Advertisement
০৪ মে ২০২৪
বিরোধী নিশানায় আডবাণী

মুখে কুলুপ কেন এথিক্স কমিটির!

নারদ-কাণ্ড খতিয়ে দেখতে গত বছর মার্চে সংসদের এথিক্স কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। এক বছর পার হয়ে গেলেও এক বারও বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়নি সংসদীয় এথিক্স কমিটির।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৭ ০৩:২০
Share: Save:

নারদ-কাণ্ড খতিয়ে দেখতে গত বছর মার্চে সংসদের এথিক্স কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। এক বছর পার হয়ে গেলেও এক বারও বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়নি সংসদীয় এথিক্স কমিটির।

নারদ নিউজ পোর্টালের ‘স্ট্রিং অপারেশন’-এর ভিডিওয় কয়েক জন সাংসদকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। ফলে বিরোধীরা সে সময় প্রবল চাপ তৈরি করেছিলেন যাতে এথিক্স কমিটি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে দেখে। তারই সূত্রে স্পিকারের ওই নির্দেশ। কিন্তু এক বছরেও তা নিয়ে এথিক্স কমিটির কেন হেলদোল নেই— তা নিয়ে আজ লোকসভায় প্রশ্ন তুললেন সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম।

সেলিম নিজেও ওই কমিটির সদস্য। লোকসভায় বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘নারদ-কাণ্ড নিয়ে কেন এক বারও এথিক্স কমিটির বৈঠক ডাকা হল না, তার কারণ জানা নেই আমাদের। অভিযুক্ত সাংসদদের নোটিস দেওয়া হয়েছিল গত ডিসেম্বরে। নারদ ভিডিও-র সিডি-ও চেয়ে পাঠানো হয়েছিল কমিটির সচিবালয়ের পক্ষ থেকে। তার পরে কী হল! আমরা কিছুই জানি না।’’

এই কমিটির চেয়ারম্যান লালকৃষ্ণ আডবাণী। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি আজ বিরোধীদের ও কমিটি-সদস্যদের ‘বিস্ময়ের’ নিশানা হয়ে ওঠেন। সিপিএম-সহ বিরোধীদের একাংশের প্রশ্ন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত সখ্যের কারণেই কি তাঁকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন আডবাণী? না হলে, বছর ঘুরে যাওয়া সত্ত্বেও কেন এক বারও বৈঠক ডাকলেন না তিনি? সচিবালয়কে দিয়ে সিডি আনিয়েও কেন তা যাচাই করে দেখা হল না?

আরও পড়ুন: স্টিং অপারেশন’-এ অভিযুক্তদের প্রতিক্রিয়া, সে দিন আর এ দিন

লোকসভায় সেলিম মন্তব্য করেন, ‘‘এর ফলে সংসদের গরিমা নষ্ট হচ্ছে। মোদীজি কালো টাকার জন্য জনতাকে লাইনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এখানে উপস্থিত তৃণমূল সাংসদদের পকেট খুঁজলেই সেই কালো টাকা পাওয়া যাবে!’’ সেলিম বলার পরই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় উঠে দাঁড়িয়ে পাল্টা চিৎকার করতে শুরু করেন। বিতণ্ডা চলে বেশ কিছু ক্ষণ।

রাজনীতির লোকজন অবশ্য এ-ও বলছেন যে, এথিক্স কমিটির নড়ে না বসার জন্য শুধু আডবাণীকে দায়ী করাটাও যুক্তিসঙ্গত নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও সম্ভবত চান না সংসদীয় কমিটি এ নিয়ে খুব বেশি সক্রিয় হোক। তাতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ জোর পাবে। নারদ-তদন্ত হাইকোর্টের নজরদারিতে হওয়ায় সেই দায় পোহাতে হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, এই

একটি বছরে মমতার দলের সঙ্গে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সম্পর্ক ওঠানামার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। বামেদের দাবি, দু’পক্ষের সুসম্পর্ক একটা সময় ‘দিদিভাই-মোদীভাই’ পর্যায়েও গিয়েছে। আবার সংসদের বাইরে-ভিতরে জ্বালাময়ী ঢংয়ে মোদীকে আক্রমণও করেছেন মমতা ও তাঁর দলের নেতারা। ফলে নারদা কাণ্ড নিয়ে স্থির কোনও কৌশল তৈরি করে উঠতে পারেননি শাসক শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

L. K. Advani Lok Sabha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE