তমলুকে সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেব।—নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের আগে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠকে বহিষ্কার করেছে সিপিএম। ভোট মিটতেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে দলের অন্দরে লক্ষ্মণ-অনুগামী হিসেবে পরিচিত বেশ কিছু নেতার বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতি জেলায় এসে ফের লক্ষ্মণ-গোষ্ঠীকে সতর্ক করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব।
রবিবার তমলুকে সিপিএম জেলা কার্যালয়ে দলীয় সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র ও রবীনবাবু। সূর্যকান্তবাবু মূলত লোকসভা নির্বাচনে দলের ফলাফল পর্যালোচনা করলেও রবীনবাবু লক্ষ্মণবাবুর না করেই বলেন, “লোকসভা ভোটের আগে দলবিরোধী কাজের দায়ে বহিষ্কৃত এক নেতার সঙ্গে দলের কিছু জেলা ও স্থানীয় নেতা যে ভাবে সম্পর্ক রেখে চলেছেন। এতে দলের শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছিল। কিছু নেতা গোপনে আমাদের দলের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো প্রার্থীকে সাহায্য করেছেন।” এই ধরনের কাজে যুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক নিয়ম মেনেই দল ব্যবস্থা নেবে বলে জানান রবীনবাবু।
ইতিমধ্যে লক্ষ্মণ-অনুগামী হিসেবে পরিচিত দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর চার সদস্যকে সাসপেন্ড করেছে সিপিএমের রাজ্য কমিটি। বহিষ্কার করা হয়েছে লক্ষ্মণ-ঘনিষ্ঠ জেলা কমিটির এক সদস্যকে। এই পরিস্থিতিতে রবীনবাবুর বার্তা লক্ষ্মণ-গোষ্ঠীর কাছে হুঁশিয়ারি বলেই মনে করা হচ্ছে। নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় অভিযুক্ত লক্ষ্মণবাবু-সহ অন্য সিপিএম নেতাদের প্রসঙ্গ তুলে রবীনবাবু এ দিন আরও জানান, মামলার বাইরে লক্ষ্মণবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা বাঞ্ছনীয় নয়। মামলার অজুহাতে কেউ তাঁর সঙ্গে ধারাবাহিক যোগাযোগ রেখে উপদল তৈরির চেষ্টা করলে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লক্ষ্মণ শেঠের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে গঠিত দলের তদন্ত কমিটির সদস্যরা গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তমলুকে জেলা কার্যালয়ে এসে হেনস্থা হন। সেই ঘটনায় সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব সম্প্রতি যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে তা নিয়ে রবীনবাবু এ দিন বলেন, “যারা দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, তাদের শুনানিতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই পদক্ষেপ করা হয়েছে।” ইতিমধ্যে দলের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে গত বৃহস্পতিবার দলের জেলা সম্পাদক প্রশান্ত প্রধানকে চিঠি দিয়েছেন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা লক্ষ্মণ-জায়া তমালিকা পন্ডা শেঠ। বৃহস্পতিবার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় অনুপস্থিতও ছিলেন তমালিকাদেবী। এ দিনের সভাতেও গরহাজির ছিলেন ছিলেন।
এ দিনের সভায় সিপিএমের প্রায় বারোশো সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তিনতলা জেলা কার্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ভাগাভাগি করে তাঁদের বসার ব্যবস্থা হয়। সকলে যাতে আলোচনা শুনতে পারেন, সে জন্য ছিল জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy