Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

স্টেশনে ক্যাটারিংয়ে দুর্নীতির নালিশ, বিক্ষোভ ভেন্ডরদের

রেল স্টেশনের ক্যাটারিং পরিষেবায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাল কংগ্রেস ও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা। সোমবার খড়্গপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ভেন্ডর এজেন্টদের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র নেতা দেবাশিস চৌধুরী এবং আইএনটিইউসি-র নেতা অরবিন্দ পাণ্ডে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ঠিকাদার সংস্থার অধীনে চলা এই স্টেশনের ভেন্ডরেরা আট বছরের বকেয়া কমিশন পায়নি। ফলে এজেন্টদের নিজের পয়সা খরচ করেই বিদ্যুতের বিল মেটাতে হচ্ছে। সব কিছু জেনেও নির্বিকার রেল কর্তৃপক্ষ।

খড়্গপুরে ভেন্ডরদের বিক্ষোভ

খড়্গপুরে ভেন্ডরদের বিক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৩৫
Share: Save:

রেল স্টেশনের ক্যাটারিং পরিষেবায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাল কংগ্রেস ও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা। সোমবার খড়্গপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ভেন্ডর এজেন্টদের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র নেতা দেবাশিস চৌধুরী এবং আইএনটিইউসি-র নেতা অরবিন্দ পাণ্ডে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ঠিকাদার সংস্থার অধীনে চলা এই স্টেশনের ভেন্ডরেরা আট বছরের বকেয়া কমিশন পায়নি। ফলে এজেন্টদের নিজের পয়সা খরচ করেই বিদ্যুতের বিল মেটাতে হচ্ছে। সব কিছু জেনেও নির্বিকার রেল কর্তৃপক্ষ। খড়্গপুরের ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।”

খড়্গপুর রেল স্টেশনে বড় স্টল, গুমটি ও ট্রলি মিলিয়ে প্রায় ৬২টি খাওয়ার ও পানীয়ের দোকান রয়েছে। এগুলির মধ্যে ৩৪টি ট্রলি ও ৮টি স্টল একটি ঠিকাদার সংস্থার অধীনে রয়েছে। তবে ওই ঠিকাদার সংস্থা ভেন্ডর দিয়েই তাঁদের এই স্টল ও ট্রলিগুলি পরিচালনা করেন। অনেকক্ষেত্রে ঠিকাদার সরাসরি কর্মী নিয়োগ করেও ক্যাটারিং পরিষেবা চালান। ভেন্ডরদের অভিযোগ, ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত রেলের সঙ্গে চুক্তি থাকা সত্ত্বেও তাঁদের কমিশনের টাকা দেয়নি ওই ঠিকাদার সংস্থা। এক্ষেত্রে প্রধান নিয়োগকারী সংস্থা হিসেবে রেল কর্তৃপক্ষও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ২০০৯-২০১৪ সাল পর্যন্ত চুক্তি না থাকলেও রেলের লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করে চলা ওই ঠিকাদার বিদ্যুৎ বিল জমা না দিয়ে এজেন্টদের দিকে দায় ঠেলে দিয়েছে বলেও অভিযোগ। যদিও ভেন্ডরদের দাবি, ওই বিদ্যুৎ বিল মেটানোর দায়িত্ব ঠিকাদার সংস্থারই। রেল স্টেশনের এক ভেন্ডর তপন ভদ্র বলেন, “২০০৯ সাল পর্যন্ত ওই ঠিকাদারের অধীনে কাজ করে এখনও টাকা পাইনি। বহু বার রেলকে জানিয়েও লাভ হয়নি। তাই ২০০৯ সালের পরে অন্য ঠিকাদারের অধীনে গিয়েছি।” আবার ওই ঠিকাদার সংস্থার অধীনে কর্মরত কানু দাস বলেন, “আগের টাকা তো পাইনি। সেই টাকা পাওয়ার আশায় এখনও কাজ করছি। তবে আমাদের রোজগারের টাকা থেকে বিদ্যুৎ বিল মেটাতে হচ্ছে। তাহলে আমাদের হাতে আর কী থাকবে!”

ভেন্ডর কর্মী ও এজেন্টদের একত্রিত করে এ দিন আইএনটিটিইউসি ও আইএনটিইউসি যৌথভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয়। স্টেশনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রায় এক ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখানোর পর স্টেশনের বাইরে বেরিয়ে আসেন নেতারা। এ দিন আইএনটিইউসি নেতা অরবিন্দ পাণ্ডে বলেন, “ওই ভেন্ডরেরা দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। ওই ঠিকাদার সংস্থা তাঁদের আর্থিক দিক দিয়ে বঞ্চিত করে চলেছেন। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হলেও এখনও ওই সংস্থা দুর্নীতি করে কাজ চালাচ্ছে। আর এসবে প্রশ্রয় দিচ্ছে রেল। তাই রেলের বিরুদ্ধে আমাদের এই আন্দোলন।” কিন্তু তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে জোট বেঁধে আন্দোলনে কেন? অরবিন্দবাবুর জবাব, “নৈতিক লড়াইয়ে তৃণমূলও আমাদের মতো ওই ভেন্ডরদের এজেন্ট কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাই আমরা একজোট হয়ে এই দুর্নীতির প্রতিবাদ জানাতে চাইছি।”

আইএনটিটিইউসি নেতা দেবাশিস চৌধুরীও বলেন, “এখানে ভেন্ডরদের রুটিরুজির স্বার্থে লড়াই। একসময়ে এআইটিইউসি ও সিপিআইয়ের মদতে ঠিকদার দুর্নীতি চালিয়ে গিয়েছে। এখন মেয়াদ শেষেও রেল তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।” ওই ঠিকাদার সংস্থার মালিক কে আর শ্রীনিবাস বলেন, “২০০১-২০০৯ সাল পর্যন্ত বকেয়া টাকার বিষয়ে শ্রম আদালতে মামলা চলছে। ২০০৯ সালের পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ বিল মেটানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আর ২০১৪ সালে ব্যবসার মেয়াদ শেষ হওয়ার অভিযোগ নিয়ে কিছু বলব না। এ বিষয়ে মামলা চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kharagpur catering services corruption vendors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE