প্রায় তিন বছর পর এক সময়ের খাসতালুক, হলদিয়ার সুতাহাটায় সভা করলেন লক্ষ্মণ শেঠ। ইতিমধ্যে হলদি নদী দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল। তিনি সপার্ষদ সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের সিপিএমে বড়সড় ভাঙন ধরিয়ে গড়েছেন ‘ভারত নির্মাণ মঞ্চ’। পরে ‘ন্যাশনাল কনফেডারেসি অফ ইন্ডিয়া’ নামক রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েও বনিবনা না হওয়ায় ফের সপার্ষদ ফিরেছেন পুরানো মঞ্চে।
সেই ভারত নির্মাণ মঞ্চের আহ্বানে বৃহস্পতিবার হলদিয়ার সুতাহাটা সংলগ্ন চৈতন্যপুরে সভা করলেন লক্ষ্মণবাবু। সেখানে লক্ষ্মণবাবুর প্রায় দেড় ঘণ্টার বক্তব্যে এক সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর যেমন প্রশংসা করলেন, তেমনি মুণ্ডুপাত করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-সহ সিপিএম নেতৃত্বের। উন্নয়নের প্রশ্নে প্রশংসার সুর শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামেও।
ছ’সাতশো কর্মীর জমায়েতে সিপিএমের চিরাচরিত নীতির সমালোচনা করে বললেন, “আমেরিকাকে সাম্রাজ্যবাদী বলে চিত্কার করলে হবে না। গঠনমূলক সমালোচনা করতে হবে।” লক্ষ্মণবাবুর দাবি, “আলিমুদ্দিন এখন চাটুকার, স্তাবকদের হাতে রয়েছে।” পূর্ব মেদিনীপুরের সিপিএম নেতৃত্বকেও এক হাত নেন তিনি। বলেন, “সিপিএমের জেলা নেতারা ব্যাভিচারী, দুর্নীতিগ্রস্ত।”
নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের যাবতীয় দায় এ দিনও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর উপরেই চাপিয়েছেন লক্ষ্মণবাবু। তাঁর দাবি, “বুদ্ধবাবু আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাতে অপপ্রচার করেছেন। নন্দীগ্রামে কী করা হবে, তা নিয়ে জেলা পার্টি, হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদকেও অন্ধকারে রাখা হয়েছিল।” তাঁর হুঁশিয়ারি, “প্রয়োজনে ২০০৬ সালের ২৭ জুলাই রাজ্য-সালিম কী চুক্তি হয়েছিল, সেই নথি ফাঁস করে বুদ্ধবাবুদের মুখোশ খুলে দেব।” বুদ্ধবাবুকে ভীতু, কাপুরুষ বলেও কটাক্ষ করেন একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই সিপিএম নেতা।
পক্ষান্তরে প্রশংসা করলেন এক সময়ের প্রবল প্রতিপক্ষ শুভেন্দু অধিকারীর। লক্ষ্মণবাবুর কথায়, “শুভেন্দুবাবু আমাদের জেলে ঢোকানোর ব্যবস্থা করলেও তাঁর প্রশংসা করতে হয়। কেননা, তিনি আলাদা হলদিয়া পোর্ট ট্রাস্টের পক্ষে সওয়াল করেছেন।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসাও শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, “মোদী উন্নয়নের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছেন। কিন্তু, আরএসএস-বিশ্ব হিন্দু পরিষদ হিন্দুত্বের কথা বলে দেশ অশান্ত করতে চাইছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy