সমবায় সপ্তাহ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
সমবায়ের ক্ষমতাকে স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবহার করার পরামর্শ দিলেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। এ রাজ্যের সমবায় আইনে আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার তুলনায় নির্বাচিত সমিতির গুরুত্বই বেশি। এই প্রসঙ্গে টেনেই শুভেন্দুর সতর্কবাণী, “ক্ষমতাকে স্বচ্ছতার সঙ্গে, পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে আমাদের ব্যবহার করতে হবে।” তৃণমূল সাংসদ একই সঙ্গে মেনে নিয়েছেন, কর্মহীন সকলকে চাকরি দেওয়া যায় না। বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমেই স্বনির্ভর হতে হবে। শুভেন্দুবাবুর কথায়, “আমি কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান। এই ব্যাঙ্ক থেকে কয়েক হাজার বেকারকে ঋণ দিয়ে গাড়ি ব্যবসা করিয়ে দাঁড় করিয়ে দিয়েছি। সবাইকে চাকরি দেওয়া যাবে না।” বিকল্প অর্থনীতিতে সমবায়ের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে বলেও মনে করিয়ে দেন তিনি।
এ দিন থেকেই শুরু হয়েছে ৬১ তম নিখিল ভারত সমবায় সপ্তাহ উদ্যাপন। চলবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত। এই উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শুক্রবার মেদিনীপুরে আসেন শুভেন্দুু। শহরের প্রদ্যোত্ স্মৃতি সদনে এ দিন আলোচনা চক্রের আয়োজন করেছিল বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক এবং পশ্চিম মেদিনীপুর রেঞ্জ সমবায় ইউনিয়ন। বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দুবাবু। ছিলেন ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর তথা জেলা পরিষদ মনোনীত প্রতিনিধি উত্তরা সিংহ, ডিরেক্টর তথা রাজ্য সরকার মনোনীত প্রতিনিধি প্রদ্যোত্ ঘোষ প্রমুখ। এ দিন বেসরকারি অর্থলগ্নি বিরুদ্ধেও সওয়াল করেন তমলুকের সাংসদ। তাঁর কথায়, “গত কয়েক কয়েক দশক ধরে চিটফান্ডগুলোর জন্য সমবায় ব্যবস্থা, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা একটা প্রশ্নচিহ্নের সামনে এসে দাঁড়িয়ে ছিল। সেই ২০১২ সাল থেকে বলে আসছি, চিটফান্ডে টাকা রাখবেন না। তখন সারদা নিয়ে হইচই শুরু হয়নি। একশো টাকা জমা রাখলে পনেরো মাসে ডবল, চল্লিশ টাকা এজেন্টের কমিশন, এটা কী ভাবে সম্ভব? কোনও অঙ্কেই সম্ভব নয়।” তাঁর পরামর্শ, “উদ্বৃত্ত টাকা রাখলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে রাখুন, ডাকঘরে রাখুন, আস্থা থাকলে সমবায় ব্যাঙ্কে রাখুন।”
সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে সমবায়গুলিকে উদ্যোগী হতে হবে বলেও জানান তিনি। তমলুকের তৃণমূল সাংসদ বলেন, “আমাদের দায়িত্ব ক্ষুদ্র চাষি, প্রান্তিক চাষি, পরিচারক থেকে শুরু করে খেতমজুর, ভ্যানচালক, হকার পর্যন্ত সকলকে সচেতন করা। তাঁদের বোঝানো, পাঁচ টাকা হোক, কুড়ি টাকা হোক, উদ্বৃত্ত টাকা যেন কেউ চিটফান্ডে না রাখেন।” বিদ্যাসাগর ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান আরও জানান, কৃষকদের প্রত্যাশা পূরণে এই ব্যাঙ্ক অঙ্গীকারবদ্ধ। ধুঁকতে থাকা সমবায় সমিতিগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের জিরো ব্যালান্স ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘জন-ধন যোজনা’-রও প্রশংসা করেন শুভেন্দু। অনুষ্ঠান শেষে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এটা ভাল। ভারতবর্ষে প্রত্যেক মানুষেরই অ্যাকাউন্ট থাকা উচিত।”
একই সঙ্গে শুভেন্দু মনে করেন, কেন্দ্রে আলাদা সমবায় দফতর থাকা উচিত। এখন কৃষি দফতরই সমবায়ের কাজকর্ম দেখভাল করে। শুভেন্দুর মতে, “কেন্দ্রীয় সরকার সঠিক ভাবে সমবায়কে গুরুত্ব দেয় না। কেন্দ্রে সমবায়ের আলাদা দফতরই হওয়া উচিত।” বেশ কিছু দাবিতে সমবায় ব্যাঙ্কের লোকজনকে নিয়ে আগামী দিনে দিল্লি অভিযান করতে চান বলে জানান সাংসদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy