Advertisement
E-Paper

ভারী বৃষ্টির দেখা নেই, ধানের বীজতলা তৈরি করতে সমস্যা

বর্ষাকাল এসে গিয়েছে। তবে পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে খরিফ চাষের বীজতলা তৈরিতে সমস্যায় পড়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের কৃষকেরা। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এখনই বীজতলা তৈরির উপযুক্ত সময়। অন্য বছরগুলিতে এই সময় বেশিরভাগ এলাকায় ধানও রোয়া শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর জেলায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় বীজতলা ফেলেও চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন। আবার যাঁরা জলদি বীজতলা করে ধান লাগিয়ে ফেলেছেন, মাথায় হাত তাঁদেরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৪ ০১:৪৩
দাসপুরে ধানের বীজতলা তৈরির কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

দাসপুরে ধানের বীজতলা তৈরির কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

বর্ষাকাল এসে গিয়েছে। তবে পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে খরিফ চাষের বীজতলা তৈরিতে সমস্যায় পড়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের কৃষকেরা। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এখনই বীজতলা তৈরির উপযুক্ত সময়। অন্য বছরগুলিতে এই সময় বেশিরভাগ এলাকায় ধানও রোয়া শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর জেলায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় বীজতলা ফেলেও চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন। আবার যাঁরা জলদি বীজতলা করে ধান লাগিয়ে ফেলেছেন, মাথায় হাত তাঁদেরও। কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৯ বছরের গড় বৃষ্টিপাতের হিসাবে জুন মাস পর্যন্ত জেলায় ২৪ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। জেলা কৃষি দফতরের সহ-আধিকর্তা (তথ্য) দুলাল দাস অধিকারী বলেন, “আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ভারী বৃষ্টি না হলে জেলায় খরিফ চাষে সমস্যা দেখা দিবে॥”

স্থানীয় ও কৃষি দফতর সূত্রের খবর, খরিফ চাষ মূলত বৃষ্টি নির্ভর। সাধারণত মে ও জুন, এই দুই মাস বীজতলা তৈরির সময়। কেউ কেউ একটু দেরিতেও করেন। কিন্তু সরকারি ভাবে বীজতলা তৈরির সময় হল মে থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। খরিফ চাষের নিয়ম অনুযায়ী, বীজতলা তৈরির জন্য জমিকে উপযুক্ত করে ধান ছড়িয়ে দেওয়া হয়। শুকনো ও কাদা দু’ধরনের বীজতলা তৈরি হয়। ঝাড়গ্রাম-সহ জেলার উঁচু এলাকায় তৈরি হয় শুকনো বীজতলা। তুলনায় কম হলেও এই বীজতলা তৈরিতে জল লাগে। আর কাদা বীজতলা তৈরির জন্য জমিতে পরিমাণে বেশি জল প্রয়োজন। জেলা জুড়ে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় দু’ধরনের বীজতলা তৈরির কাজই মার খাচ্ছে। দাসপুরের চাষি জয়ন্ত সাঁতরা, ঘাটালের পরিমল কাঁঠাল, কেশপুরের সদরের শেখ নজরুলদের কথায়, “বৃষ্টি না হওয়ায় বীজতলা ঠিকমতো বাড়ছে না। জমি ফেটেও যাচ্ছে।”

কৃষি দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মোট চাষযোগ্য জমির পরিমাণ ৫ লক্ষ ৯৫ হাজার ২১০ হেক্টর। তার মধ্যে এ বার ৫ লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর জিতে খরিফ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। বাকি জমিতে ফুল, সব্জি-সহ অন্য চাষ হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ১ থেকে ১৫ অগস্ট পর্যন্ত ধান রোয়ার সময়। অনেক চাষিই অবশ্য সরকারি এই সময়সীমা না মেনে বীজতলা তৈরি থেকে ধান রোয়া, সব কাজ সেরে ফলেন। তাতে যদিও কোনও সমস্যা নেই। তবে এ বার যথেষ্ট বৃষ্টি না হওয়ায় বীজতলা তৈরিতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। জলাভাবে অনেক জায়গায় জমি ফেটে গিয়েছে, আবার অনেক জায়গায় বীজতলায় পাতা হলুদ ও লাল হয়ে গিয়েছে। রোয়া ধানে দেখা পোকার উপদ্রব দেখা দেওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

অনেকে আবার বীজতলার ব্যবসাও করেন। ছোট চাষিরা সকলে বীজতলা চাষ করেন না, বীজতলা কিনে ধান চাষ করেন। ফলে, জেলার বহু চাষিই বীজতলা চাষ করে ব্যবসা করেন। পরে সেই জমিতে তাঁরা সব্জি ফলান। বৃষ্টির অভাবে তাঁরাও এ বার বীজতলার জমি তৈরি করতে পারেননি। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, যে সব ব্লকে বিক্ষিপ্ত ভাবে ধান রোয়া হয়ে গিয়েছে, জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে সেখানেও। এই সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ পেতে জেলার সব চাষিই এখন ভারী বৃষ্টির অপেক্ষায়।

ghatal cultivation problems kharif crops insufficient rainfall
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy