শিক্ষাঙ্গনে বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে একাধিকবার সরব হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। সে নিষেধাজ্ঞায় অবশ্য কখনই ঠেকিয়ে রাখা যায়নি তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে। এ বার সেই তালিকায় যোগ হল তমলুকের নাম।
মঙ্গলবার তমলুকের তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির শিক্ষাকর্মী প্রতিনিধি নির্বাচনের দিনে কলেজের মধ্যে ঢুকে নিজেদের দাপট দেখাল শ’খানেক টিএমসিপি-র সমর্থক। গণ্ডগোলের আশঙ্কায় কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য আগে থেকেই পুলিশি সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। সেই মতো কলেজের প্রবেশ পথের সামনে র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল। অভিযোগ, উপস্থিত পুলিশ বাহিনীকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই কলেজে ঢোকে টিমসিপি-র সমর্থকেরা। সঙ্গে ছিল বেশ কিছু বহিরাগতও তৃণমূল কর্মীও।
অভিযোগ, তৃণমূলেরই একাংশ শিক্ষাকর্মীকে ‘আটকাতে’ ওই জমায়েত করে অন্য গোষ্ঠী। দলেরই একাংশের প্রতিরোধের মুখে এ দিন অন্য অনেকের মতোই (৩২ জন অশিক্ষক কর্মীর মধ্যে এসেছিলেন অর্ধেক) আর কলেজে আসতে পারেননি কলেজের শিক্ষাকর্মী কালীপদ সামন্ত। তাঁর-স্ত্রী পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর চামেলি সামন্ত। কলেজের ঠিক উত্তর দিকেই বাড়ি তাঁদের। চামেলীদেবীর অভিযোগ, স্বামীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দেওয়ার জন্য টিএমসিপি-র তমলুক কলেজ ইউনিট সভাপতি সৌমেন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে হামলা-ও চালানো হয়েছে। সামন্ত-দম্পতির অভিযোগ, সোমবার রাতে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয় কিছু তৃণমূল সমর্থক। ভোটের দিন, মঙ্গলবার সকালেও তাঁদের বাড়িতে ঢুকে দু’টি মোটর বাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। কালীপদ সামন্ত-র অভিযোগ, “নির্বাচনে আমরা যাতে যোগ দিতে না-পারি সে জন্য সোমবার রাতে আমার বাড়ির সামনে সৌমেন চক্রবর্তী দলবল নিয়ে গিয়ে হুমকি দিয়েছিল।” কলেজ ইউনিট সভাপতি সৌমেন এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিন সকাল পৌনে দশটা নাগাদ কলেজের সামনে গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশ পথে রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। কলেজের ভিতরে রয়েছে র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স। বাইরে ভিড় করে প্রায় শ’খানেক টিএমসিপি সমর্থক। পুলিশ তাঁদের প্রথমে ভিতরে ঢুকতে না-দিলেও সকাল সোওয়া ১০টা নাগাদ কলেজের টিচার ইন চার্জ আসার পরেই হুড়মুড়িয়ে ভিতরে ঢুকে যান তৃণমূল সমর্থকেরা। অভিযোগ, এঁদের অধিকাংশই বহিরাগত।
এরপরেই ভিতরে থাকা পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে টিএমসিপি সমর্থকরা কটূক্তি করে বলে অভিযোগ। দুপুর একটা নাগাদ কলেজের শিক্ষাকর্মী প্রতিনিধি নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন অশোক শেঠ ও মনোরঞ্জন কর। কিন্তু, পরিচালন সমিতির শিক্ষাকর্মী প্রতিনিধি নির্বাচনে উপস্থিতির হার অর্ধেক কেন? টিচার ইন চার্জ তন্ময় সামন্ত বলেন, “কলেজের শিক্ষাকর্মীদের একটি সংগঠন নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। তাই পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিলাম। তা সত্বেও কেন তাঁরা অনুপস্থিত হলেন জানি না।”
আর, ক্লাস ছুটি থাকা সত্বেও ক্যাম্পাসের ভিতরে এত বহিরাগত ঢুকল কী করে? তন্ময়বাবুর সাফাই, “কলেজে কোনও বহিরাগত ঢোকেনি। এ দিন ক্লাস না-হলেও অনেক ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষকদের দেখা করতে এসেছিল। তাঁরাই কলেজে ছিলেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy