বাবা-মায়ের সঙ্গে অদ্রীশ। ছবি: আরিফ ইকবাল খান।
বাড়ির টিভি খারাপ। তাই এক আত্মীয়ের কাছ থেকে খবর পেয়েই সারা শরীরে কাঁপুনি লেগে গিয়েছিল। ভাল ফলের আশা ছিলই। কিন্তু রাজ্যে ষষ্ঠ! তবে পরের পর ফোন পেয়ে সম্বিৎ ফেরে তার। ততক্ষণে অবশ্য ফল নিয়ে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে হলদিয়া সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের ছাত্র অদ্রীশ পণ্ডা। পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের মেধা তালিকা অনুযায়ী তার স্থান দশম, প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৩।
আদতে নন্দীগ্রামের বাসিন্দা অদ্রীশের বাবা মানস পণ্ডা কর্মসূত্রে থাকেন হলদিয়া শহরে। তিনি হলদিয়া বন্দরের আধিকারিক। মা পুতুলদেবী গৃহবধূ। সুভাষচন্দ্র বসুকে জীবনের আদর্শ হিসেবে মানলেও চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণা করতে চায় অদ্রীশ। তার প্রিয় বিষয় জীবন বিজ্ঞান। পড়াশোনার বাইরে ক্রিকেট, ফুটবল ও সাঁতারে তার আগ্রহ। ভালবাসে গোয়েন্দা কাহিনী পড়তে। প্রিয় চরিত্র ফেলুদা ও ব্যোমকেশ।
বাবা-মার একমাত্র সন্তান অদ্রীশ ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভাল। বাড়িতে ঠাসা পুরস্কার। মানসবাবু জানান, নিয়ম মেনে নয়, অদ্রীশের যখনই ভাল লাগত তখনই বইখাতা নিয়ে পড়তে বসে যেত। তবে শুধু বিষয়ে আটকে না থেকে বরাবরই বিষয়ের গভীরে যাওয়ার আগ্রহ তার। তবে পরীক্ষার জন্য রাত দিন এক করে গত তিন মাস ধরে পড়াশোনা করেছে সে। পরীক্ষার জন্য চারজন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশোনা করেছে। অদ্রীশের বিষয়ভিত্তিক নম্বর বাংলা ৯১, ইংরেজি ৯৫, ভৌতবিজ্ঞান ৯৮, জীববিজ্ঞান ৯৯, গণিত ৯৮, ইতিহাস ৯৪ ও ভূগোলে ৯৮। তার গৃহশিক্ষক ছিলেন চারজন। স্কুলের টেস্টে সে পেয়েছিল ৬৩২। তার বাবা-মা জানান, আরও ভাল ফল করার জন্য দিন রাত পড়োশানা করেছে সে।
পরীক্ষার সার্বিক ফলে খুশি অদ্রীশ। কিন্তু গণিতে ১০০ নম্বর না পাওয়ায় মন খারাপ তার। ভবিষ্যতের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের প্রতি অদ্রীশের পরামর্শ, “শুধু মন দিয়ে পড়া নয়, লেখার মাধ্যমে তা অভ্যাস করতে হবে। বিষয়ের গভীরে ঢুকতে হবে। মানসিকতা এমন রাখতে হবে যেটুকু করব, সেটা যেন নিখুঁত হয়।” সফল হওয়ার থেকে সাফল্য ধরে রাখাই বেশি চ্যালেঞ্জের মনে করে অদ্রীশ। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে অদ্রীশের। স্কুলের মাধ্যমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষিকা ইলোরা চৌধুরী বলেন, “অদ্রীশ বরাবরই আত্মপ্রত্যয়ী, মেধাবী এবং অমায়িক। অদ্রীশ মাধ্যমিকে দশের একজন হয়েছে। আমরা চাই ও দেশের একজন হোক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy