Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সন্ধ্যাদেবীকে ‘আন্তরিক’ অভ্যর্থনায় প্রস্তুত শহর

মেদিনীপুরে এসে ‘আন্তরিক’ অভ্যর্থনা পেতে চলেছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সন্ধ্যা রায়। শহরের রবীন্দ্রনগরে তাঁর জন্য বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। যে ফ্ল্যাটে বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে, সেই ফ্ল্যাটের নামই ‘আন্তরিক’। সব মিলিয়ে তিনটি ঘর। একটি একটু বড়। এই ঘরের দেওয়ালেই রয়েছে এলইডি। সামনে বসার জায়গা। ঘরটি বেশ সাজানো-গোছানো।

এই বাড়ির তৃতীয় তলায় থাকবেন সন্ধ্যা রায়। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

এই বাড়ির তৃতীয় তলায় থাকবেন সন্ধ্যা রায়। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৪ ০০:১৬
Share: Save:

মেদিনীপুরে এসে ‘আন্তরিক’ অভ্যর্থনা পেতে চলেছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সন্ধ্যা রায়।

শহরের রবীন্দ্রনগরে তাঁর জন্য বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। যে ফ্ল্যাটে বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে, সেই ফ্ল্যাটের নামই ‘আন্তরিক’। সব মিলিয়ে তিনটি ঘর। একটি একটু বড়। এই ঘরের দেওয়ালেই রয়েছে এলইডি। সামনে বসার জায়গা। ঘরটি বেশ সাজানো-গোছানো। এলইডি’র পাশে কয়েকটি ‘শো-পিস’। ফ্ল্যাটে এখন চারটি পরিবার থাকে। এই ফ্ল্যাটেই সন্ধ্যাদেবী থাকবেন জেনে উচ্ছ্বসিত আবাসিকরা। অভিনেত্রীকে কাছ থেকে দেখার জন্য দিন গুনতে শুরু করেছেন তাঁরা।

ফ্ল্যাটের বাসিন্দা জ্যোতিরাম মণ্ডল বলছিলেন, “ওঁনাকে সিনেমার পর্দায় দেখেছি। এ বার কাছ থেকে দেখার সুযোগ মিলবে।” কয়েক দিন আগেই তৃণমূলের কর্মিসভায় যোগ দিতে শহরে এসেছিলেন সন্ধ্যাদেবী। জ্যোতিরামবাবু ওই কর্মিসভাতেও গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “কর্মিসভায় গিয়ে সন্ধ্যাদেবীকে দেখেছি। এ বার উনি আমাদের ফ্ল্যাটেরই বাসিন্দা হতে চলেছেন। সত্যি, এটা একটা আলাদা অনুভূতি।” তবে শুধু ফ্ল্যাটের আবাসিকরা নন, একই রকম উচ্ছ্বসিত পাড়া-প্রতিবেশীরাও। ফ্ল্যাটের কাছেই থাকেন অঞ্জলি দাস, রমি দাসেরা। রমি বলছিলেন, “সন্ধ্যা রায় আমাদের প্রতিবেশী হতে চলেছেন, এটা ভাবতেই কেমন লাগছে।”

দলীয় সূত্রে খবর, মেদিনীপুরের প্রার্থী হিসেবে সন্ধ্যা রায়ের নাম ঘোষণা হওয়ার পরপরই রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে তাঁর জন্য ভাড়া বাড়ির খোঁজ শুরু করেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, জেলা সভাপতি দীনেন রায়েরা প্রাথমিক ভাবে দু’টি বাড়ি দেখেন। দু’টিই রবীন্দ্রনগর এলাকার। তবে, তাঁদের পছন্দের সঙ্গে অভিনেত্রীর পছন্দ মিলবে কি না, এ নিয়ে অবশ্য সংশয় ছিল নেতৃত্বের মধ্যেই। গত মঙ্গলবার স্টেডিয়ামের কর্মিসভা সেরে সার্কিট হাউসে ফেরেন সন্ধ্যাদেবী। এরপরই তাঁর পরিজনদের নিয়ে ‘আন্তরিক’-এ আসেন তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষেরা। বাড়িটি দেখে প্রাথমিক ভাবে পছন্দও হয়ে যায় পরিজনদের। পরে তাঁরা প্রদ্যোৎবাবুদের জানিয়ে দেন, সন্ধ্যাদেবী এই বাড়িটিতেই থাকবেন। অন্তত দু’মাসের জন্য বাড়িটি যেন ভাড়া নেওয়া হয়।

ঠিক কবে শহরে আসবেন সন্ধ্যাদেবী?

দলীয় সূত্রে খবর, আগামী মাসের গোড়ায় শহরে আসার কথা রয়েছে তাঁর। সম্ভবত ২ এপ্রিল তিনি এই বাড়িতে এসে উঠবেন। মাঝে তারকেশ্বর মন্দিরে গিয়ে পুজো দেওয়ারও কথা রয়েছে তাঁর। পুজো দেওয়ার পরও একবার শহরে আসতে পারেন। অবশ্য শহরে এলেও ওই দিনই তাঁর কলকাতায় ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী মাসের গোড়া থেকেই তিনি মেদিনীপুরে থাকবেন। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “শীঘ্রই সন্ধ্যাদি শহরে আসবেন। তাঁর জন্য বাড়ি ভাড়াও নেওয়া হয়েছে। তবে, আমাদের প্রচার থেমে নেই। বিভিন্ন এলাকায় সাংগঠনিক কাজকর্ম পুরোদমে চলছে।” ভোট মানেই দলের একগুচ্ছ কাজ। কর্মীদের হাজারো ব্যস্ততা। প্রার্থীর সঙ্গে কর্মীদের যোগাযোগ রেখে চলাটাও জরুরি। পরিস্থিতি দেখে ওই ফ্ল্যাটের একতলার একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে দলের নির্বাচনী কার্যালয়ও করেছে তৃণমূল। সন্ধ্যাদেবীর জন্য যে বাড়িটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে সেটি তিনতলায়। ফলে, প্রার্থী থাকবেন কর্মীদের নাগালেই।

রবিবার দুপুরে তৃণমূলের এই কার্যালয়ে গিয়ে চোখে পড়ল কর্মীদের ব্যস্ততা। ল্যাপটপ নিয়ে বসেছিলেন মহসিন খান। পাশে আলোচনা সারছিলেন রতন চক্রবর্তী, সুশোভন মাইতিরা। কী আলোচনা? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রার্থীর সমর্থনে কতগুলো পোস্টার ছাপানো হবে। তা নিয়েই আলোচনা। অন্য দিকে, তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা কার্যকরী সভাপতি মহসিন ল্যাপটপে দেখছিলেন কোন বিধানসভা এলাকায় কতগুলো বুথ রয়েছে। বুথপিছু ভোটার সংখ্যাই বা কত। মহসিন বলছিলেন, “মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন। মেদিনীপুর থেকে এ বার সন্ধ্যাদি বিপুল ভোটে জিতবেন।”

তারকা প্রার্থী। এতটুকুও সমস্যা হবে না? তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলছেন, “আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে ভোট হবে। মানুষ আর হিংসার রাজনীতি দেখতে চান না।” ইতিমধ্যে নির্বাচনী কার্যালয়ের দেওয়ালে দলনেত্রীর ছবিও রাখা হয়েছে। কর্মীদের বসার জন্য আপাতত আনা হয়েছে পঞ্চাশটি সবুজ চেয়ার। আনা হয়েছে একটি আলমারিও। যেখানে প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র থাকবে। তবে, এ সবকে ছাপিয়ে ‘সন্ধ্যা তারা’কে অভ্যর্থনা জানাতেই যেন তৈরি মেদিনীপুরের রবীন্দ্রনগর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

barun dey midnapore sandhya roy tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE