Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Citizenship Amendment Act

সিএএ: ভারসাম্যে মুকুট, বিশ্বজিৎ সমালোচকই

মুকুটমণি দাবি করেন, ‘‘২০০৩ সালে তৎকালীন এনডিএ সরকার একটি ‘কালা কানুন’ পাশ করে, যাতে মতুয়া ও উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব প্রশ্নের মুখে পড়ে। তা নিয়ে মতুয়ারা আন্দোলনও করেছেন।”

মুকুটমণি অধিকারী।

মুকুটমণি অধিকারী। —ফাইল ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৪ ০৭:৩৯
Share: Save:

সিএএ কি তবে ২০০৩ সালে তৈরি একটি আইনেরই প্রতিষেধক? অন্তত সে ভাবেই এ দিন সিএএ জারিহওয়াকে ব্যাখ্যা করছেন সদ্য বিজেপিত্যাগী মুকুটমণি অধিকারী। রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক বিজেপিতে পরিচিত ছিলেন মতুয়া বলয়ের ‘পোস্টার বয়’ হিসাবে। সবে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তার পরে রানাঘাট কেন্দ্র থেকে ঘাসফুলের প্রার্থীও হয়েছেন। এর এক দিনের মধ্যে কেন্দ্র নাগরিকত্ব আইন সিএএ জারি করায় এখন প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে মুকুটমণিকে। সেখানে সরাসরি জবাব এড়িয়ে তিনি এনডিএ আমলেরই একটি আইনকে ঢালহিসাবে দেখাচ্ছেন।

রবিবার জনগর্জন সভা থেকে দুই বিজেপি বিধায়ককে মতুয়া-নমঃশূদ্র প্রধান দুই লোকসভা আসন থেকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। তার মধ্যে বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বরাবরই তৃণমূলের লোক। গত বিধানসভা ভোটে গোসা করে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে জেতেন। তিনি কখনওই সিএএ-র পক্ষে তেমন সরব হননি।

কিন্তু মুকুটমণির ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অন্যরকম। তিনি ছিলেন দক্ষিণ নদিয়ার বিজেপিপন্থী মতুয়া মহাসঙ্ঘের সভাপতি, দলের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সমিতিতে রাজ্যের দুই সদস্যের অন্যতম। দু’দিন আগে পর্যন্তও তিনি নাগরিকত্ব আইন জারির পক্ষে সওয়াল করেন। এখন স্পষ্টতই তাঁকে ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করতে হচ্ছে।

সোমবার মুকুটমণি দাবি করেন, ‘‘২০০৩ সালে তৎকালীন এনডিএ সরকার একটি ‘কালা কানুন’ পাশ করে, যাতে মতুয়া ও উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব প্রশ্নের মুখে পড়ে। তা নিয়ে মতুয়ারা আন্দোলনও করেছেন।” এখনও তিনি সিএএ সমর্থন করছেন কি না, সেই প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি দাবি করেন, “এনডিএ সরকারই এক সময়ে মতুয়াদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিচ্ছিল। কাজেই সেই সমস্যার সমাধান তাদেরই করতে হবে।”

মুকুটমণির দলত্যাগের পরে বিজেপি ঘেঁষা মতুয়া সংগঠনের নদিয়া দক্ষিণ সংগঠনিক জেলা সভাপতি পদে আনা হয়েছে জয় মিত্রকে। তাঁরও দাবি, ‘‘২০০৩ সালের আইনে মতুয়াদের নাগরিকত্ব সঙ্কটে পড়েছিল। এত দিন সরকারি চাকরি বা পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের নথি দেখতে চাওয়া হত। সেই সমস্যা এ বার দূর হবে।’’ এমনকি, সিএএ থেকে কী বাড়তি সুবিধা মিলবে, এই প্রশ্নের জবাবে গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরও বলেন, “ধর্মের কারণে নিপীড়িত হয়ে যে মতুয়া উদ্বাস্তুরা এ দেশে এসেছিলেন, তাঁদের পাসপোর্ট করাতে গেলে বা জমি কিনতে গেলে নানা ভাবে হেনস্থা করা হত। এখনও সব মতুয়া উদ্বাস্তু নমঃশূদ্র মানুষের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড বা ভারতীয় পরিচয়পত্র নেই।” এই সংখ্যাটা কত, তার অবশ্য হিসাব মেলেনি।

তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা লোকসভার প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস পাল্টা বলেন, “মতুয়া ও উদ্বাস্তুরা ইতিমধ্যেই এ দেশের নাগরিক। তাই তাঁরা ভোট দেন। নতুন করে তাঁদের নাগরিকত্ব নেওয়ার কিছু নেই।”

উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায় আবার সিএএ চালুর বিরুদ্ধে। গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান বংশীবদন বর্মণ বলেন, ‘‘ভারতভুক্তি চুক্তি অনুযায়ী কোচবিহারের মানুষের মতামত না নিয়ে সিএএ চালু করতে পারে না কেন্দ্র। আমরা কোচবিহারের মানুষ সিএএ চাই না। তা কোনওমতেই চালু হতে দেব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE