Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
SSKM Incident

মদন-বিতর্কে ফিরিয়েছিল এসএসকেএম, মমতার উদ্যোগে মেডিক্যালে ভর্তি হলেও মৃত্যু শুভদীপের

চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণে শুভদীপের ডান দিকের বেশ কয়েকটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল একটি মেডিক্যাল বোর্ড।

image of madan mitra

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গিয়েছেন শুভদীপ পাল। — ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৩ ১৪:২০
Share: Save:

যাঁকে ভর্তি করানো নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র, মারা গেলেন সেই শুভদীপ পাল। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মারা গিয়েছেন তিনি।

চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণে শুভদীপের ডান দিকের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাঁর ডান চোখ, ডান ফুসফুস, ডান পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ডও তৈরি করা হয় ওই যুবকের জন্য। তাতেও শেষরক্ষা হয়নি।

গত শুক্রবার রাতের ঘটনা। শুভদীপ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। চিকিৎসার জন্য রাতেই তাঁকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএমে। অভিযোগ, এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ শুভদীপকে ভর্তি নিতে চাননি। তাঁকে যাঁরা ভর্তি করাতে নিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের অভিযোগ, নানা ভাবে চেষ্টা করেও শুভদীপকে ভর্তি করানো যায়নি। কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র সেই সময় শুভদীপকে ভর্তি করানোর জন্য অনুরোধ করেন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষকে। তাতেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে শুভদীপকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়।

মদন শুক্রবার রাতেই এসএসকেএমে দাঁড়িয়ে হাসপাতালে ‘দালালরাজ চলছে’ বলে অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘টাকা না দিলে এই হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসা হয় না।’’ মদনের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, আহত শুভদীপ নিজেও একটি সরকারি হাসপাতালে ল্যাব টেকনিশিয়ানের কাজ করেন। মদন সেই সময় জানিয়েছিলেন, পিজি হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টার সাধারণ মানুষের জন্য তৈরি। রোগীকে ভর্তি না নেওয়া গেলেও সেখানে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবা মেলা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ২৪ ঘণ্টা ট্রমা কেয়ার সেন্টার খোলা থাকার পরেও কেন রোগীকে দেখা হল না, সেই প্রশ্নও তোলেন মদন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফোন ধরেননি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও জানান, যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। অরূপ বিশ্বাসও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার মেসেজ করে বলেন, রোগীকে দেখা হয়েছে। এই মুহূর্তে তাঁকে ভর্তি করানোর ক্ষমতা নেই।’’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে যুবককে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

এর পরে বিধায়ক মদনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এসএসকেএম। গত শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন এসএসকেএমের ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হাসপাতাল চত্বরে কোনও রকম অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁদের পাশেই আছেন। উল্টে নাম না করে হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগও করেছেন তিনি। যদিও এর পর মদন দাবি করেন, এফআইআর করার মতো কোনও কাজ তিনি করেননি।

শুভদীপের মৃত্যুর খবর জানতে পেরে মদন জানিয়েছেন, তিনি মর্মাহত। দিনের সমস্ত কর্মসূচিও তিনি বাতিল করছেন বলেও জানিয়েছেন মদন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madan Mitra SSKM calcutta medical college
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE