Advertisement
১৯ মে ২০২৪

মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে, নয়াগ্রামে দাবি বিজেপির

জঙ্গলমহলে এখন ঘাসফুলের বদলে চারিদিকে পদ্মফুল ফুটছে। তাই তৃণমূলের নেতারা চোখে সর্ষেফুল দেখছেন। সেই কারণেই শাসক দলের নির্দেশে বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লকের বড়খাঁকড়ি অঞ্চলের থুরিয়া গ্রামে পাল্টা জনসভা করে এমনই দাবি করলেন বিজেপি নেতৃত্ব।

নয়াগ্রামের থুরিয়া গ্রামে বিজেপি-র মিছিল। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

নয়াগ্রামের থুরিয়া গ্রামে বিজেপি-র মিছিল। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৪ ০১:১৯
Share: Save:

জঙ্গলমহলে এখন ঘাসফুলের বদলে চারিদিকে পদ্মফুল ফুটছে। তাই তৃণমূলের নেতারা চোখে সর্ষেফুল দেখছেন। সেই কারণেই শাসক দলের নির্দেশে বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লকের বড়খাঁকড়ি অঞ্চলের থুরিয়া গ্রামে পাল্টা জনসভা করে এমনই দাবি করলেন বিজেপি নেতৃত্ব। সভার আগে টোটাসাই থেকে থুরিয়া পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের মিছিলে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এ দিন বিকেলে থুরিয়া প্রাথমিক স্কুল মাঠে আয়োজিত ওই সভায় ছিলেন বিজেপি-র নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি অর্ধেন্দু পাত্র, দলের ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটির সদস্য সুখেন্দু পাত্র, বিজেপি-র মেদিনীপুর শহর সভাপতি অরূপ দাস, বিজেপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা যুব মোর্চার সভাপতি শুভজিত্‌ রায়, ঝাড়গ্রাম জেলা যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সুমন সাহু প্রমুখ।

বিজেপি নেতারা একযোগে বলেন, “সারদায় গ্রামের মানুষকে সর্বস্বান্ত করেছে তৃণমূল। জঙ্গলমহলে শান্তি ও উন্নয়নের ভাঁওতা আমজনতা বুঝে গিয়েছেন। এখন ঘাসফুল শুকিয়ে গিয়ে চারিদিকে পদ্মফুল ফুটছে। আতঙ্কিত শাসক দল তাই পুলিশ দিয়ে মামলা সাজিয়ে বিরোধীদের জেলে পুরে রাখার চক্রান্ত করছে। সন্ত্রাস ও দলতন্ত্রে তৃণমূল সিপিএমকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে।” বিজেপি-র দাবি, এ দিন তৃণমূল ও সিপিএমের কয়েকশো প্রাক্তন কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেন।

বস্তুতপক্ষে, নয়াগ্রাম ব্লকে তৃণমূল ও বিজেপি-র মধ্যে রাজনৈতিক জমি দখলের লড়াই চলছে বেশ কিছু দিন ধরে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্লক তৃণমূলের একাংশ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তার পর থেকেই বিজেপি-র স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন মামলায় ধরপাকড়ের অভিযোগ উঠেছে। এলাকায় নিত্য সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় গত ১১ নভেম্বর থুরিয়া গ্রামে জনসভা করেছিল তৃণমূল। ওই সভায় তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায় ও নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত-রা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, জঙ্গলমহলে বিজেপি’কে কোনও মতেই মাথা তুলতে দেওয়া হবে না। বিজেপি-মাওবাদী সংশ্রবেরও অভিযোগ করেছিলেন দীনেনবাবুরা। তৃণমূলের ওই সভার দশদিন পরে থুরিয়া প্রাথমিক স্কুল মাঠে এ দিন বিজেপি-র পাল্টা সভাটি বিশেষ তাত্‌পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

বছর খানেক হল বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলা গঠিত হয়েছে। কিন্তু এ দিনের সভায় বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলার পাশাপাশি, দলের পশ্চিম মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার নেতারাও হাজির ছিলেন। এ প্রসঙ্গে বিজেপি-র নয়াগ্রাম ব্লক নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, এলাকার দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ফলে, অনেকেই সভায় হাজির থাকতে পারেন নি। সেই কারণে সভায় পশ্চিম মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বজেপি-র সভা প্রসঙ্গে তৃণমূলের নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, “এখানে বিজেপি-র কোনও সংগঠন নেই। ওরা সন্ত্রাস করে এলাকা দখল করতে চাইছে। কিছু সাজানো লোকজনকে নিয়ে ওরা দলে যোগদানের নাটক করছে।” উজ্জ্বলবাবুর অভিযোগ, “এ দিন সভা ফেরত বিজেপি-র লোকজন মলম অঞ্চলের চুনপুড়া গ্রামে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালায়। ওই তৃণমূল কর্মীর স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করা হয়।” যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nayagram bjp jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE