Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

স্নাতকোত্তরে ভর্তির দায়িত্বও এ বার কলেজের

কলেজে চালু হওয়া স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে ভর্তির দায়িত্বও তুলে দেওয়া হল কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে। এত দিন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলির স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন জানালেই চলত। ২০১৪-নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে এ বার থেকে ছাত্রছাত্রীদের যে সকল কলেজে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ার সুযোগ রয়েছে, সেখানে গিয়েই আবেদন জানাতে হবে।

সুমন ঘোষ
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৪ ০১:১৬
Share: Save:

কলেজে চালু হওয়া স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে ভর্তির দায়িত্বও তুলে দেওয়া হল কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে।

এত দিন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলির স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন জানালেই চলত। ২০১৪-নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে এ বার থেকে ছাত্রছাত্রীদের যে সকল কলেজে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ার সুযোগ রয়েছে, সেখানে গিয়েই আবেদন জানাতে হবে। বুধবারই এই সিদ্ধান্তের কথা পাকাপাকি ভাবে কলেজগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হল। কিছু দিনের মধ্যেই স্নাতকস্তরের পার্ট ৩-এর ফল প্রকাশিত হবে। তারপরেই এমএ, এমএসসিতে ভর্তি শুরু হবে। এ ব্যাপারে আগে থেকেই যাতে কলেজগুলি প্রস্তুত থাকতে পারে, সে জন্য বুধবার যে সমস্ত কলেজে স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম রয়েছে সেই কলেজের অধ্যক্ষদের বৈঠকে ডেকে এই কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।

দীর্ঘ ১২ বছর পরে এই সিদ্ধান্ত কেন? অনেকের মতে, কলেজে থাকা স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমেও ভর্তির রাশ শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের হাতে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপরে চাপ ছিল। সেই চাপ মেনেই কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। না হলে ২০০১ সালে মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ দিয়ে যে পাঠ্যক্রমের সূচনা হয়েছিল, যে পাঠ্যক্রমে এত দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতেই ভর্তির ক্ষমতা ছিল, হঠাৎ তা এত দিন পরে পরিবর্তন করা হল কেন?

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দী অবশ্য বলেন, “ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষেই এই সিদ্ধান্ত। কলেজগুলিও চাইছিল, ভর্তির ক্ষমতা তাঁদের হাতেই থাকুক। তা নিয়ে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কাউন্সিলে আলোচনার মাধ্যমেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

এতে কী আদৌ ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হবেন? এ ক্ষেত্রে অবশ্য সংশয় থেকেই যাচ্ছে। আগে স্নাতকোত্তরে ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আবেদন জানালেই চলত। এখান থেকেই মেধা তালিকা প্রকাশ হত। তাতেই বলা থাকত, কোন ছাত্র বা ছাত্রী কোন কলেজে ভর্তি হতে পারবেন। পরিবর্তে এ বার প্রতিটি কলেজে গিয়ে আবেদন জমা দিতে হবে। তার জন্য যেমন দীর্ঘ সময় ব্যয় হবে তেমনি ছাত্রছাত্রীদের খরচও বাড়বে।

স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম রয়েছে এমন এক অধ্যক্ষের কথায়, “এতে অসুবিধেই বেশি হল। এমনিতেই স্নাতক স্তরে ভর্তি নিয়ে হিমশিম খেতে হয়। তার উপর স্নাতকোত্তর স্তরের দায়িত্ব। আবার ছাত্র সংসদের চাপ! সব মিলিয়ে ঝামেলা আরও বাড়ল।”

আরও বেশি ছাত্রছাত্রী যাতে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পান, বাড়িতে থেকেই নিজের এলাকার কলেজে উচ্চশিক্ষা পেতে পারেন সেই লক্ষেই কলেজে কলেজে স্নাতকোত্তর স্তরের পাঠ্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০১ সালে মেদিনীপুর কলেজ দিয়ে এর সূচনা। বর্তমানে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১২টি কলেজে এই পাঠ্যক্রমের সুযোগ রয়েছে। সব কলেজ মিলিয়ে প্রায় সব বিভাগেই উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। যেখানে ভর্তির জন্য আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করলেই হত। এবার থেকে আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যাবে না। কিছু দিনের মধ্যেই স্নাতক স্তরের পার্ট-৩ এর ফল প্রকাশিত হবে। তারপরই স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির আবেদন জমা নেওয়া হবে। ফলে, এ বার কলেজে কলেজে ঘুরে ছাত্রছাত্রীদের জমা দিতে হবে ভর্তির আবেদনপত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

suman ghosh medinipur admission post graduation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE