চাপে পড়ে কেশিয়াড়ির সিপিএম নেত্রীকে মারধরের ঘটনায় মামলা রুজু করে তিন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার ধৃত তিনজনকে মেদিনীপুরের সিজেএম মঞ্জুশ্রী মণ্ডলের এজলাসে হাজির করা হয়। ধৃতদের মধ্যে দু’জনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। একজনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। তদন্তে সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার কেশিয়াড়ি থানার বাঘাস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের কালামেটিয়া এলাকার ঘটনা। ওই দিন তৃণমূলের লোকেদের হাতে প্রহৃত হন গুরুবারি মুর্মু নামে বছর চল্লিশের এক মহিলা। গুরুবারিদেবী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। পাশাপাশি, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কেশিয়াড়ি জোনাল কমিটির সহ সভানেত্রীও। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার পথেই তৃণমূলের একদল লোক তাঁর উপর আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। কোদাল-লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়। গুরুতর জখম হন তিনি। পরে তাঁকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও তিনি মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। তাঁর কয়েকবার অস্ত্রোপচার হয়েছে।
প্রহৃত দলীয় নেত্রীর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে সোমবার মেদিনীপুরে আসেন সিপিএমের মহিলা সংগঠন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সভানেত্রী তথা রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন মালিনী ভট্টাচার্য। তিনি জানিয়েছিলেন, ঘটনাটি ভয়ঙ্কর। আদিবাসী নেত্রীকে রাস্তায় আক্রমণ করা হয়েছে। পুলিশ এফআইআর করছে না। এটা গুরুতর ব্যাপার। জেলা পুলিশ যদি সক্রিয় না-হয় তাঁরা বিষয়টি রাজ্য পুলিশকে জানাবেন।
ঘটনাচক্রে, এরপরই তৎপর হয় পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ কেশিয়াড়ি থানাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন বলে পুলিশেরই এক সূত্রে খবর। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ মামলা রুজু করে। অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু হয়। মঙ্গলবার পুলিশের হাতে ধরা পড়েন সজল প্রধান, ইন্দ্র টুডু এবং ভানি টুডু। ধৃত তিনজনই এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। বুধবার ধৃত তিনজনকে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। ধৃতদের মধ্যে সজল এবং ইন্দ্রর ৫ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। ভানির ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে।
মেদিনীপুর আদালতের সরকারপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিব বলেন, “এক মহিলাকে মারধরের ঘটনায় কেশিয়াড়ি থানার পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের মধ্যে দু’জনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। একজনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে।” অন্যদিকে, তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য দাবি করেছেন, ধৃতেরা দলের সক্রিয় কর্মী নন। দলের কেশিয়াড়ি ব্লক সভাপতি জগদীশ দাস বলেন, “যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা দলের সক্রিয় কর্মী নন। তৃণমূলের সমর্থক হতে পারেন!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy