Advertisement
E-Paper

স্কুল থেকে প্রশ্ন চুরি, স্থগিত রইল টেস্ট পরীক্ষা

স্কুল থেকে প্রশ্নপত্র চুরি যাওয়ায় স্থগিত হয়ে গেল টেস্ট পরীক্ষা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় শালবনি থানার সাতপাটিতে। বুধবার রাতে কে বা কারা স্কুলে ঢুকে স্টাফরুমের আলমারি ভেঙে প্রশ্নপত্র চুরি করে পালায়। বৃহস্পতিবার ঘটনার কথা জানাজানি হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২২
শালবনির সাতপাটি স্কুলে চুরির পর। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

শালবনির সাতপাটি স্কুলে চুরির পর। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

স্কুল থেকে প্রশ্নপত্র চুরি যাওয়ায় স্থগিত হয়ে গেল টেস্ট পরীক্ষা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় শালবনি থানার সাতপাটিতে। বুধবার রাতে কে বা কারা স্কুলে ঢুকে স্টাফরুমের আলমারি ভেঙে প্রশ্নপত্র চুরি করে পালায়। বৃহস্পতিবার ঘটনার কথা জানাজানি হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে জানান। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

ঘটনাটি ঠিক কী?

বুধবার থেকে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ছিল ইংরেজি পরীক্ষা। শালবনি থানার গৌতম স্মৃতি সাতপাটি বীণাপানি বিদ্যামন্দিরে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার পাশাপাশি নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষাও চলছিল। ইংরেজি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র রাখা ছিল স্কুলেরই স্টাফরুমের আলমারিতে। এ দিন পরীক্ষা শুরুর আগে স্টাফরুমের দরজা খুলতে গিয়ে শিক্ষাকর্মী দীপক বিশুই দেখেন, দরজার তালা খোলা, আলমারি ভাঙা। কিছু প্রশ্ন আলমারির সামনে ছড়িয়ে পড়ে! বিষয়টি প্রধান শিক্ষক চণ্ডীদাস দে-সহ অন্য শিক্ষকদের নজরে আনেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ইংরেজি পরীক্ষা এ দিনের মতো স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ। এক সহ-শিক্ষকের কথায়, “অন্য কোনও উপায়ও ছিল না। চুরি যাওয়া প্রশ্নপত্র তো কোনও পরীক্ষার্থীর হাতেও পৌঁছতে পারে।”

ঘটনায় কয়েক জন ছাত্রের জড়িত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কেন? স্কুল সূত্রে খবর, বুধবার দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা পরীক্ষায় নকল করার সময় এক ছাত্র ধরা পড়ে। ওই ছাত্রের সঙ্গে পরীক্ষা হলের দায়িত্বে থাকা সহ-শিক্ষকের বচসাও হয়। পরে কয়েকজন সহ-শিক্ষক এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। বচসা চলাকালীন ছাত্রটি ‘দেখে নেওয়ারও’ হুমকি দিয়েছিল। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার সকালে স্টাফরুমে ঢুকে সহ-শিক্ষকেরা এও দেখেন, একটি বোর্ডে লেখা রয়েছে, ‘পাশ কারেত হবে। না হলে কপালে দুঃখ আছে। আবার ভাঙা হবে।’

এ দিন শিক্ষাকর্মী দীপকবাবু বলেন, “চাবি দিয়ে তালা খোলা হয়নি। দেখে মনে হচ্ছে, তালা ভেঙে রাতের বেলায় কেউ বা কারা স্টাফরুমে ঢুকেছে।” প্রধান শিক্ষক চণ্ডীদাস দে বলেন, “পুরো বিষয়টিই পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ দেখুক।”

সাতপাটি হাইস্কুলে নবম, দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় চারশো। এ দিন স্কুল খোলার পর থেকেই পরীক্ষার্থীরা আসতে শুরু করে। পরে অবশ্য তাদের জানানো হয়, ইংরেজী পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। অগত্যা, সকলকেই বাড়ি ফিরতে হয়। সাতপাটি হাইস্কুলে ডব্লুবিটিএ এবং ডব্লুবিটিএসটিএ এই দু’টি সংগঠনের প্রশ্নপত্র ছিল। এই দুই সংগঠনের নেতা শঙ্কর মাঝি এবং রাজীব মান্নার মতে, “প্রশ্নপত্র রাখার ক্ষেত্রে স্কুল- কর্তৃপক্ষেরওসতর্ক হওয়া উচিত।”

এক্ষেত্রে ওই প্রশ্নপত্রের সেটে অন্য যে সমস্ত স্কুলে পরীক্ষা হয়েছে, সেই স্কুলগুলিতেও কী পরীক্ষা বাতিল করা হবে? শঙ্করবাবু ও রাজীববাবুর মতে, “এক্ষুনি পরীক্ষা বাতিল করা হচ্ছে না। আমরা স্কুলগুলিকে জানিয়েছি, তারা যদি এবিষয়ে কিছু জানতে পারে, যে ওই চুরি যাওয়া প্রশ্নপত্র তাদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হাতে পৌঁছেছে। তবে বিষয়টি আমাদের জানাতে বলা হয়েছে। পরে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।”

পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতীদেবী বলেন, “বৃহস্পতিবার ওই স্কুলে পরীক্ষা স্থগিত ছিল বলে শুনেছি। স্কুল-কর্তৃপক্ষ মনে করেছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছে, তাই পরীক্ষা স্থগিত রেখেছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপই করা হচ্ছে।”

shalbani satpati school question paper missing test exam hold on
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy