকা আয় করেন। তবে এ বার এখনও আয়ের পথ না খোলায় মাঝিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।

ঘাটালের গঙ্গাপ্রসাদ, মনসুকা, দেওয়ানচক, অজবনগর, চাউলি, সিংহপুর প্রভৃতি এলাকাতেই বেশিরভাগ নৌকা রয়েছে। ঘাটালের গঙ্গাপ্রসাদের এক প্রবীণ নৌকা মালিক দিলীপ সামন্ত বলেন, “আমি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। বন্যা কতবার হবে ও তা ছোট না বড়, তার উপর রোজগার নির্ভর করে। প্রতি বছর সব খরচ বাদ দিয়েও সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা রোজগার হয়। কোনও কোনও বছর আয় আরও বেশি হয়।” অজবনগরের আর এক নৌকো ব্যবসায়ী অমিত দোলই বলেন, “বন্যা হোক, আমরা চাই না। কিন্তু না চাইলেও তো ঘাটালে বন্যা হয়। তাই নৌকোর ব্যবসা করেই এতদিন আমাদের চলছে। বর্ষায় নৌকো ব্যবসায় ভাল আয় হয়। ছ’মাসের সংসারের খরচ উঠে যায়।”

নৌকোগুলিতে প্রতি বছর অনেকে কাজ পান। ফলে তাঁরা এই সময় ভাল আয়ের মুখ দেখেন। ওই গ্রামেরই এক যুবক প্রশান্ত সিংহরায় বলেন, “আমি বন্যার সময় কোনও না কোনও নৌকাতে কাজ করি। আমার কাজ মূলত মোটরবাইক-সহ মালপত্র নৌকায় তোলা ও নামিয়ে দেওয়া। প্রতিদিন মালিক ২৫০ টাকা করে দেয়। তাছাড়াও ভাল আয় হয়। এবারে যে কী হবে!”

ghatal flood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy