Advertisement
E-Paper

লক্ষ্য স্বচ্ছতা, ভাল কাজে পুরস্কার ভূমি দফতরের

ভাল কাজ করলেই মিলবে পুরস্কার। রীতিমতো অনুষ্ঠান করে সকলের সামনে পুরস্কার দেওয়া হবে। দুর্নীতি বন্ধ করে স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত গতিতে কাজের লক্ষ্যে এই প্রক্রিয়া চালু করল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। ইতিমধ্যেই দ্রুত নামপত্তন (মিউটেশন) করার ক্ষেত্রে সাফল্যের শীর্ষে থাকা ৯ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।

সুমন ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৫৭

ভাল কাজ করলেই মিলবে পুরস্কার। রীতিমতো অনুষ্ঠান করে সকলের সামনে পুরস্কার দেওয়া হবে। দুর্নীতি বন্ধ করে স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত গতিতে কাজের লক্ষ্যে এই প্রক্রিয়া চালু করল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। ইতিমধ্যেই দ্রুত নামপত্তন (মিউটেশন) করার ক্ষেত্রে সাফল্যের শীর্ষে থাকা ৯ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আগামীতে শুধু নামপত্তন নয়, খাজনা আদায় এবং নিজ গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্প রূপায়ণে যে সব ব্লক ভাল কাজ করবে তাদেরও পুরস্কৃত করা হবে।

ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে ‘ঘুঘুর বাসা’ ভাঙতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বার থেকে মুহুরির মাধ্যমে কোনও আবেদন জমা দেওয়া যাবে না। জমির মালিক বা তাঁর মনোনীত ব্যক্তিকে লিখিত অনুমতি দিয়ে পাঠালে তবেই তাঁর হাত থেকে আবেদন নেওয়া হবে। মোহরারদের অফিসের ভেতরে ঢোকার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কেউ মোহরারের সাহায্য নিতে চাইলে তিনি বাইরে থেকে তা নিতে পারেন। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অরিন্দম দত্ত বলেন, “স্বচ্ছতা বজায় রেখে দ্রুত গতিতে কাজের লক্ষ্যেই পুরস্কার চালু করা হয়েছে। একই কারণে মুহুরিদের অফিস চত্বরে বসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রায়ত নিজে আবেদনপত্র জমা দেবে। অসুবিধে হল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাবেন। কোনও সমস্যা হবে না।”

একটি প্রশ্ন অবশ্য থেকেই যাচ্ছে। নামপত্তন বা জমির চরিত্র পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আবেদনপত্র পূরণ করতে হয়। সেই আবেদনপত্র নিতে হয় মুহুরির কাছ থেকেই। সরকারিভাবে তা দেওয়া হয় না। তাহলে এই নিয়ম চালু করেই কী লাভ হল? জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক বলেন, “ইতিমধ্যে আমরা আবেদনপত্র ছাপাতে দিয়েছি। তা প্রতিটি ব্লক ভূমি-ভূমি সংস্কার অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেখান থেকে নিখরচায় আবেদনপত্র পাবেন জমির মালিকেরা।”

নামপত্তনের ক্ষেত্রে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের বিরুদ্ধে টালবাহানার অভিযোগ ছিল দীর্ঘ দিন ধরে। অবৈধ আর্থিক লেনদেনেরও অভিযোগ ওঠে। বছরের পর বছর ঘুরেও জমির মিউটেশন করতে না পারায় ক্ষোভ বাড়ছিল। সমস্যা সমাধানে প্রত্যেক আধিকারিককে নামপত্তনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে দেয় ভূমি দফতর। তাতে সুরাহাও হয়েছে। জেলায় এখন আর নামপত্তনের পাহাড়প্রমাণ আবেদনপত্র জমা পড়ে নেই। আগে যেখানে লক্ষাধিক আবেদন জমা থাকত, এখন তা নেমে হয়েছে হাজার কুড়ি-পঁচিশে। আর ব্লকের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ২০-২৫ থেকে বড়জোর ১০০-২০০। শুধু সবং ও চন্দ্রকোনা-১ ব্লকে এখনও বেশ কিছু আবেদনপত্র জমে রয়েছে। দু’-তিন মাসে সেখানেও পরিস্থিতি বদলাবে বলে আশা দফতরের। নামপত্তনের ক্ষেত্রে ভাল কাজ করার জন্য ভূমি দফতর ৯ জনকে পুরস্কৃত করেছে। এ ক্ষেত্রে সাফল্যের শীর্ষে রয়েছেন মেদিনীপুর সদর মহকুমার তিন আধিকারিক হীরক বিশ্বাস, নিউটন রায় ও বিজন দেবনাথ। এঁদের প্রত্যেকে দুই থেকে আড়াই হাজার জনের মিউটেশন করেছেন। এক হাজার থেকে সাড়ে সতেরোশো পর্যন্ত নামপত্তন করায় বাকি যে ৬ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে, তাঁরা হলেন পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়, সরোজ নন্দী, বিক্রম মুখোপাধ্যায়, প্রণব সাঁতরা, চিন্ময় কর ও মণীন্দ্রনাথ ঘোষ। সম্প্রতি প্রত্যেককেই স্মারক ও শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। উৎসাহে যাতে ভাটা না পড়ে সে জন্য আরও তিনটি ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। নামপত্তন ও জমির চরিত্র পরিবর্তন, খাজনা আদায় এবং নিজ গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্প রূপায়ণের মাপকাঠিতে জেলার তিনটি ব্লককে পুরস্কৃত করা হবে।

যাতে জটিলতা না হয়, সে জন্য কয়েকটি বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। রায়তকে নিজে বা তাঁর লিখিত অনুমতি রয়েছে এমন কারও মাধ্যমে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে, মুহুরির মাধ্যমে দেওয়া যাবে না। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা রেজিস্ট্রারে তুলে স্লিপ দিয়ে দেওয়া হবে। একজন একাধিক আবেদন জমা দিতে পারবেন না। নামপত্তন বা জমির চরিত্র পরিবর্তনের আবেদনপত্রও কিছুদিনের মধ্যেই অফিস থেকেই দেওয়া হবে। নতুন পদ্ধতিতে অফিসের কোন কর্মী বা আধিকারিক টাকার বিনিময়ে কাজ করলে তা সহজেই চিহ্নিত করা যাবে।

নয়া পদ্ধতিতে সঠিক ভাবে কাজ হচ্ছে কিনা, তা দেখতে জেলা স্তরের আধিকারিকেরা আচমকা পরিদর্শনও চালাবেন। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “দফতরের সব আধিকারিক তো খারাপ হতে পারে না। গুটিকয় খারাপ কর্মী-আধিকারিকের জন্য সবাইকে খারাপ চোখে দেখা হয়। এ বার যে পদ্ধতিতে কাজ করার পরিকল্পনা হয়েছে, তাতে ইচ্ছে থাকলেও সহজে কেউ অসাধু উপায় অবলম্বন করতে পারবেন না।”

transperancy land revenue department reward
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy