গ্রাম সংসদ সভা ঘিরে অশান্তির জেরে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম হলেন দু’পক্ষের ছয় কর্মী-সমর্থক। মঙ্গলবার রাতে দাঁতন-২ ব্লকের তুরকা গ্রাম পঞ্চায়েতের খণ্ডরুই গ্রামের ঘটনা। বুধবার দলের আক্রান্ত কর্মী-সমর্থকদের দেখতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল হাসপাতালে যায় বিজেপির জেলা প্রতিনিধিদল। ঘটনার পর তৃণমূলের তরফ থেকে পুলিশে অভিযোগ জানানো হলেও বিজেপি কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই দাঁতন-২ ব্লকে তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দল রয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে খণ্ডরুই গ্রামের অনেকে আবার তৃণমূল ছেড়ে যোগ দেন বিজেপিতে। তুরকা গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। মঙ্গলবার তৃণমূলের ডাকা গ্রাম সংসদ সভায় হাজির ছিলেন তৃণমূল-বিজেপি দু’দলেরই কর্মী-সমর্থকরা। সেখানেই গ্রামের ইন্দিরা আবাস থেকে বিপিএলের সুযোগ সুবিধায় একাংশ গ্রামবাসী ক্রমাগত বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। সেই সময়ই কথা কাটাকাটি শুরু হয় তৃণমূল-বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। ভেস্তে যায় সভা।
মঙ্গলবার রাতে গ্রাম সংসদ সভার রেশ ধরেই ফের অশান্তি বাধে খণ্ডরুই গ্রামে। বিজেপির অভিযোগ, সেই সময় তৃণমূল কর্মীরা বিজেপি কর্মী প্রসূন পট্টনায়েকের ওপর হামলা চালায়। তখন বিজেপির পক্ষ থেকে পাল্টা প্রতিরোধ করা হয়। সংঘর্ষে জখম হন বিজেপির আরও তিনজন ও তৃণমূলের দু’জন। জখম প্রসূন পট্টনায়েক, তাঁর স্ত্রী সোমারাণি পট্টনায়েক, বিজেপি সমর্থক হরনারায়ণ পণ্ডাকে রাতেই বেলদা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার তাঁদের মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। তৃণমূলের জখম শেখ খালেককে এ দিনই এগরায় চিকিৎসা করানো হয়েছে বলে তৃণমূলের দাবি।
বুধবার বিজেপির জেলা কমিটির পক্ষ থেকে জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়, জেলা নেতা অরূপ দাস, জেলা কমিটির সদস্য সুকুমার ভুঁইয়া-সহ চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মেদিনীপুর মেডিক্যালে জখমদের সঙ্গে দেখা করতে যান। বুধবারই তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপির সাতজনের নামে দাঁতন থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তৃণমূলের দাঁতন-২ ব্লকের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক বলেন, “গ্রাম সংসদে অশান্তি করেছিল তৃণমূল থেকে কয়েকজন বহিষ্কৃত নেতা। তারাই আমাদের দলের কর্মীদের মারধর করে।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তথা জেলা কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “বিজেপি কর্মীরা মদ্যপ অবস্থায় গ্রাম সংসদে গিয়ে অভিযোগ জানানোর নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল। বিজেপির কাউকে মারধরে আমাদের দলের কর্মীরা জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেব।”
তবে এই সংঘর্ষের ঘটনার পর বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিজেপির পক্ষ থেকে পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “জেলায় আমাদের শক্তি বাড়ছে। আর সেটাই অস্বস্তির কারণ হচ্ছে তৃণমূলের। আগামী ২৪ নভেম্বর রাহুল সিংহের সভায় জেলার সমস্ত আক্রান্ত পরিবারদের হাজির করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy