অর্পণ আদক। নিজস্ব চিত্র।
রেললাইনে দেহ মিলল মেদিনীপুর হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রের। মৃতের নাম অর্পণ আদক (২২)। বাড়ি বর্ধমানের জামালপুরের চকদিঘিতে। বুধবার রাতে মেদিনীপুর স্টেশনের অদূরে রেললাইন থেকে ওই ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে রেল পুলিশের অনুমান, চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন অর্পণ। রেল পুলিশের আইসি (খড়্গপুর) বিধান ভট্টাচার্য বলেন, “মেদিনীপুর থেকে এক ছাত্রের দেহ উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, ছাত্রটি আত্মহত্যাই করেছেন।” দেহ উদ্ধার করে রাতেই খড়্গপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে।
বুধবার ছিল বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। সে দিনই অর্পণের মতো মেধাবী ছাত্রের এই পরিণতিতে সকলেই বিস্মিত। এ দিন খড়্গপুরে এসেছিলেন অর্পণের বাবা অনেশ আদক। তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে পরশু দিন ফোনে ওর কথা হয়েছিল। হঠাত্ কী হল বুঝতে পারছি না।” মেদিনীপুর হোমিওপ্যাথি মেডিক্যালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চপলকান্তি ভট্টাচার্যের কথায়, “দুঃখজনক ঘটনা। অর্পণ খুব ভাল ছাত্র ছিল।”
এ দিন ময়নাতদন্তের পর ওই ছাত্রের দেহ মেদিনীপুর হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজে আনা হয়। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় জামালপুরের চকদিঘিতে। বৃহস্পতিবার দিনভর মেদিনীপুর হোমিওপ্যাথি মেডিক্যালে ছিল শোকের ছায়া। অর্পণ কলেজ হস্টেলেই থাকতেন। সেখানকার পরিবেশও ছিল থমথমে। হস্টেল সুপার শ্রীমন্ত সাহার কথায়, “অর্পণ কলেজের টপারও ছিল। বুধবার রাতে হস্টেলে ফেরেনি দেখে খোঁজ শুরু হয়। পরে জানা যায়, রেললাইনে দেহ পড়ে রয়েছে।”
ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ। মেদিনীপুর স্টেশনের অদূরে রাঙামাটি উড়ালপুল। এই উড়ালপুলের কাছেই স্থানীয় কয়েকজন রেললাইনে অর্পণের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি জানাজানি হতে এলাকায় ভিড় জমে যায়। ততক্ষণে কলেজের হস্টেলে অর্পণের খোঁজ শুরু হয়েছে। পরে তাঁর সহপাঠীরা এসে দেহ শনাক্ত করেন। কলেজের এক সূত্রে খবর, প্রণয়ঘটিত কারণে চতুর্থ বর্ষের এই ছাত্র মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। অনুমান, তার জেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।
লেখাপড়ায় মেধাবী হওয়ার পাশাপাশি অর্পণ ছিলেন মিশুকে। ছোট-বড় সকলের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল তাঁর। দিন কয়েক আগে কলেজে ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়। বুধবারও খেলা ছিল। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় কলেজ হস্টেল শোকস্তব্ধ। মন ভাল নেই সহপাঠীদেরও। অর্পণের ফেসবুক পেজের কভার ফোটোয় এখনও জ্বলজ্বল করছে একগুচ্ছ সাদা পায়রার ছবি। কী এমন হল, কেন তিনি এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না হোমিওপ্যাথি মেডিক্যালের শিক্ষক-চিকিত্সক থেকে তাঁর সহপাঠীরা, কেউই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy