Advertisement
E-Paper

বাসন্তীতে গুলিযুদ্ধ, বুক ফুঁড়ল স্কুলফেরত পড়ুয়ার

অভিযোগ, বিকেলে তৃণমূল কর্মী কার্তিক মণ্ডলের বাড়িতে চড়াও হয় যুব তৃণমূলের কিছু লোক। তাঁকে কোপানো হয়। খবর ছড়াতেই তৃণমূলের লোকজন গ্রাম ঘিরে ফেলে। শুরু হয় বোমা-গুলির লড়াই।

সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৯
বলি: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গুলিতে মৃত বাসন্তীর স্কুলপড়ুয়া রিয়াজুল মোল্লা। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

বলি: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গুলিতে মৃত বাসন্তীর স্কুলপড়ুয়া রিয়াজুল মোল্লা। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ফের রক্তগঙ্গা বাসন্তীর গ্রামে।

মারা গিয়েছে স্কুলফেরত এক বালক-সহ ২ জন। গুলিবিদ্ধ কমব্যাট ফোর্সের এক কর্মী-সহ ৬ জন। তাদের মধ্যে অষ্টম শ্রেণির এক কিশোরও আছে। এক জনকে কোপানো হয়েছে। পুলিশকে লক্ষ করে নাগাড়ে বোমা-গুলি ছোড়া হয়। গুলি লেগে প্রাণ গিয়েছে হাসান লস্করের (৩২)। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে নানা অভিযোগ আছে। ক’দিন আগে শ’দেড়েক গুলি উদ্ধার হয়েছিল হাসানের কাছ থেকে। গুলিতে জখম হন উমেশ মাহাতো, বিশ্বজিৎ মণ্ডল, উত্তম বেরা, অরুণ সর্দার, আলমগির লস্কর। আলমগির পড়ে স্থানীয় স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে। জখমদের ক্যানিং হাসপাতাল ও কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।

গোটাটাই যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল, সে কথা চাপা দিতে পারছেন না নেতারাও। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বাসন্তীতে যুব তৃণমূল ও তৃণমূলের মধ্যে নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। খুন-জখমও হয়েছে। দলের জেলা নেতৃত্ব পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ক’দিন আগেই গোসাবায় এসে মুখ্যমন্ত্রী সব পক্ষকে এক সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে যান। তার পরেও হানাহানি বন্ধ হওয়ার লক্ষণ নেই, বৃহস্পতিবার বিকেলের ঘটনা সেটাই আবার প্রমাণ করল।

আরও পড়ুন: বিনিয়োগ বনাম বাস্তবায়ন

কী থেকে গোলমালের সূত্রপাত এ দিন? পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাসন্তীর চড়াবিদ্যা পঞ্চায়েতের হেতালখালিতে টুসু মেলা বসেছে। সেখানে মদ খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুপুরের দিকে অশান্তি বাধে।

অভিযোগ, বিকেলে তৃণমূল কর্মী কার্তিক মণ্ডলের বাড়িতে চড়াও হয় যুব তৃণমূলের কিছু লোক। তাঁকে কোপানো হয়। খবর ছড়াতেই তৃণমূলের লোকজন গ্রাম ঘিরে ফেলে। শুরু হয় বোমা-গুলির লড়াই।

স্থানীয় সূত্রের খবর, তখন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল রিয়াজুল মোল্লা (৯)। বুকে গুলি লেগে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। কাকা এসার আলি খান বলেন, ‘‘আমরা যুব তৃণমূল করি। কিছু দিন আগে আমাদের সংগঠনে যোগ দিয়েছিল কিছু লোক। তাতে তৃণমূলের স্থানীয় সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তাই ওরা হামলা চালিয়ে এলাকার দখল নিতে চাইছে।’’

প্রথমে বাসন্তীর ওসি কয়েক জন পুলিশ, কমব্যাট ফোর্সের কর্মীকে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু গুলি-বোমার চোটে গ্রামে ঢুকতেই পারেননি। গুলি লাগে বাণেশ্বর সিংহ নামে কমব্যাট ফোর্সের এক কনস্টেবলের কোমরের নীচে। ফিরে আসতে বাধ্য হয় পুলিশ। পরে বিশাল বাহিনী গ্রামে ঢোকে। শূন্যে গুলি ছোড়া হয়। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চলে। পরে এলাকায় যান ডিআইজি (পিআর) ভরতলাল মিনা-সহ পদস্থ পুলিশ কর্তারা।

বাসন্তী ব্লক যুব তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি আমান লস্কর এবং প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি মন্টু গাজির মধ্যে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করেই যত গোলমাল, মনে করেন দলীয় নেতৃত্বও। মুখ্যমন্ত্রী কিছু দিন আগে দুই ব্লক কমিটি ভেঙে ৯ জনের কমিটি গড়ে দায়িত্ব দিয়েছিলেন জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডলের উপরে। তিনি বলেন, ‘‘দলের উপর মহলে জানাব। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করুক।’’

Group Clash TMC Death Injured Basanti বাসন্তী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy