Advertisement
E-Paper

ভিন্‌রাজ্যে কাজে যাওয়া বাংলার শ্রমিকদের ভরসা এখন পুলিশের বিশেষ ছাড়পত্র! সীমান্তবর্তী জেলায় বাড়ছে আবেদনের পাহাড়

ভিন্‌রাজ্যে কাজে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের।এই পরিস্থিতিতে ‘পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট’ (পিসিসি) দেখাতে পারলে তবেই মিলছে রেহাই। রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলা মুর্শিদাবাদে এই বিশেষ ছাড়পত্র চেয়ে শ’য়ে শ’য়ে আবেদন জমা পড়তে শুরু করেছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৫ ২১:০৭
Migrant workers apply for police clearance certificates in Murshidabad

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি। সহায়তা: এআই।

ভিন্‌রাজ্যে কাজে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের। এই অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। জাতীয় স্তরে এ নিয়ে সরব হয়েছে বঙ্গের শাসকদল তৃণমূল। অভিযোগ, বাংলাদেশি সন্দেহে আটক হওয়া বাংলাভাষী শ্রমিকেরা তাঁদের আধার-ভোটার কার্ডের মতো নথি দেখিয়েও ছাড় পাচ্ছেন না! এই পরিস্থিতিতে ‘পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট’ (পিসিসি) দেখাতে পারলে তবেই মিলছে রেহাই।

রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলা মুর্শিদাবাদে এই বিশেষ ছাড়পত্র চেয়ে শ’য়ে শ’য়ে আবেদন জমা পড়তে শুরু করেছে। জেলা পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতি দিন গড়ে ১০০-২০০টি আবেদন জমা পড়ছে পিসিসি পোর্টালে। এ ছাড়া চলতি বছরে প্রায় ১৩ হাজার আবেদন পড়েছে। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার (লালবাগ) রাসপ্রীত সিংহ বলেন, ‘‘ভিন্‌রাজ্য থেকে অন্তত ১০০ জন শ্রমিককে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সকলকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। বাকি যে সমস্ত আবেদন জমা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পাশাপাশি, রাজ্য পুলিশের তরফেও হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। নম্বরটি হল— ৯১৪৭৭২৭৬৬৬।

কী এই পিসিসি?

পিপিসি হল জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার দেওয়া একটি নথি। এই নথিতে বলা থাকে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে কোনও অপরাধমূলক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে কি না। কিংবা অতীতে কোনও অপরাধে সাজা হয়েছে কি না। সাধারণত বিদেশে কাজে যাওয়া, পাসপোর্ট তৈরি ও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে এই ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক। এখন বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যেও এই পিসিসির চাহিদা তুঙ্গে।

কী ভাবে পাওয়া যায় এই পিসিসি?

জেলা পুলিশের একটি নির্দিষ্ট পোর্টালে প্রয়োজনীয় নথি দিয়ে আবেদন করলেই মেলে এই ছাড়পত্র। প্রথমে একটি নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। ওটিপি ভেরিফিকেশনের পর শুরু হয় আবেদন প্রক্রিয়া। এর পর মূল আবেদন অংশে আধার ভেরিফিকেশন করাতে হয়। জন্মের তারিখ, বাবা মায়ের নাম, স্থায়ী ঠিকানা, ভারতে কত দিন ধরে বসবাস— এই সব তথ্য দিতে হয়। আবেদন গ্রহণ হলে নথির সাপেক্ষে দিতে হয় তথ্যপ্রমাণও। অনলাইনের আবেদন খতিয়ে দেখে ওই ব্যক্তির নির্দিষ্ট পূর্ব অপরাধের রেকর্ড খতিয়ে দেখা হয়। আরও বেশ কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে তবে মেলে পিসিসি।

মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার আইজুদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘‘ছত্তীসগঢ়ের পুলিশ আমাদের বাংলাদেশি বলে তুলে নিয়ে যায়। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড দেখিয়েও ছাড় পাওয়া যায়নি। অবশেষে আমাদের থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করা হয়। সার্টিফিকেট দেখে তবে আমাদের ছাড়া হয়েছিল।’’

মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির আর এক পরিযায়ী শ্রমিক আরশাদ খান বলেন, ‘‘বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি বলে পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। প্রথমেই চাইছে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট। তাই কাজে যাওয়ার আগে ওই সার্টিফিকেট জোগাড় করে তবেই যাব, যাতে কোনও রকম হেনস্থা হতে না হয়।’’

Migrant Workers Police Clearance Certificate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy